Parenting Tips: সারাদিন চার-দেয়ালের মধ্যে মোবাইল-কম্পিউটার থেকে কী চোখ সরাতে পারছে না আপনার সন্তান? সহজ কৌশলে তাকে আউটডোর গেমসের প্রতি আগ্রহী করে তুলুন

Parenting Tips: ঘরকুঁনো হয়ে পড়া সন্তানকে মাঠমুখী হওয়ার জন্য আগ্রহী করে তুলুন

হাইলাইটস: 

• নতুন প্রজন্মের বাচ্চাদের মোবাইল কিংবা কম্পিউটার গেমসের প্রতি আসক্তি বেশী

• শরীরচর্চার অভাবে শিশুদের শরীরে নানান রকম সমস্যা দেখা দিচ্ছে

• সন্তানের মানসিক ও শারীরিক বিকাশের জন্য তাকে আউটডোর গেমসের প্রতি আগ্রহী করুন

Parenting Tips: সময়ের সাথে সাথে বদলে যাচ্ছে পুরানো শৈশবের দিনগুলি। আগেকার মতো বাচ্চারা এখন আর বিকেল হলেই মাঠের দিকে ছোটে না। তার বদলে বাড়িতে বসে মোবাইলে কিংবা কম্পিউটারে গেম খেলেই তাদের সময় কাটে। মাঠে গিয়ে ব্যাট হাতে ছয় মারার বদলে কম্পিউটারের পর্দায় কোহলির অবয়বকে দিয়ে ছয় হাঁকানো তাদের কাছে বেশি স্বচ্ছন্দের। প্রসঙ্গত, বাচ্চাদের মধ্যে আউটডোর গেমসের ঝোঁক কমে যাওয়ার ফলে আউটডোর গেমসের মাধ্যমে ছোটদের যে শারীরিক চৰ্চা হতো, সেটাও আর হয় না। ফলে পিছু নেয় চাইল্ডহুড ওবেসিটির মতো নানান সমস্যা।

কিন্তু এক্ষেত্রে সব সময় ছোটদের দোষ দিলে হবে না। অনেক বাচ্চার অধিভাবকরা মনে করেন, মাঠে গিয়ে বন্ধুদের সাথে মেলামেশা করলে তার সন্তান হয়তো নষ্ট হয়ে যাবে। এবার অনেকে মনে করেন, মাঠে ঘাটে খেললেই তার সন্তানের চোট লাগার আশঙ্কা তৈরি হয়। ফলে বাচ্চাকে মাঠে পাঠিয়ে অযথা ঝঞ্ঝাট না বাড়ানোই ভালো। তবে জেনে রাখা দরকার, অভিভাবকদের এমন ধারণার কারণেই তার সন্তানের মানসিক ও শারীরিক বিকাশ অসম্পূর্ণ থেকে যাচ্ছে।

সুতারাং আজ থেকেই আপনার সন্তানকে উৎসাহিত করুন বাড়ি থেকে বেরিয়ে মাঠে গিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলা করার জন্য । কিছু টিপস মেনে চললেই আপনার সন্তানকে সহজেই মাঠমুখী করতে পারবেন আপনি। আলোচনা করা যাক সেই টিপসগুলি সম্পর্কে –

১. সন্তানের হাত থেকে ‘মোবাইল’ সরান:

সন্তানের হাতে ​নিয়মিত মোবাইল ফোন দিয়েই আপনি তার অভ্যাস খারাপ করে দিয়েছেন। মনে রাখবেন, এটিই যত নষ্টের গোড়া। মোবাইল ফোনের সহজলভ্য বিনোদন হাতে পাওয়ার পর আর শরীর চালিয়ে মাঠে গিয়ে খেলতে ইচ্ছা করে না আপনার সন্তানের। তাই যে কোনো উপায়েই তার হাত থেকে মোবাইল দূরে রাখতে হবে। তবে তার আগে নিজেরাও বাড়িতে মোবাইলের ব্যবহার কমান। আপনাদের হাতে মোবাইলের ব্যবহার কম দেখলে আপনার সন্তানও তা অনুকরণ করে ছেড়ে দিতে পারে মোবাইল ফোনের ব্যবহার।

