Summer Holidays: গরমের ছুটিতে পশ্চিমবঙ্গ এবং তার বাইরের রাজ্যগুলি থেকে ঘুরে আসার ৫টি সেরা গন্তব্যস্থল

Summer Holidays: গরমের ছুটিতে মন চায় যেন একটু পাহাড় অথবা সমুদ্র দিয়ে ঘুরে আসার

হাইলাইটস:

•আগামী মাসেরই পড়তে চলেছে এবছরের গরমের ছুটি

•পাহাড় অথবা সমুদ্র বাঙালির ঘোরা নিয়ে দরকার

•গরমের ছুটিতে ঘুরে আসুন এই সেরা গন্তব্যস্থল থেকে

Summer Holidays: এই বছর তীব্র গরম পড়েছে শহর কলকাতায়। যা অতীতের সব রেকর্ডকে ছাপিয়ে চলে গেছে। শহর কলকাতার তাপমাত্রা প্রায় ৪২ ডিগ্রিকেও অতিক্রম করে ফেলেছিল। তবে দুদিন ধরে ছিঁটেফোটা বৃষ্টির কারণে আবহাওয়ার সামান্য পরিবর্তন হয়েছে। তবে আবারও যদি এইরকম তীব্র গরম পোড়ে তখন যেন মনে হবে ছুটে চলে যাই পাহাড়ের উদ্যেশে। হ্যাঁ, গরম থেকে বাঁচতে পাহাড়ের কোলেই যেতে চাইলেন বাঙালিরা।একদিকে যেমন ভ্রমণপিপাসু বাঙালিরা একটু ছুটি পেলেই ব্যাগপত্র গুছিয়ে চলে ভ্রমণের উদ্যেশে, ঠিক তেমনই অন্যদিকে আর কিছুদিন পরেই গরমের ছুটি (Summer Holidays) পড়তে চলেছে রাজ্য সরকারের তরফে।

বাচ্চাদের ছুটি ছাড়া আর কী চাই! আপনারও কী গরমের ছুটি ঘুরতে যাওয়ার কোনও পরিকল্পনা আছে নাকি? যদি পরিকল্পনা না থাকে তবে আপনাকে সাহায্য করতেই আমাদের আজকের এই প্রতিবেদন। গরমের ছুটিতে পশ্চিমবঙ্গ এবং তার বাইরের রাজ্যগুলি থেকে ঘুরে আসার ৫টি সেরা গন্তব্যস্থলকে আমরা বেছে নিয়েছি। এই জায়গাগুলিতে আপনি আপনার বাজেটের মধ্যেই ঘুরে আসতে পারবেন। তাহলে দেরি না করে দেখে নিন সেই ৫টি সেরা গন্তব্যস্থলগুলিকে একসাথে –

১. মিরিক:

মিরিক পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলায় অবস্থিত ছবির মতো সুন্দর একটি পর্যটন কেন্দ্র। যা পাইন গাছের সারি দিয়ে ঘেরা একটি ছোট্ট পাহাড়ি। মনোরম আবহাওয়া, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং সুগম হওয়ার কারণে ভ্রমণপিপাসু বাঙালিদের মনে মিরিক একটি বিশেষ স্থাপন করে নিয়েছে। ঠান্ডা পরিবেশে, পাখির কলরবে, কমলালেবুর গন্ধে আপনি যেন নতুন করে প্রাণ ফিরে পাবেন। এখানকার মূল আকর্ষণ সুমেন্দু লেক। লেকের একদিকে বাগান, অন্য দিকে পাইন গাছের সারি। দুটি পারকে যুক্ত করেছে রামধনু সেতু। একটি সাড়ে ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ পথ লেকটিকে ঘিরে রেখেছে। এখানে হাঁটতে হাঁটতে কাঞ্চনজঙ্ঘার সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। লেকের জলে নৌকাবিহার এবং টাট্টু ঘোড়ায় চেপে লেকের চারপাশ প্রদক্ষিণ করাও সুবন্দোবস্ত আছে। আপনার গরমের ছুটির সেরা গন্তব্যস্থল হিসাবে আপনি মিরিককে বেছে নিতে পারেন।

কীভাবে যাবেন: হাওড়া অথবা শিয়ালদহ স্টেশন থেকে যেকোনও উত্তরবঙ্গগামী ট্রেন ধরে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে নামুন। তারপর সেখান থেকে সড়কপথে সরাসরি চলে যান মিরিক। আবার দার্জিলিং থেকে মাত্র ১ ঘন্টার পথ হল মিরিক।

২. সান্দাকফু-ফালুট:

সান্দাকফু পশ্চিমবঙ্গের উচ্চতম শৃঙ্গ যার উচ্চতা ৩৬৩৬ মিটার (১১৯৩০ ফুট)। দার্জিলিং-এর সিঙ্গালিলা জাতীয় উদ্যানের ধারে পশ্চিমবঙ্গ-নেপাল সীমান্তের এই শৃঙ্গ সিঙ্গালিলা পাহাড়ের সবচেয়ে উঁচু বিন্দু। পৃথিবীর ৫টি সর্বোচ্চ শৃঙ্গের ৪টি অর্থাৎ এভারেস্ট, কাঞ্চনজঙ্ঘা, লোৎসে এবং মাকালু দেখা যায় সান্দাকফু থেকে। যারা ট্রেকিং ভালবাসেন তাদের কাছে সান্দাকফু হল স্বর্গ। তবে সাধারণ পর্যটকরাও সান্দাকফু যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে ভাড়া করে নিতে পারেন ল্যান্ড রোভার। দলে সদস্য সংখ্যা বেশি হলে ল্যান্ড রোভার ভাড়া করার ক্ষেত্রে সুবিধা পাওয়া যায়। সান্দাকফু গেলে একইসঙ্গে ফালুটও ঘুরে আসতে পারেন।

