WTC Final India vs Australia: অজি পেসারদের সামনে ধরাশায়ী ভারতীয় টপ-অর্ডার! অশ্বিনকে না খেলানোর সিদ্ধান্ত কাঁটার মত বিঁধছে রোহিতদের

হাইলাইটস:

• অজি পেসে নাস্তানাবুদ ভারতীয় ব্যাটাররা

• দ্বিতীয় দিনের শেষে ভারতের স্কোর ৫ উইকেটের বিনিময়ে ১৫১ রান

• অশ্বিনকে না খেলানোর সিদ্ধান্ত কাঁটার মত ফুটছে রোহিতদের

WTC Final India vs Australia: ওভালে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দ্বিতীয় দিনের শেষে চালকের আসনে অজিরা। প্রথম ইনিংসে অজিদের দেওয়া ৪৬৯ রানের বিশাল লক্ষ তাড়া করতে নেমে দ্বিতীয় দিনের শেষে ভারতের স্কোর ৫ উইকেটের বিনিময়ে ১৫১ রান।

দ্বিতীয় দিনের শুরু থেকেই বোঝা যাচ্ছিল কী হতে চলেছে। ওভালে ধরাশায়ী ভারতীয় ব্যাটিং-এর টপ অর্ডার। চালকের আসনে অস্ট্রেলিয়া বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের প্রথম দিনের পর দ্বিতীয় দিনও। প্রথমে ব্যাট হাতে দাপট দেখালেন অজি ব্যাটাররা। পরে পেসাররা বল হাতে ভারতীয় টপ অর্ডারের ব্যাটারদের সাজঘরে একে একে সাজঘরের পথ দেখালেন। দিনেই খেলার ফল অনেকটাই স্পষ্ট দ্বিতীয় দিনেই। অসম্ভব কিছু না ঘটলে এই ম্যাচে ভারতের কামব্যাক করা কঠিন।

দ্বিতীয় দিনের শুরুতে ৯৫ রানে ব্যাট শুরু করেছিলেন স্মিথ। দ্বিতীয় দিন ব্যাট করতে নেমেই প্রথম দুই বলে দু’টি চার মেরে টেস্টে ৩১তম শতরান করেন স্টিভ স্মিথ। ভারতীয় বোলারদের লাইন-লেংথ দ্বিতীয় দিনে তুলনামূলক ভাবে ভালো দেখা যায়। তার ফলে মাঝেমাধ্যে শতরান করে খেলা দুই ব্যাটারকে মাঝেমধ্যে সমস্যাতেও ফেলছিলেন শামি, সিরাজরা। কিন্তু তার মাঝেই ট্রাভিস হেড ১৫০ রান পূর্ণ করে ফেলেন। তবে মহম্মদ শামি, মহম্মদ সিরাজরা ক্রমাগত বাউন্সার হেডকে একটু হলেও সমস্যা দিচ্ছিল। শার্দূল ঠাকুরের বল ফাইন লেগে মারতে গিয়ে উইকেটরক্ষক কে.এস.ভরতের হাতে ক্যাচ দিয়ে ১৬৩ রান করে সাজঘরে ফেরেন হেড।

এরপর ক্যামেরন গ্রিনও বেশিক্ষন পিচে টেকেননি। গ্রীনের ফিরে যাওয়ার পর অ্যালেক্স ক্যারের সঙ্গে পার্টনারশীপ হয় স্মিথের। ১২১ রান করে ব্যাট করার সময় শার্দূলের বল স্মিথের ব্যাটে লেগে উইকেটে লাগে। একমাত্র ক্যারেই অস্ট্রেলিয়ার নীচের সারির ব্যাটারদের মধ্যে রান পান। রবীন্দ্র জাডেজা তাঁকে ৪৮ রানের মাথায় আউট করেন । ভাল বল করেন সিরাজ।৪ উইকেট নিয়ে সব থেকে ভালো পারফরমেন্স মহম্মদ সিরাজের।তিনিই অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস শেষ করেন।

লড়াইয়ে চালিয়ে যেতে হলে প্রথম ইনিংসের শুরুটা ভালো ব্যাটিং পারফরমেন্স করার প্রয়োজন ছিল ভারতের। কিন্তু ভারতের ওপেনিং জুটি রোহিত শর্মা ও শুভমন গিল সেই কাজে ব্যর্থ হন। ওভালের এই সবুজ উইকেটে ঠিক কোন লাইন-লেংথে বল করা উচিত তা খুব সুন্দর দেখালেন অজি বোলাররা। ঠিক অফ স্টাম্পের বাইরে গুড লেন্থ ধরে বল করা শুরু করলেন মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিংসরা। ফল স্বরূপ দেখা গেলো কামিংসের ভিতরের দিকে ঢুকে আসা বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন রোহিত। পাশাপাশি এই অফ স্টাম্পের বল এর সুইং না বুঝতে পেরে বোল্ড হয়ে যান শুভমন গিলও।

