Cold Places in Summers: জুন মাসের হাঁসফাসানি গরম থেকে কিছুটা স্বস্তি পেতে চাইলে ঘুরে যান এই শীতল জায়গাগুলি
হাইলাইটস:
• ৪০° সেলসিয়াস ছুঁই ছুঁই তাপমাত্রায় নাজেহাল কলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী জেলার মানুষ
• এই গরমেও দেশের কয়েকটি জায়গার তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রির কম
• এই অসহ্যনীয় গরম থেকে বাঁচতে দেশের এই শীতল জায়গাগুলো থেকে ঘুরে আসুন
Cold Places in Summers: জুনের উত্তপ্ত আবহাওয়া সহ্য হচ্ছে না কারোরই। গোদের ওপর বিষফোঁড়া হয়ে লোডশেডিং-এর ঝামেলা তো চলছেই। তাপমাত্রা প্রায় ৪০ ডিগ্রিতে ঠেকেছে কলকাতা শহরেই। আরও অবস্থা খারাপ বীরভূম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, মুর্শিদাবাদের মতো জেলাগুলির। দেশের অন্যান্য রাজ্যগুলিরও কম বেশী একই দশা। মাঝে মাঝে সামান্য বৃষ্টিতে কিছু লাভ তো হচ্ছেই না বরং আরও তাপমাত্রার পারদ চড়ছে দিনের পর দিন। এই রকম ঘাম প্যাচপ্যাছে বিচ্ছিরি পরিস্থিতিতে যদি জানতে পারেন, এই দেশেরই অন্য প্রান্তের তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে উঠছে না তাহলে কেমন হয়? তবে জেনে রাখুন এই দেখে সত্যিই আমাদের দেশে এমন কিছু জায়গা রয়েছে যেখানকার তাপমাত্রা এই পরিস্থিতিতেও ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর উঠছেনা।
• গ্যাংটক, সিকিম:
গ্যাংটক হল সিকিমের রাজধানী। ভ্রমণ প্রেমীদের কাছে খুব প্রিয় এই গ্যাংটক। গ্যাংটক থেকে উত্তরের দিকে যত জেতে থাকবেন ঠান্ডা ততই বাড়বে। জুন মাসের ভরা গরমেও এখানে ঠান্ডার ভালোই আমেজ থাকে। গ্যাংটক থেকে মাত্র ৪০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে সোংমো বা ছাঙ্গু লেকটি একবার চোখের দেখা না দেখলে বড় মিস করবেন। সিকিমের আলাদা আলাদা দিকের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আলাদা আলাদা রকমের। নাথু লা পাস, রুমটেক মনাস্ট্রি, ইন্দো-চায়না বর্ডার, বাবা মন্দির ঘুরে আসুন। জুন মাসের দাবোদাহ থেকে বাঁচতে ইচ্ছা হলে সিকিম ঘুরে আসুন। লাচুং কিংবা ইয়ুমথাং ঘুরে আসতে পারেন এখান থেকে। বিয়ের পর মধুচন্দ্রিমার জন্য গ্যাংটক একটি আদৰ্শ জায়গা।
• কুনুর, তামিলনাড়ু:
উটি থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত । এই পাহাড়ী শহরটি নীলগীরি পর্বতের কোলে অবস্থিত। হিমালয় না থাকলেও নীলগিরি আছে তামিলনাড়ুর এই শৈল শহরে। কুনুরে দিনের তাপমাত্রা বৃষ্টি শুরু হলে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে যায়। এই শহরের অন্যতম আকর্ষনীয় স্থানগুলি হল সিম’স পার্ক, চা বাগান, পাস্তুর ইনস্টিটিউট, ডলফিন নোজ, দ্রুগ ফোর্ট ইত্যাদি । দক্ষিণ ভারতের স্বর্গ হিসেবে উটিকে পরিচিতি দেওয়া হলেও কুনুরও কোনও অংশে কম নয় স্বর্গসুখ থেকে। কুনুর শহরের উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ছয় হাজার ফিট উপরে। কুনুরে সারাবছরই মনোরম আবহাওয়া থাকে।