২. ক্রিকেট ব্যাট অথবা ফুটবল উপহার দিন:

বাবা-মা কিংবা বাড়ির বড়োরা কেউ ছোটবেলায় একটা ক্রিকেট ব্যাট বা ফুটবল কিনে দিলে মন পুরো খুশিতে ভরে যেত। সেই নতুন খেলার ব্যাট কিংবা বল বন্ধুদের গিয়ে দেখানোর অপেক্ষায় থাকতো সকলে। সেই নতুন ব্যাট নিয়ে গিয়ে বন্ধুদের মাঝে হিরো সেজে কিছুটা বেশি সময় ব্যাট করাই ছিল ৯০ দশকের শৈশব। সময় বদলে গেলেও আপনি চাইলেই এই চিত্রটা কিন্তু আবারও তৈরি করতে পারেন। তাই ক্রিকেট ব্যাট, ফুটবল, ব্যাডমিন্টন ইত্যাদি খেলার সামগ্রী কিনে আনুন আপনার সন্তানের জন্য। এতেই দেখবেন সন্তানের মাঠে গিয়ে খেলাধূলা করার প্রতি আগ্রহ বাড়বে।

৩. আপনার সন্তানকে মাঠে নিয়ে যান​:

ছোট থেকে বাড়ির বাইরে না যাওয়ার কারণেই হঠাৎ করে একদল ছেলেপুলের সাথে একা একা মিশে যেতে পারবে না আপনার সন্তান। এই দায়িত্ব অভিভাবক হিসেবে আপনাকেই নিতে হবে। এক্ষেত্রে জোর করে হলেও নিয়মিত সন্তানকে মাঠে নিয়ে যেতে হবে আপনাকে। এই সুযোগে মাঠে নতুন নতুন বন্ধু হবে তার। ফলে মাঠে যাওয়ার প্রতি অনীহা দূর হয়ে যাবে আপনার বাচ্চার। এরপর দেখবেন আপনার সন্তান নিজে থেকেই মাঠে চলে যাচ্ছে আপনি না বললেও।

৪. ভর্তি করতে পারেন স্পোর্টস একাডেমিতে: 

স্পোর্টস একাডেমি এখন পাড়ায় পাড়ায় গড়ে উঠেছে। এমনই কোনও একটা একাডেমিতে বাচ্চাকে ভর্তি করে দিন। এতে তার শরীর চর্চাও হবে, পাশাপাশি নিজের বয়সের ছেলে-মেয়েদের সাথে সে নিজেকে সহজে মানিয়েও নিতে পারবে। আর বড় কিছু একটা করে দেখানোর খিদে তার মধ্যেও তৈরি হবে। ধীরে ধীরে সে নিজেকে আরও ভালো ভাবে গড়ে তোলার চেষ্টা করবে। সাথে সাথে শিখবে প্রতিযোগিতার নিয়ম। তাকে গোটা জীবন এগিয়ে নিয়ে যাবে এই শিক্ষা।

৫. খেলার জন্য সময় বেঁধে দিন​:

জীবনে সাফল্য পেতে চাইলে নিয়মের বাঁধনে জীবনকে বেঁধে রাখতে হবে। তাই আপনার সন্তানের পড়ার সময়ের মতই খেলার সময়ও নির্দিষ্ট করে দিন। এতেই অপনার সন্তান একটা নিয়মের মধ্যে পড়ে গিয়েছে। এই ভাবেই ধীরে ধীরে সে ঘরের চার দেয়ালের গন্ডির আসক্তি কাটিতে মাঠে গিয়ে আউটডোর গেমসের প্রতি আকৃষ্ট হবে।

এইরকম লাইফস্টাইল সম্পর্কিত প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.