Abhishek Banerjee: সাময়িক বিরতির পর আজ থেকে শুরু হচ্ছে অভিষেকের জনসংযোগ যাত্রা
হাইলাইটস:
• আজ সোমবার বাঁকুড়ার ইন্দাস থেকে ফের নবজোয়ার যাত্রা শুরু করছেন অভিষেক
• সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদের নির্যাস শূন্য, সিবিআই দফতর থেকে বেরিয়ে এমনই মন্তব্য করেছেন অভিষেক
• দ্বিতীয় দফায় নবজোয়ার কর্মসূচি নিয়ে ইতিমধ্যে প্রস্তুতি তুঙ্গে
Abhishek Banerjee: কুন্তল ঘোষের চিঠি সংক্রান্ত মামলায় সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসা পর্ব মিটিয়ে বাঁকুড়ার ইন্দাস থেকে আজ ফের নবজোয়ার যাত্রা শুরু করতে চলেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গত শুক্রবার সিবিআই হাজিরার নোটিশ দেওয়ার ফলে নবজোয়ার যাত্রাকে মাঝ পথে থামিয়েই বাঁকুড়া থেকে কলকাতার উদ্দেশ্যে রহনা দিয়েছিলেন তিনি। অভিষেকের পূর্বকল্পিত ওই জনসভার ভার্চুয়ালি নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর অভিষেক শনিবার সিবিআই দফতর নিজাম প্যালেসে হাজিরা দেন। দীর্ঘ সাড়ে ৯ ঘন্টা তাঁর জিজ্ঞাসা পর্ব চলে।
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার রায়ের বিরুদ্ধে অভিষেকের আইনজীবীরা ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছেন। সিবিআই-জিজ্ঞাসাবাদের পর শনিবার নিজাম প্যালেস থেকে বেরিয়ে অভিষেকও সুপ্রিম কোর্টে এসএলপি দায়ের করার কথা নিজেই জানান। সূত্রের খবর, শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে শনিবার অভিষেকের আইনজীবীরা তাঁর মামলা শোনার আবেদন জানান। অনুমতি মেলায় এসএলপি দায়ের হয়। অবশ্য সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার আগে বিচারপতি সিনহার রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের একাধিক ডিভিশন বেঞ্চে শুনানির আবেদন করেছিলেন অভিষেকের আইনজীবীরা। তবে শুক্রবার হাইকোর্টে গরমের ছুটি শুরু হওয়ায় কোনও ডিভিশন বেঞ্চ দ্রুত শুনানির আশ্বাস দেয়নি। এরপর সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন অভিষেক।
এইদিকে যেমন আইনি লড়াই অন্যদিকে আজ বাঁকুড়া থেকেই অভিষেক শুরু করতে চলেছেন তাঁর জনসংযোগ যাত্রা। তৃণমূল সূত্রে খবর, আজ সোমবার বিকেল তিনটে নাগাদ চপারে করে তিনি বাঁকুড়ার মাটিতে পা রাখবেন। অন্যদিকে সুপ্রিম কোর্টের দিকেও সবার নজর থাকবে। শনিবার সিবিআই দফতর থেকে বেরিয়েই অভিষেক দাবি করেছিলেন, নবজোয়ার কর্মসূচি রুখতেই তাঁকে তলব করেছিল সিবিআই। সেই সঙ্গে বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করেন তিনি। অভিষেক বলেন, ‘এই জিজ্ঞাসাবাদের নির্যাস শূন্য। আমারও সময় নষ্ট, ওদেরও সময় নষ্ট। ইডি কয়লা কাণ্ডে ডেকেছিল তখনও বলেছিলাম আমার জন্য একটি ফাঁসির মঞ্চ তৈরি করা হোক। শুধুমাত্র নবজোয়ার রুখতেই নোটিস পাঠানো হচ্ছে। আমাকে ডাকাডাকি বন্ধ করুন। আমার বিরুদ্ধে প্রমাণ থাকলে আমায় গ্রেফতার করুন। কেউ তো আটকাচ্ছে না। ইডি, সিবিআই, এনআইএ, এজেন্সিকে দিয়ে ধমকানো হচ্ছে। আমরা বশ্যতা স্বীকার করব না। তদন্তের নাম করে জনসংযোগ যাত্রা রোখার সুপরিকল্পিত চক্রান্ত।
