এবার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল ভূস্বর্গ! রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ৩.৬

গতকাল মেঘালয়ের পর এবার কম্পন অনুভূত হয়েছে জম্মু-কাশ্মীরে

আজ (১৭ই ফেব্রুয়ারি) ভোর ৫:০১ মিনিটে ভূমিকম্পের কম্পন অনুভূত হয় জম্মু ও কাশ্মীরের কাটরা থেকে ৯৭ কিলোমিটার পূর্বে। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৩.৬। জম্মু-কাশ্মীরে ভূমিকম্পের খবর এদিন টুইট করে জানায় ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজি। কেন্দ্রীয় সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে ছিল কম্পনের উৎসস্থল। যদিও এই ভূমিকম্পের কারণে কোনও প্রাণ বা সম্পত্তির ক্ষতি হয়নি। কিন্তু এই কম্পনের জেরে উপত্যকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে।

গত সোমবার ভূমিকম্প হয় উত্তর-পূর্বের পাহাড়ি রাজ্য সিকিমে। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৪.৩। সিকিমের উইকসম এলাকা ছিল ভূমিকম্পের উৎসস্থল। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, ওই দিন প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ভূ-কম্পনের প্রভাব পড়েছিল। তবে ভূমিকম্পের জেরে কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। সিকিমের আগে অবশ্য উত্তর-পূর্বের আরেক রাজ্য অসমেও ভূমিকম্প অনুভূত হয়। গত শনিবার নগাঁও-তে ভূমিকম্প হয়। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৪। গতকাল অর্থাৎ ১৬ই ফেব্রুয়ারি উত্তর-পূর্বের আরেক রাজ্য মেঘালয়ে ৩.৯ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজির রিপোর্ট অনুযায়ী, ভূমিকম্পটি সকাল ৯.২৬ মিনিটে ঘটে এবং এর কেন্দ্রস্থল ছিল পূর্ব খাসি পাহাড়ে ৪৬ কিলোমিটার গভীরে। ভূমিকম্পে তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের বা সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতির কোনো খবর পাওয়া যায়নি। মেঘালয়ের পরে এবার জম্মু-কাশ্মীর। কাকভোরে আবারও কেঁপে উঠল দেশের আরও একটি পাহাড়ি রাজ্য। পাহাড়ি রাজ্যগুলিতে বার বার কম্পন অনুভূতি হওয়া যথেষ্ট চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলটি একটি উচ্চ সিসমিক জোনে পড়ে, যেখানে প্রায়ই ভূমিকম্পের কম্পন অনুভূত হয়।

অন্যদিকে চলতি মাসেই জম্মু-কাশ্মীরের ডোডা জেলার একটি গ্রামে বহু বাড়িতে আচমকাই ফাটল দেখা দেয়। বিশেষজ্ঞরা অনুমান করছেন, ওই এলাকা মাটির তলায় বসে যেতে পারে। খবর পাওয়ার পর, ওই গ্রামে বিশেষজ্ঞদের দল পাঠায় কেন্দ্র। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার কাটরায় অনুভূত হল ভূ-কম্পন।

গত দু’সপ্তাহে পরপর ভূমিকম্প হয়েছে বিশ্বের একাধিক দেশে। চলতি মাসের ৬ই ফেব্রুয়ারি মারাত্মক ভূমিকম্প হয় তুর্কি ও সিরিয়ায়। ভূমিকম্পের জেরে চোখের নিমেষে সেখানে ভেঙে পড়ে একের পর এক বাড়ি। ধ্বংসস্তূপের তলায় চাপা পড়ে এখনও পর্যন্ত এই দুই দেশে ৪১ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। কার্যত মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে তুর্কি এবং সিরিয়া। এই দেশগুলির ভূমিকম্পের রেশ কাটতে না কাটতেই কম্পন অনুভূত হয় নিউজিল্যান্ডে। ঘূর্ণিঝড় হ্যারিকেনের মধ্যেই কেঁপে ওঠে বিস্তীর্ণ এলাকা। ঝড় ও প্রবল বৃষ্টির জেরে দুর্ভোগের মুখে পড়েন সেখানকার বাসিন্দারা। বেশ কিছু এলাকা সম্পূর্ণ জলের তলায় চলে যায়। ক্ষতি হয় কিছু বাড়ির। এর মধ্যেই ভূমিকম্প হওয়ায় মারাত্মক আতঙ্ক ছড়িয়েছিল। তবে সেখানেও হতাহতের কোনও খবর মেলেনি। আবার নিউজিল্যান্ডের পর গত বৃহস্পতিবার ভূমিকম্প হয় ফিলিপাইন। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৬.১। মধ্যরাতে হওয়া ওই ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কে বহু মানুষ বাড়ির বাইরে বেরিয়ে এসেছিলেন। পরে এলাকা পরিদর্শনে পাঠানো হয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, সেখানে কোনও বাড়ি ভেঙে পড়েনি। তীব্র ভূমিকম্প অনুভূত হলেও কোনও সুনামি সতর্কতা জারি করেনি প্রশাসন।

অন্যদিকে তুরস্ক, সিরিয়া, ফিলিপাইন, নেপালের ভূমিকম্পের মাত্রার পরিপ্রেক্ষিতে দিল্লি ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। দিল্লি হাইকোর্ট জাতীয় রাজধানীতে ভূমিকম্পের প্রস্তুতি সংক্রান্ত একটি আবেদনের শুনানির সময় বৃহস্পতিবার বলেছে যে, প্রত্যেকে তাদের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত। হাইকোর্ট আরও বলেছে যে, এই পিটিশনে বিকৃত কিছু নেই এবং এমনকি কর্মকর্তারাও পরিস্থিতি সম্পর্কে সমানভাবে সচেতন।

Sanjana Chakraborty

My name is Sanjana Chakraborty. I'm a content writer. Writing is my passion. I studied literature, so I love writing.

Leave a Reply

Your email address will not be published.