আজিদের পক্ষ থেকে তৃতীয় পেসার হিসাবে বল করতে এসে ভারতীয় ব্যাটারদের আরও নাস্তানাবুদ করলেন স্কট বোলান্ড। ওভালের সবুজ উইকেটে তাঁকেই খেলতে সব থেকে বেশি অসুবিধা হচ্ছিলো ভারতীয় ব্যাটারদের। বোলান্ড একটি নির্দিষ্ট জায়গা ধরে বল করছিলেন। আর সেই বলের সুইং বুঝতে না পেরে আইপিএলে সফল শুভমন বোল্ড হন। বলটি বাইরে যাবে ভেবে ছেড়ে দিয়েছিলেন শুভমন। কিন্তু তার উল্টো হয়ে ভিতরে ঢুকে আসে বলে বোল্ড হন শুভমন।

ওপেনিং জুটি সাজঘরে ফেরার পড়ে ভারতীয় ব্যাটিং নির্ভর করছিল চেতেশ্বর পুজারা ও বিরাট কোহলির উপরে। শুরু থেকে বেশ সাবলীল দেখাচ্ছিল পুজারাকে। সম্প্রতি কাউন্টি ক্রিকেটে খুব ভালো পারফরমেন্স করে এসেছেন তিনি। শুরুর দিকে বিরাটও বেশ ছন্দেই লাগছিলো। কিন্তু তা স্থায়ী হয়নি বেশিক্ষন। শুভমনের আউটের অ্যাকশন রিপ্লে দেখালেন পুজারা। ক্যামেরন গ্রিনের অফ স্টাম্পের বাইরে পড়া বল বাইরে বেরিয়ে যাবে ভেবে ছেড়ে দেন তিনি। কিন্তু পিচে পড়ে বল ভিতরের দিকে ঢুকে বোল্ড হন পূজারা। ১৪ রান করে ড্রেসিং রুমের দিকে ফিরতে হয় তাকে।

পূজারা ফিরে যাওয়ার কয়েক ওভার পরেই ফিরে যান কোহলিও। স্টার্কের হাত থেকে বেরিয়ে আসা বাউন্সার কোহলির ব্যাটের এজে লাগে, স্লিপে থাকা স্টিভ স্মিথ ঝাঁপিয়ে ভাল ক্যাচ ধরেন। ১৪ রান করে আউট হন কোহলি। মাত্র ৭১ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় ভারত।

এরপর অজিঙ্ক রাহানেকেও কামিংসের বলে এলবিডব্লিউ আউট দিয়েছিলেন আম্পায়ার। সঙ্গে সঙ্গে রিভিউ নেন অজিঙ্ক। রিভিউ দেখতে গিয়ে ধরা পড়ে, নো বল করেছেন কামিংস। ফলে এ বারের মত বেঁচে যান রাহানে। কিন্তু ভারতীয় ব্যাটারদের সহজে রান করতে দিচ্ছিলেন না অস্ট্রেলিয়ার চার পেসার। মাঝেমধ্যেই বেশ কিছু বল ফেস করতে সমস্যায় সম্মুখীন হচ্ছিলেন রাহানে ও জাডেজা।

৪ উইকেটের পতনের পর কিছুটা হলেও ভরসা দিচ্ছিলেন রাহানে ও জাডেজা। কোনও ঝুঁকি না নিয়ে বল দেখে খেলছিলেন দুই ব্যাটারই। তাঁরা দেখালেন তাড়াহুড়ো না করলে এই উইকেটে যে রান করা যায়। শেষ দিকে পেসাররা কিছুটা ক্লান্ত হয়ে পড়ায় ধীরে ধীরে রান আসছিল। কিন্তু ৪৮ রানের মাথায় নেথান লায়নের বলে আউট হন জাদেজা। সবুজ উইকেটে বাঁ হাতি ব্যাটারের সামনে অফ স্পিনার কতটা কার্যকরী হতে পারে সেটা দেখা গেল লায়নের বোলিং দেখে। লায়নের বল দেখে রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে না খেলানোর সিদ্ধান্ত হয়তো এখন কাঁটার মতো বিঁধছে ভারতীয় দলের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনো মিরাকেল ছাড়া এই জায়গা থেকে ভারতের ম্যাচে ফিরে আসা মুশকিল।

দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে ভারতের রান ৫ উইকেটের বিনিময়ে ১৫১। রাহানে ২৯ এবং শ্রীকর ভরত ৫ রানে ব্যাট করছেন। ভারত অস্ট্রেলিয়ার থেকে প্রথম ইনিংসে এখনও ৩১৮ রানে পিছিয়ে দ্বিতীয় দিনের শেষে। রাহানে-ভরত জুটির উপরেই তৃতীয় দিন ভারতের রানকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব থাকবে।

এইরকম ক্রীড়া জগতের সমস্ত আপডেট পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.