কীভাবে যাবেন: হাওড়া অথবা শিয়ালদহ স্টেশন থেকে যেকোনও উত্তরবঙ্গগামী ট্রেন ধরে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে নামুন। তারপর সেখান থেকে সড়কপথে মানেভাঞ্জন হয়ে সান্দাকফু যাত্রা শুরু।

৩. পেলিং:

প্রতিবেশী রাজ্য সিকিমের একটি উল্লেখযোগ্য পর্যটনকেন্দ্র হল পেলিং। যা পশ্চিম সিকিমে অবস্থিত একটি বিখ্যাত হিল স্টেশন। ৬৭০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত হওয়ায় কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ শোভা পেলিং থেকে দেখা যায়। পাহাড়ি আঁকাবাঁকা পথ, পাশ দিয়ে বয়ে চলা চঞ্চলা তিস্তা পেরিয়ে একঘেয়ে জীবন থেকে খানিকটা স্বস্তি পেতে এ বার গরমের ছুটিতে আপনার সেরা ঠিকানা হতে পারে পশ্চিম সিকিমের পেলিং। গ্যাংটকের পর পর্যটকদের পছন্দের স্থানগুলির মধ্যে পেলিং অন্যতম। পেমিয়াংসি মনাস্ট্রি থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা ফলস, খরস্রোতা পাহাড়ি নদী রিম্বি খোলা থেকে খেচেওপালরি লেক কী নেই এখানে। এখানের আরেকটি অন্যতম আকর্ষণ স্কাই ওয়াক। তাহলে ব্যাগপত্র গুছিয়ে গরমের ছুটিতে চলে আসুন বাজেট ফ্রেন্ডলি ডেস্টিনেশন পেলিং।

কীভাবে যাবেন: হাওড়া অথবা শিয়ালদহ স্টেশন থেকে উত্তরবঙ্গগামী ট্রেন ধরে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে নামুন। তারপর সেখান থেকে সরাসরি সড়কপথে চলে যান পেলিং।

৪. শিলং:

শিলং হল উত্তর পূর্ব ভারতের মেঘালয়ের রাজধানী। মেঘালয় হল মেঘের রাজ্য। ফলে মেঘকে ছুঁয়ে দেখতে চাইলে যেতে হবে শিলংয়ে। ব্রহ্মপুত্র আলিঙ্গন করে রেখেছে এই মায়াবী শৈলশহরকে। শিলংয়ের পথের সৌন্দর্য খুবই মনোমুগ্ধকর। ভারতের অন্যান্য শৈলশহরগুলি থেকে বেশ কিছুটা আলাদা শিলং। এই শহরটি তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং ঐতিহ্যের জন্য সবচেয়ে বেশি পরিচিত। পাহাড়, ঝর্না, জঙ্গলে ঘেরা এই শিলং কে অতীতে বলা হত প্রাচ্যের স্কটল্যান্ড। গ্রীষ্মকাল শিলং ভ্রমণের জন্য একটি মনোরম সময়। এখানের জায়গাগুলি হল এলিফ্যান্ট ফলস, শিলং পিক, উমিয়াম লেক, ডন বস্কো যাদুঘর ইত্যাদি। উমিয়াম লেকে গেলে নৌকাবিহার করতে ভুলবেন না। সুতরাং বলা যায়, গরমের ছুটিতে বেড়াতে যাওয়ার জন্য আপনি মেঘালয়ের রাজধানী শিলংকেও বেছে নিতে পারেন।

কীভাবে যাবেন: হাওড়া থেকে গুয়াহাটি যাওয়ার এক্সপ্রেস ট্রেন ধরে গুয়াহাটি স্টেশন নামুন। তারপর সেখান থেকে সড়কপথে চলে যান শিলং।

৫. মন্দারমণি:

পাহাড় থেকে একটু সমুদ্রসৈকতের দিকে এলে ব্যাপারটা মন্দ হয় না। পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার একটি সমুদ্রতীরবর্তী পর্যটন কেন্দ্র হল মন্দারমণি। লাল কাঁকড়ার জন্য বিখ্যাত হলো মন্দারমণি। সমুদ্রতীরবর্তী বালিয়াড়িতে প্রচুর লাল কাঁকড়া দেখতে পাওয়া য়ায়। মন্দারমণিতে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত উপভোগ করা বেশ চমৎকার। এছাড়া মন্দারমণি গ্রাম তথা সমুদ্র সৈকতের খুবই শান্তিপূর্ণ এবং পরিবেশ আরামদায়ক। এখানে অনেক বিচ রিসোর্ট রয়েছে। কম খরচে ভ্রমণের জন্য মন্দারমণি একটি আদর্শ গন্তব্যস্থল। কলকাতা থেকে মাত্র কয়েক ঘন্টা দূরে অবস্থিত মন্দারমণিতে আপনি গরমের ছুটি কাটাতে পারেন।

কীভাবে যাবেন: মন্দারমণি যাওয়ার সবচেয়ে সুবিধাজনক পথ হল সড়কপথ। অথবা হাওড়া স্টেশন থেকে দীঘাগামী ট্রেনে মন্দারমণির নিকটবর্তী রেল স্টেশন কাঁথিতে নামুন। তারপর সেখান থেকে টোটো ভাড়া করে নিন।

এইরকম ভ্রমণ সংক্রান্ত সমস্ত প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।

Sanjana Chakraborty

Professional Content Writer

Leave a Reply

Your email address will not be published.