Abhishek Banerjee: আগামী ২৫শে এপ্রিল থেকে অভিষেকের নেতৃত্বে ‘তৃণমূলে নব জোয়ার’ কর্মসূচি শুরু করতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস
পঞ্চায়েত ভোটের আগে এটি তৃণমূলের মাস্টারস্ট্রোক প্ল্যান
হাইলাইটস:
•পঞ্চায়েতের নির্বাচনের আগে তৃণমূলের নয়া কর্মসূচি
•এই কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে ‘তৃণমূলে নব জোয়ার’
•কর্মসূচির নেতৃত্বে থাকবেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়
Abhishek Banerjee: আগামী মে মাসে রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও তীব্র গরমে তা পিছিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে। কারণ প্রবল দাবদহে পুড়ছে সারা বাংলা। ফলে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচন কবে হতে চলেছে, তা এখনই বলতে পারছেন না রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের ঝুলিতে আবারও নয়া কর্মসূচি। যা পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তৃণমূলের মাস্টারস্ট্রোক প্ল্যানও বটে। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে (Abhishek Banerjee) শুরু হতে চলেছে ‘তৃণমূলে নব জোয়ার’ কর্মসূচি।
গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবার এই বিষয়ে বিস্তারিত জানালেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ২৫শে এপ্রিল থেকে অভিষেকের নেতৃত্বে শুরু হতে চলেছে এই নয়া কর্মসূচি। এই কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে ‘তৃণমূলে নব জোয়ার’। এমনকি কর্মসূচির স্লোগান হল, ‘নিয়ে উন্নয়নের অঙ্গীকার, এল তৃণমূলে নব জোয়ার’। এই কর্মসূচির মূলত দুটি পার্ট, একটি ‘জন সংযোগ যাত্রা’, অপরটি ‘গ্রাম বাংলার মতামত’। প্রায় ২ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলবে এই কর্মসূচি। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তৃণমূলের এই নয়া কর্মসূচি গ্রামবাংলার মানুষদের আশার আলো দেখাতে পারে। কোচবিহারের দিনহাটা থেকে শুরু এই কর্মসূচি এবং শেষ হবে পাথরপ্রতিমা বা সাগরে। অভিষেক বাড়ি থেকে গ্রাম বাংলা সফরে রহনা দেবেন আগামী ২৪ তারিখ বিকেলে।
এই নয়া কর্মসূচির প্রধান কেন্দ্রবিন্দু হল তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। কারণ তিনিই জেলায় জেলায় ঘুরে গ্রামবাংলার মানুষের সমস্যার কথা শুনবেন এবং তারপর তা সমাধানের চেষ্টা করবেন। শুধু তাই নয়, পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রার্থী বাছাই নিয়েও এ দিন বড়সড় সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন অভিষেক। তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানান, গ্রাম সফর চলাকালীন যে এলাকায় যাবেন তিনি, সেখানে গোপন ব্যালটে ভোটদানের ব্যবস্থা করা হবে। গ্রামের যে কেউ, যে কোনও দলের সমর্থক ওই ভোটে অংশ নিতে পারবেন। জানাতে পারবেন তাঁদের পছন্দের প্রার্থীর নাম। তিনি এও বলেন, ভোটদাতার নাম সম্পূর্ণভাবে গোপন রাখা হবে। অভিষেক জানালেন, সারাদিন একাধিক জায়গায় বৈঠক হবে। এক একটি বৈঠক হবে ৮-১০টি পঞ্চায়েতকে নিয়ে। এমনকি ৩-৪টি জনসভাও হবে। সারাদিনের বৈঠকের পর রাতে দলের স্থানীয় নেতৃত্বকে নিয়ে বৈঠকে বসবেন অভিষেক।
তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই জানিয়েছিলেন এই নয়া কর্মসূচির কথা। এবার অভিষেকের নেতৃত্বে শুরু হতে চলেছে দলের নব জোয়ার কর্মসূচি। মমতার বুধবারের ঘোষণার পরেই বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করেন অভিষেক। তাঁর কথায়, ‘‘পঞ্চায়েতই প্রশাসনের শিরদাঁড়া। পরিষ্কার পঞ্চায়েত গঠনের মধ্যে দিয়েই নতুন তৃণমূল আত্মপ্রকাশ করবে।’’ উত্তরবঙ্গ থেকে এই র্কমসূচি শুরু করতে চলেছেন অভিষেক। কারণ উত্তরবঙ্গে অনেকটাই শক্তি ধরে রাখতে পেরেছে বিজেপি। তাই উত্তরবঙ্গে ঘাসফুল ফোটাতে কোচবিহারে ৩ রাত, আলিপুরদুয়ারে ১ রাত, জলপাইগুড়িতে ২ রাত এইভাবে রাজ্য জুড়ে চলবে দু’মাস ব্যাপী তাঁর কর্মসূচি। তিনি জানান, “আগামী দু’মাস ধরে মানুষের পঞ্চায়েত গড়া এই কর্মসূচীর আসল লক্ষ্য। গণতন্ত্রে শেষ কথা বলেন, গণদেবতা। মানুষ যাঁকে প্রাধান্য দেবেন, তাঁকেই প্রার্থী করা হবে। এছাড়া ওয়েবসাইটে লাইভ ফর্ম থাকবে, সেখানে মতামত জানানো যাবে। আমি রাতে ক্যাম্পে থাকব।” সুতরাং অভিষেক নিজেও গ্রাম সফরে গিয়ে তৃণমূল কর্মীদের সাথেই রাত্রিযাপন করবেন ক্যাম্পেই।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, “আমি বারবার বলেছি আগামীদিনে পঞ্চায়েতে গণতান্ত্রিক, অবাধ, শান্তিপূরণ নির্বাচন হবে। মানুষ নিজের ভোটাধিকার নিজে প্রয়োগ করবেন। আমার মানুষের মতামত নিয়ে পঞ্চায়েত স্তরে প্রার্থী ঠিক করবো।” ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখে ভোটের প্রচারে নতুন মাত্রা এনেছিল তৃণমূল। তাতে ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের ধাক্কা সামলে সাফল্য পেয়েছিল রাজ্যের শাসক দল। এমনকি নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহের বিজয়রথকে থামিয়ে দিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একা হাতেই। এর ফলস্বরূপ তৃতীয়বারের জন্য বাংলার মসনদে বসেছেন তিনি। তবে পঞ্চায়েত ভোটের আগে দলের সাধারণ সম্পাদকের নয়া কর্মসূচি কিছুটা ভিন্ন হলেও তাতে গ্রামবাংলার মানুষের ব্যাপক সাড়া পড়বে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। অবশ্য ভোটের মুখে অভিষেকের এই কর্মসূচিকে কটাক্ষই করতে ছাড়েনি বিরোধীরা।
এইরকম রাজনৈতিক বিষয়ক প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।