• আউলি, উত্তরাখণ্ড:
ঋষিকেশ থেকে প্রায় ২৫০ কিমি দূরত্বে অবস্থিত আউলি। ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় স্কিইং প্লেস এটি। এখানে শীতের আমেজ সদা বিরাজমান এই ভরা গরমেও। এখানের জঙ্গলগুলি অনেকটা শঙ্কু আকৃতির যা ওক গাছে ঘেরা। আসলে পাহাড়ের গা দিয়ে গড়ে উঠেছে এই জঙ্গলগুলি। এই জায়গায় তাপমাত্র ৫ডিগ্রি সেন্টিগ্রেট থেকে ২০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেটের মধ্যে থাকে জুন মাসেও। মাউন্ট নন্দাদেবী, মানা পর্বত, এবং নর পর্বতের দৃশ্য দেখা যায় আউলি থেকে। আউলিতে ছত্রকুণ্ড নামের একটি মিষ্টি জলের গভীর হ্রদ আছে। এখনের কুমারী পাস নামক জায়গাটি ট্রেকিং করার জন্য আদর্শ জায়গা। শীতকালে আউলির চারদিকে শুধু বরফ আর বরফ।
• হেমিস, লাদাখ:
হেমিস জায়গাটি লাদাখে অবস্থিত। জাতীয় উদ্যান এবং সেখানকার স্নো লেপার্ডের জন্য বিশ্ববিখ্যাত এই হেমিস। লেহ-লাদাখের তাপমাত্রা খুব কম সময়ই ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করে। পরিকাঠামোর অভাব এবং যাতায়াতের অসুবিধার কারণে এখানে পর্যটকদের একটু কষ্ট করেই যেতে হয়। তবে অনেক কষ্ট স্বীকার করে হলেও সেখানে পৌঁছোনোর চেষ্টা করেন প্রকৃত অ্যাডভেঞ্চার প্রেমীরা। স্নো লেপার্ডের পাশাপাশি এই অরণ্যে পাবেন লাল খেঁকশেয়াল, ইউরেশিয়ান বাদামি ভাল্লুক এবং তিব্বতি নেকড়ে। সাথে থাকবে সেখানকার অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং মূল বিষয় হল একেবারে নিরিবিলি এই জায়গাটি। গ্রীষ্মকালে এখানে মার্খা ট্রেক এবং হেমিস গুম্ফার হেমিস উৎসব আয়োজন করা হয়। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা এখানে এসে ভিড় জমান এই বিখ্যাত ফেস্টিভ্যাল দেখার জন্য।
• পহেলগাম, জম্মু ও কাশ্মীর:
হানিমুন এবং তুষারক্রীড়ার অন্যতম জনপ্রিয় স্থান হল জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাম। সাধারণত জম্মু-কাশ্মীর মানেই আমরা গুলমার্গ কিংবা সোনমার্গ বুঝি। কিন্তু এগুলিছাড়াও পহেলগাম অ্যাডভেঞ্চারপ্ৰিয় দম্পতিদের দারুণ লাগবে। স্কিইং বা স্নোবোর্ডিং-এর সুবিধা পেয়ে যাবেন এখানে। পহেলগাম কাশ্মীরের উত্তর অংশে অবস্থিত, যার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অপূর্ব। সংস্কৃতি এবং রোমান্টিক স্থানের জন্য বিখ্যাত ছোট্টো এই পাহাড়ি শহরটি। দিনে যেতে পারেন আরু বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে ট্রেকিং করতে। পাশাপাশি রাতে উপভোগ করতে পারেন কনকনে ঠান্ডা। এছাড়াও তৃণভূমিতে হর্স রাইডিং কিংবা লিডার নদীতে রিভার রাফটিং করতে করতে ভুলেই যাবেন এটা কোন মাস।
এইরকম ভ্রমণ সংক্রান্ত প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।