Sukanya Mondal Arrest: গরু পাচার মামলায় এবার ইডি-র হাতে গ্রেফতার অনুব্রত মণ্ডলের মেয়ে সুকন্যা মণ্ডল
Sukanya Mondal Arrest: তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে
হাইলাইটস:
•দিল্লিতে ইডির হাতে গ্রেফতার অনুব্রত কন্যা সুকন্যা
•তদন্তে অসহযোগিতা করায় গ্রেফতার করা হল তাঁকে
•আজ তাঁকে দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে পেশ করা হবে
Sukanya Mondal Arrest: এবার ইডি-র জালে অনুব্রত কন্যা সুকন্যাও। বাবার গ্রেফতারির প্রায় আট মাসের মাথায় দিল্লিতে ইডি-র হাতে গ্রেফতার হলেন সুকন্যা মণ্ডল (Sukanya Mondal Arrest)। গত বছর অগাস্ট মাসে গরু পাচার মামলায় বীরভূম জেলা সভাপতি এবং তৃণমূল কংগ্রেসের দাপুটে নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। তিনি এখন দিল্লির তিহার জেলে বন্দি। অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার নজরে ছিল তাঁর মেয়ে সুকন্যা। কারণ গরু পাচারের এক বিপুল পরিমান অর্থের সবথেকে বড় সুবিধাভোগী সুকন্যাই ছিলেন বলেই অভিযোগ ছিল তদন্তকারী সংস্থার।
গরুপাচার মামলায় গতবছর অগস্ট অনুব্রত মণ্ডলকে প্রথমে গ্রেফতার করে সিবিআই। গ্রেফতারির পর বীরভূমের দাপুটে তৃণমূল নেতাকে নিজেদের হেফাজতে নেয় ইডি। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আসানসোল কেন্দ্রীয় সংশোধনারগারে বন্দি ছিলেন। তবে শেষমেশ দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টের নির্দেশে অনুব্রতকে দিল্লির তিহাড় জেলে নিয়ে যাওয়া হয়। এখন তিহাড় জেলেই তাঁর দিন কাটছে। অগস্টে অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পরই তাঁর মেয়ে সুকন্যাকে দিল্লিতে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। কারণ তাঁর নামে বিপুল সম্পত্তির খোঁজ পেয়েছেন তদন্তকারীরা। তবে সুকন্যা তখন স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ওই সব প্রশ্নের উত্তর তাঁর বাবা এবং হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারিই দিতে পারবেন।
এরপর বয়ানে অসঙ্গতি মেলায়, অনুব্রতর দেহরক্ষী সায়গল হোসেন এবং হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারিকেও গ্রেফতার করেছিল ইডি৷ হিসাব রক্ষক মণীশ কোঠারিকে জেরা করে সুকন্যা সম্পর্কে নানা তথ্য পাওয়া গিয়েছিল। ইডির তরফে দাবি করা হয়, ২০১৪ সালের আগেও সুকন্যার বছরে আয়ের পরিমাণ ছিল ৩ লক্ষ টাকার মতো। গত দু’বছরে তাঁর বার্ষিক আয় ১ কোটি টাকার কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে। সেই সূত্রেই জানা যায়, বোলপুরের ভোলে ব্যোম রাইস মিলের মালিকানায় সুকন্যার নাম রয়েছে। দু’টি সংস্থারও ডিরেক্টর তিনি। ব্যাঙ্কে কোটি কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিট রয়েছে তাঁর নামে এবং একাধিক জমিও হয়েছে। সাধারণ একজন স্কুল শিক্ষিকা হয়েও তাঁর নামে এত সম্পত্তি হয় কী করে সেই হিসাবই মেলাতে পারছিল না কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
অনুব্রত এবং তাঁর পরিবারের সম্পত্তি সংক্রান্ত খোঁজখবর জানতে সুকন্যাকেও তলব করেছিল ইডি। গত মার্চ মাসেই সুকন্যাকে আবারও তলব করা হয় দিল্লিতে। কিন্তু তিনি হাজিরা এড়ান। তার আগের বার আইনজীবী মারফত চিঠি দিয়ে সুকন্যা বেশ কিছু দিন সময় চেয়েছিলেন। তৃতীয় বারও তিনি ইডির তলব এড়ান। হাজিরা এড়ানোর কারণ হিসাবে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানানো হয়, সুকন্যা শারীরিক ভাবে অসুস্থ। বার বার তিনি এইভাবেই হাজিরা এড়িয়ে গিয়েছিলেন। তবে গতকাল অবশেষে দিল্লিতে ইডি-র দফতরে হাজিরা দিয়েছিলেন তিনি। ইডি সূত্রে খবর, তিনি নানাভাবে কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছিলেন। ক্রমাগত প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যেতে থাকেন তিনি। ফলে তদন্তে অসহযোগিতা এবং ইডি-র কাছে সমস্ত নথি জমা না দেওয়ার জন্যই গতকাল সুকন্যাকে গ্রেফতার করা হয় ইডির তরফে৷
সুতরাং বলা যায়, শেষ তিন বার ইডির হাজিরা এড়িয়ে গেলেও চতুর্থ বার আর শেষ রক্ষা হল না। ইডি সূত্রে খবর, গতকাল অর্থাৎ বুধবার দিল্লির ইডি দফতরে এসে হাজির হন অনুব্রত কন্যা সুকন্যা। এদিন তাঁকে সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ তলব করা হয়। তাঁর আইনজীবীকে ইডি দফতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। শেষমেশ দফায় দফায় জিজ্ঞাসবাদ শেষে তাঁকে গ্রেফতার করেনইডির আধিকারিকরা। কারণ তিনি কোনও প্রশ্নেরই জবাব ঠিক মতো দেন নি। তার বদলে তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার অভিযোগও উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। ইডি সূত্রে খবর, আজ তাঁকে দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে পেশ করা হবে। সেখানে তাঁকে নিজেদের হেফাজতে চাইবে ইডি। তারপর অনুব্রত এবং সুকন্যাকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা ভাবা হচ্ছে। মেয়ের গ্রেফতারিতে আরও বেশি চাপে পড়ে গেলেন অনুব্রত মণ্ডল, এমনই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
এইরকম রাজনৈতিক সংক্রান্ত প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।