Mamata Banerjee praises Abhishek: কাকদ্বীপের মঞ্চ থেকে অভিষেকের ভূয়সী প্রশংসা করার পাশাপাশি বাঁধানো ছবি উপহার দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
হাইলাইটস:
• কাকদ্বীপের মঞ্চে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূয়সী প্রশংসা করেন তৃণমূল সুপ্রিমো
• সেখানেই তাঁকে একটি বাঁধানো ছবি দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
• ছবির কাহিনী প্রসঙ্গে অভিষেকের রাজনৈতিক সফলতার নেপথ্য কারণ তুলে ধরেন তৃণমূলনেত্রী
Mamata Banerjee praises Abhishek: শুক্রবার কাকদ্বীপে ‘তৃণমূলে নবজোয়ার’ কর্মসূচির শেষ দিনে অংশ নেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘তৃণমূলে নবজোয়ার’ কর্মসূচির সফলতা নিয়ে তৃণমূলনেত্রীর মুখে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূয়সী প্রশংসা শোনা যায়। শুধু তাই নয়, দলের একাধিক প্রথমসারির নেতানেত্রীর সামনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে একটি ছবিও উপহার দেন তিনি।
বিরোধীদের থেকে কম শুনতে হয়নি ‘পিসি-ভাইপো’ কটাক্ষ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলের ‘সেকেন্ড ইন কমান্ড’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে এভাবেই বারবার আক্রমণ করা হয় বিরোধীদের তরফ থেকে। পরিবারতন্ত্রের অভিযোগ ওঠে মমতা ও অভিষেকের ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে। নবজোয়ার যাত্রার অন্তিম দিনে বক্তব্য রাখতে উঠে তৃণমূলেরনেত্রী বলেন, ‘শুধু আমার নয়, যাঁরা আমরা তৃণমূল করি সবার পরিবার নিয়ে কুৎসা অপপ্রচার করেন বিরোধীরা। অনেক প্রশ্ন তোলেন অভিষেককে নিয়ে। ইতিহাস থেকে আমি অভিষেককে একটা ছবি উপহার দেব। অনেকেই পরিবারতন্ত্রের কথা বলেন। অনেকেই বলে পিসি এসে ভাইপোকে সাংসদ করে দিয়েছে। কিন্তু অনেকে সব ইতিহাসটা জানেন না।’ আর বিগত দুই মাস ধরে ‘তৃণমূলে নবজোয়ার’ কর্মসূচি সাফল্যের সাথে চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর গোটা টিমকে অভিনন্দন জানালেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তিনি বলেন, “৬০ দিন আগেকার অভিষেক আর আজকের অভিষেক এক নয়। অনেক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে এল ও।”
আজ তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছে তাঁর আবাল্য রাজনৈতিক সচেতনতা। সে রাজনীতিক দিক থেকে সচেতন ২ বছর বয়স থেকেই, শুক্রবার কাকদ্বীপের মঞ্চে এভাবেই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লেন তৃণমূল সুপ্রিমো। ‘যোগ্য উত্তরসূরী’ হিসেবে তাঁর স্নেহধন্য অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক সাফল্যের গুপ্ত কাহিনী তুলে ধরলেন জনগণের সামনে।
শুক্রবার কাকদ্বীপের মঞ্চে বক্তব্যের সূচনাতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, অভিষেককে কিছু উপহার দিতে চান তিনি। অভিষেকের বাল্য বয়সের একটি ঘটনা বলে তারই স্মারক হিসেবে একটি ছবি উপহার দিলেন। উপহার হিসেবে সেই ছবি অভিষেকের হাতে তুলে দেওয়ার আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘এই ছবিটা আমি ওঁকে উপহার দিতে চাই। ওঁর সংরক্ষণের তালিকায় এই ছবি থাকবে আগামী দিনে। এই ছবি দেখলে বোঝা যাবে যে, অভিষেক দু’বছর বয়স থেকে রাজনীতি করে। ডায়মন্ড হারবারে এসেই ভেবেছিলাম অভিষেককে কিছু একটা দিতে হবে।’ তিনজনকে সেই ছবিতে দেখা যাচ্ছে। মাথায় ব্যান্ডেজ করা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তাঁর মা গায়েত্রীদেবী এবং মায়ের কোলে ছোট্ট ছেলেটি হল অভিষেক। এই ছবির মূল কাহিনিও এদিন জনসমক্ষে খুলে বললেন তৃণমূল নেত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “১৯৯০ সাল, অভিষেকের বয়স তখন দুই বছর, নিতান্তই খুব ছোট ছিল ও। আমাকে খুব মেরেছিল সিপিএম, মাথা ফেটে গিয়েছিল। যখন আমি হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরলাম, মা জিজ্ঞেস করলেন, এমনটা কী করে হল? মায়ের কাছে বসে আমি সবটা বলছিলাম। আর মায়ের কোলে বসে অভিষেক সব মন দিয়ে শুনছিল, আমি খেয়াল করছিলাম। তারপরের দিন থেকে দেখেছি, অভিষেক একটা ঝান্ডা হাতে নিয়ে বাড়িময় দৌড়ত আর বলত- দিদিকে মারলে কেন, সিপিএম জবাব চাই, জবাব দাও। সেই থেকেই রাজনৈতিকভাবে সচেতন হয়ে পড়েছিল ও। সবাই এখন বলে, ও রাজনীতিতে এসেছে আমার ভাইপো বলে। একেবারে ঠিক কথা নয় সেটা।” এরপরই ফ্রেমে বাঁধানো ছবি সকলের সামনে অভিষেক বাবুর হাতে তুলে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঞ্চে দাঁড়িয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পায়ে হাত দিয়ে নেত্রীকে প্রণামও করেন।
নবজোয়ার কর্মসূচি চলকালীন সিবিআই তলবের মুখে পড়েন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নিয়োগ দুর্নীতিতে কুন্তল ঘোষের চিঠি মামলায় তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিজাম প্যালেসে দীর্ঘ ১০ ঘণ্টা জেরার সম্মুখীন হতে হয়। ইডিও সম্প্রতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তলব করেছে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে। কিন্তু তৃণমূল সাংসদ হাজির হননি ইডির সামনে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুক্রবার কাকদ্বীপের মঞ্চে বুঝিয়ে দিলেন, যে কোনও পরিস্থিতিতে তাঁর হাত অভিষেকের মাথার উপর রয়েছে সর্বদা।
এইরকম রাজনৈতিক বিষয়ক প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।