সে সঙ্গেই তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘বিজেপির কারও নাম এলে তাঁদের কেন ডাকা হচ্ছে না? নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তো ধৃত প্রসন্ন রায় দিলীপ ঘোষের নাম নিয়েছেন। তাঁকে কেন ডাকা হচ্ছে না?’ আর ঠিক এর পরেই পূর্ণ উদ্যমে দলীয় কর্মসূচিতে ‘ঝাঁপিয়ে পড়া’র কথাও বলেছেন অভিষেক। তিনি বলেন, সোমবার থেকে দশ গুণ বেশি উৎসাহ নিয়ে জনসংযোগ যাত্রা শুরু করবেন তিনি। যাত্রার সাফল্য দেখে কেন্দ্রীয় সরকার এজেন্সি লাগিয়ে দিলেও তিনি দিল্লির পোষা কুকুর না হয়ে ‘রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের মতো’ লড়বেন বলে এদিন মন্তব্য করেছিলেন অভিষেক।
সাময়িক বিরতির পর আজ সেই বাঁকুড়া থেকেই তিনি শুরু করবেন নবজোয়ার যাত্রা। চপারে করে ইন্দাসে পৌঁছে প্রথমে ইন্দাস হাইস্কুল মাঠে ‘বিশেষ কর্মসূচী’তে যোগ দিয়ে দলীয় সভায় বজ্রপাতে মৃত এবং আহত তৃণমূল কর্মীদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার কথা রয়েছে তাঁর। তারপর বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ কোতুলপুর বিধানসভা কেন্দ্র এলাকার জয়পুরের কুম্ভস্থল মা সারদা চটিতে ‘রোড শো’তে অংশ নেবেন তিনি। সবশেষে বিষ্ণুপুর তুর্কির মাঠে সাড়ে পাঁচটায় অধিবেশন ও সেখানেই রাত্রিবাসের কর্মসূচী রয়েছে তাঁর। এরপর বুধবার সকালে পুরুলিয়ার উদ্দেশে রওনা দেবেন তিনি।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই জানিয়েছিলেন, পূর্ণ উদ্যমে ফের নবজোয়ার যাত্রা শুরু করা হবে। ফলে দ্বিতীয় দফার নবজোয়ার যাত্রাকে সফল করতে নতুন উদ্যমে দেখা গেল দলীয় কর্মীদের। দলীয় পতাকা, ফেস্টুনে ছেয়ে গিয়েছে গোটা বিষ্ণুপুর। অভিষেকের কর্মসূচিতে জনসমাগম নিশ্চিত করতে রবিবার দিনভর দফায় দফায় বৈঠকও করেন বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল নেতারা। ইন্দাসেও কর্মসূচির প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেন দলের নেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, এবার জনসুনামিতে পরিণত হবে অভিষেকের এই কর্মসূচি। ফলে আজকের দিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ অভিষেকের কাছে। একদিকে যেমন দ্বিতীয় দফার নবজোয়ার যাত্রা শুরু করতে চলেছেন ঠিক তেমনই অন্যদিকে আজ সুপ্রিম কোর্টে তাঁর দাখিল করা এসএলপির প্রেক্ষিতে শুনানি হওয়ার কথা৷ ফলে বলা যায়, শীর্ষ আদালতের রায় এবং জনজোয়ার যাত্রা দুদিকেই নজর রয়েছে রাজনৈতিক মহলের একাংশের।
এইরকম রাজনৈতিক বিষয়ক প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।