Mamata Banerjee on Rahul Gandhi: রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজ হতেই পাশে দাঁড়ালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

টুইট করে তৃণমূল সুপ্রিমো নিজেই তার ইঙ্গিত দিলেন

হাইলাইটস: 

•রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজে তাঁর পাশে মমতা-অভিষেক

•টুইটের মাধ্যমে মোদী সরকারের প্রতি নিন্দা করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো

•রাহুল গান্ধীর পাশে গোটা বিরোধী শিবির

Mamata Banerjee on Rahul Gandhi: ২০১৯ সালে ‘মোদী’ পদবি নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের দায়ে দু’বছর জেলের সাজাপ্রাপ্ত রাহুল গান্ধীর (Rahul Gandhi) সাংসদ পদ খারিজ করলেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা (Om Birla)। শুক্রবার লোকসভা সচিবালয়ের তরফে এ কথা জানানো হল। ভারতীয় সংবিধানের ১০২(১)-ই অনুচ্ছেদ এবং জনপ্রতিনিধিত্ব আইন (১৯৫১)-র ৮ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ করা হল। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) সরকারে বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপপ্রয়োগের অভিযোগ তুলে অন্য বিরোধী দলগুলিকে নিয়ে আন্দোলনের পথে নেমেছে কংগ্রেস।

শত তিক্ততা ভুলে লোকসভা থেকে বরখাস্ত রাহুল গান্ধীর পাশে দাঁড়ালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee on Rahul Gandhi)। টুইট করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও (Abhishek Banerjee)। তবে মমতা বা অভিষেক, কেউই রাহুলের নাম নেননি। তবে জোড়া টুইটের সময় দেখে মনে করা হচ্ছে, নাম না করলেও রাহুলের পাশেই দাঁড়িয়েছেন তৃণমূল নেত্রী এবং দলের সাধারণ সম্পাদক।

রাহুলের সাংসদ পদ খারিজের নিন্দা করেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভা সদস্য ডেরেক ও’ব্রায়েনও। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, তৃণমূল নেতানেত্রীরা কেউই টুইটে রাহুলের নাম নেননি। তৃণমূল সুপ্রিমো টুইটে লিখেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী মোদীর নতুন ভারতে বিরোধী নেতারাই বিজেপির মূল নিশানা হয়ে উঠেছেন। যখন অপরাধের ইতিহাস থাকা বিজেপি নেতাদের মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে, তখন বিরোধী নেতাদের বরখাস্ত করা হচ্ছে ভাষণ দেওয়ার জন্য! আজ, গণতন্ত্র নতুন নীচতায় পৌঁছল।’’

অভিষেক টুইটে লেখেন, ‘‘গণতান্ত্রিক ভারত এখন সোনার পাথরবাটি।’’

দিল্লির রাজনৈতিক মহল মনে করছে, লোকসভা ভোটের আগে রাহুলের সাংসদ পদ খারিজের ঘটনা বিরোধীদের আরও এককাট্টা করবে। যে সব অবিজেপি, অকংগ্রেসি রাজ্যগুলি এতদিন কংগ্রেসের থেকে দূরত্ব বজায় রাখছিল, এবার তারাও এই ইস্যুতে কংগ্রেসের কাছাকাছি চলে আসবে। মমতা-সহ তৃণমূল নেতাদের তড়িঘড়ি প্রতিক্রিয়া সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে বলে মনে করছেন রাজনীতির বিশেষজ্ঞরা। প্রসঙ্গত, এদিনই ইডি-সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে বিরোধী দলগুলি যে মামলা করেছে, তাতে শামিল হয় তৃণমূল এবং সমাজবাদী পার্টিও। কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে মোদিবিরোধী ১২টি রাজনৈতিক দলের বৈঠক করে এ নিয়ে দেশজুড়ে তীব্র আন্দোলন করার আহ্বান জানান। কংগ্রেস নেতারা ঘোষণা দিয়েছেন, এর বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

সাম্প্রতিক কালে কংগ্রেস-তৃণমূলের সম্পর্কে তিক্ততা দেখেছে রাজনৈতিক মহল। মেঘালয়, ত্রিপুরায় পরস্পরকে আক্রমণ করতে ছাড়েনি দু’ পক্ষ। মেঘালয়ে ভোট প্রচারে গিয়ে মমতা-অভিষেকদের জবাব দিতে সরাসরি তৃণমূলকে আক্রমণ করতেও ছাড়েননি রাহুল গান্ধি। আবার গত কয়েকদিনে দিল্লিতে কংগ্রেসের কোনও বৈঠকেই যোগ দেয়নি তৃণমূল৷ কয়েকদিন আগে দলের বৈঠকেও কংগ্রেসকে ছাড়া ২০২৪-এ একা লড়ার কথাই জানিয়েছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো৷ কিন্তু রাহুল গান্ধি (Rahul Gandhi) ইস্যুতে মমতা-অভিষেকের বার্তার পর রাজনৈতিক মহলেও দু-দলের সমীকরণ নিয়ে নতুন জল্পনা শুরু হয়েছে৷ সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদবও রাহুলের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন।

আবার রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজের প্রসঙ্গে মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে বলেছেন, “এটা গণতন্ত্রের হত্যা। পুরো রাষ্ট্রযন্ত্র চাপের মুখে আছে। এটাই স্বৈরাচারের অবসানের শুরু। চোরকে চোর বলাটা অপরাধ হয়ে গিয়েছে।”

সিপিআইএম সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি টুইটে লিখেছেন, ‘এটা নিন্দনীয় যে বিজেপি এখন বিরোধী নেতাদের নিশানা করতে অপরাধী মানহানির পথ ব্যবহার করছে এবং তাদের অযোগ্য ঘোষণা করছে। রাহুলকে বহিষ্কারের বিষয়টি বিরোধীদের বিরুদ্ধে ইডি/সিবিআই-এর চরম অপব্যবহারের চরম উদাহরণ। এই ধরনের স্বৈরাচারী হামলাকে প্রতিহত করুন এবং পরাজিত করুন।’

শেষ পর্যন্ত ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের (Lok Sabha Election) আগে কতটা বিরোধী ঐক্য দেখা যাবে, সেটা সময়ই বলবে। কিন্তু রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজই বিরোধীদের আবারও ঐক্যবদ্ধ করল।

এইরকম রাজনৈতিক বিষয়ক প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।

Sanjana Chakraborty

Professional Content Writer

Leave a Reply

Your email address will not be published.