বাজেট যদি কম থাকে তাহলে নির্দ্বিধায় ঘুরে আসুন পুরুলিয়া দিয়ে

অযোধ্যা পাহাড় ঘুরে আপনি এক অন্য অভিজ্ঞতা রপ্ত করবেন

পুরুলিয়া: এখনও হয়তো আমরা অনেকেই জানি না পুরুলিয়ার সৌন্দর্য সম্পর্কে। পাহাড় ও সবুজ অরণ্যে ঘেরা একটি জেলা হল পুরুলিয়া। পুরুলিয়ার এই সৌন্দর্যকে ঘিরে পর্যটন শিল্প দিন দিন বাড়ছে। এই শীতে ২-৩ দিনের জন্য অরণ্যের মাঝে প্রকৃতিকে উপভোগ করতে যদি চান তবে একবার হলেও ঘুরে আসুন পুরুলিয়া দিয়ে। কলকাতার ধুলো-ধোঁয়া এড়িয়ে যদি মায়াবী এক পরিবেশের সাথে কয়েকটা দিন কাটাতে চান তবে ব্যাগ প্যাক করুন আর ট্রেন বা বাস ধরে চলে আসুন পাহাড় ও সবুজ অরণ্যবেষ্টিত জেলা পুরুলিয়াতে। পুরুলিয়া আপনাকে একটুও হতাশ হতে দেবে না।

পুরুলিয়ার মোট তিনটি ভাগ রয়েছে। অযোধ্যা পাহাড় সংলগ্ন এলাকা, বান্দোয়ান এলাকা ও গড় এলাকা। তিনটি রেঞ্জই যদি ঘুরতে চান, তাহলে সময় বেশি লাগবে। ২-৩ দিনের পরিকল্পনা হলে অযোধ্যা পাহাড় অনায়াসেই ঘুরে ফেলতে পারেন।

কী কী দেখবেন?

অযোধ্যা পাহাড়ে গেলে সাইড সিনগুলি হল আপার ড্যাম, লোয়ার ড্যাম, খয়রাবেরা ড্যাম, লহরিয়া ড্যাম, চড়িদা মুখোশ গ্রাম, লহরিয়া শিব মন্দির, ময়ূর পাহাড়, পাখি পাহাড়, অপূর্ব মার্বেল লেক, মুরুগুমা ড্যাম, মুরুগুমা লেক, সুইসাইড পয়েন্ট, বামনী ফলস, তুর্গা ফলস প্রভৃতি।

এইগুলি পুরোটা শেষ করতে না পারলেও মার্বেল লেক, চড়িদা মুখোশ গ্রাম, আপার ড্যাম, লোয়ার ড্যাম, খয়রাবেরা ড্যাম, বামনী ফলস এইগুলি একেবারেই মিস করবেন না।

কোথায় থাকবেন?

নির্জন নিরালায় সময় কাটাতে হলে মুরুগুমা আদর্শ জায়গা। এখানে পলাশ বিতান, বন পলাশীর মতো অনেক ইকো ভিলা পাবেন। ঘরে সমস্ত আধুনিক প্রযুক্তিগত সুযোগ সুবিধা মিলবে। টিভি, গিজার, এয়ার কুলার সবই পাবেন। তাই পরিবার, বন্ধুবান্ধব নিয়ে একান্তে সময় কাটাতে চাইলে এগুলি বেছে নিতেই পারেন।। এছাড়াও, কুশল পল্লী, অযোধ্যা হিল টপ টুরিস্ট লজের মতো অনেক হোটেল এখানে রয়েছে। আর যদি পাহাড়ে নীচে থাকতে চান তবে আদর্শ জায়গা হল মাথাবুরু পাহাড় সংলগ্ন এলাকা। এখানে রয়েছে মাথা রিসোর্ট এবং ছোট ছোট অনেক হোমস্টে। হোমস্টেগুলি থাকা-খাওয়ার মাথা পিছু টাকা একেবারেই ধরে নেয়। গ্রাম্য পরিবেশের সাথে মিলিত হয়ে হোমস্টেগুলি বাছতে পারেন। এখান থেকে চড়িদা মুখোশ গ্রাম অনেক কাছে।

পুরুলিয়া ঘোরার সেরা সময়:

পুরুলিয়া ঘোরার আদর্শ সময় হল শীতকাল। বর্ষায় গেলে পাহাড়ের অন্য অনুভূতি পাবেন ঠিকই, কিন্তু বৃষ্টিতে ঘুরতে পারবেন না। আবার গ্রীষ্মকালে অতিরিক্ত গরমে যাওয়া একদমই ঠিক হবে না। লাল মাটির এই জেলায় গ্রীষ্মকালে টেকা দায় হয়ে পরে।

কীভাবে যাবেন?

ট্রেনে পুরুলিয়া ভ্রমণ:

হাওড়া থেকে চক্রধরপুর এক্সপ্রেস ধরলে রাতে ট্রেনে উঠে ভোর বেলা নামতে পারবেন পুরুলিয়া। একই ট্রেনে ফিরতেও পারবেন হাওড়াতে। ফেরার ট্রেন পুরুলিয়া জংশন থেকে ছাড়ে রাতে। হাওড়ায় আসে ভোর চারটে নাগাদ। আরেকটি ট্রেন আছে, সেটি হল রূপসী বাংলা সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসে ফিরতে হলে পাবেন বিকেলের ট্রেন। এছাড়াও আরও অনেক প্যাসেঞ্জের ট্রেন রয়েছে। ট্রেন সংক্রান্ত কিছু জানার জন্য আপনাকে একটু IRCTC অ্যাপটি ডাউনলোড করুন ফোনে।

বাসে পুরুলিয়া ভ্রমণ:

ধর্মতলা থেকে প্রতিদিন বেশ কিছু বাস পুরুলিয়া যায়। সেখান থেকেও বাস নিতে পারেন। আপনি প্রতিদিনই পুরুলিয়া যাওয়ার বাস পাবেন। বাসে গেলেও কোনও সমস্যা নেই।

গাড়িতে পুরুলিয়া ভ্রমণ:

কলকাতা থেকে গাড়িতে প্রায় ৫ থেকে ৬ ঘন্টা লাগে পুরুলিয়া পৌঁছতে। কলকাতা থেকে গেলে সড়ক পথে দিল্লি রোড ধরে দুর্গাপুর বা আসানসোল হয়ে পৌঁছনো যায় পুরুলিয়া শহরে। আবার অন্যদিকে বাঁকুড়ার জয়পুর ফরেস্ট দিয়েও যাওয়া যায় পুরুলিয়া। নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে বলছি, বাঁকুড়ার জয়পুর ফরেস্ট গেলে এক অন্যরকম পরিবেশের সাক্ষী থাকবো প্রত্যেকে।

Sanjana Chakraborty

My name is Sanjana Chakraborty. I'm a content writer. Writing is my passion. I studied literature, so I love writing.

Leave a Reply

Your email address will not be published.