সেই সঙ্গেই জেনে নিন এর উপকারিতাগুলি
হাইলাইটস:
•গরমে পান্তা ভাত খেলে শরীর ঠান্ডা হয়
•পান্তা ভাত পুষ্টিগুনে ভরপুর
•পান্তা ভাত বানানোর রেসিপিটি দেখে নিন
Panta Bhat: ইতিমধ্যে শহর কলকাতার তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি অতিক্রম করেছে, এই তীব্র গরমে সাধারণ মানুষের প্রায় নাজেহার অবস্থা। ভাত আমাদের বাঙালিদের প্ৰিয় খাদ্য। আর যদি এই গরমে পাতে থাকে পান্তা ভাত (Panta Bhat) তবে তো আর কোনও কথাই হবে না। এই ভাতের বিকল্প খুঁজে পাওয়া কঠিন। গরমে শরীর সুস্থ রাখতে পান্তা ভাতের জুড়ি মেলা ভার। শুধু বাংলা নয়, ওড়িশা এবং আমাদের প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশেও পান্তা ভাত খাওয়ার প্রচলন রয়েছে। ওড়িশায় এই ভাতকে বলে পোখাল ভাত। আর বাংলাদশে এটি একটি রাজকীয় খাবার।
সাধারণ ভাতের তুলনায় পান্তা ভাতে প্রচুর পরিমানে পুষ্টিকর খনিজ পদার্থ আয়রন, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, জিংক, ফসফরাস, ভিটামিন B12 ইত্যাদি রয়েছে। ১০০ মিলিগ্রাম সাধারণ ভাতে আয়রন থাকে ৩.৫ মিলিগ্রাম, ওই ভাতই ১২ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখলে আয়রনের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ৭৩.৯ মিলিগ্রামে।
সারা রাত ধরে ভাতে জল ঢেলে ঢেকে রাখা পান্তা ভাত খুব সাধারণ এবং প্রচলিত খাবার হলেও এটি পুষ্টিগুনে ভরপুর। চিকিৎসকরাও অনেক সময় পান্তা ভাত খাওয়ার পরামর্শ দেন। গ্রামাঞ্চলে এখনও যারা গরমে মাঠে কাজ করেন তারা দুপুরে পান্তা ভাত খান। এই ভাত স্বল্প আয়ের মানুষের খাবার হিসেবেই অধিক পরিচত।
পান্তা ভাতের উপকারিতাগুলি হল:
•চিকিৎসকদের মতে, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী হল এই পান্তা ভাত। সারা রাত জল দিয়ে রাখার কারণে ভাতের ভিতরে একটি রাসায়নিক ফেনা (ফার্মেন্টেশন) উৎপন্ন হয়। যার ফলে ভাতের মধ্যে থাকা কার্বোহাইড্রেট ভেঙে যায় এবং অ্যান্টি নিউট্রিশনাল ফ্যাক্টরগুলিরও ক্ষয় হয়।
•পান্তা ভাত আলসার রোগেরও উপশম করে। সারা রাত জল দিয়ে রাখার জন্য ফার্মেন্টেশন হবে। ফার্মেন্টেশনের ফলে পান্তা ভাতের পুষ্টিগুণ বেড়ে যায়। ফলে আলসারের মতো মারাত্মক রোগ থেকেও দারুন উপশম পাবেন।
•প্রোবায়োটিক্সে ভরপুর হল পান্তা ভাত। এমনকি এটি হজমশক্তি রক্ষাতেও সাহায্য করে। সেই সঙ্গে পান্তা ভাত সারাদিন কাজ করার জন্য শক্তি যোগাতে সাহায্য করে ।
•ন্যাচারাল ল্যাক্সেটিভ হিসেবে কাজ করে পান্তা ভাত। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতেও সহায়তা করে। ফলে যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা আছে তারা অবশ্যই পান্তা ভাত খান।
•যাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে তাদের ক্ষেত্রেও এটি বেশ কার্যকরী। সাধারণ ভাতের তুলনায় এতে সোডিয়ামের পরিমাণ তুলনামূলক কম। অন্যদিকে পটাশিয়ামের পরিমাণ যথেষ্ট বেশি। যা নানা ভাবে উপকারে আসে।
•ফার্মেন্টেশনের(গাঁজন) ফলে পান্তা ভাতে ভিটামিন B12 বেড়ে যায়। যা আমাদের শরীরে ক্লান্তি এবং অনিদ্রা দূর করতে সাহায্য করে।
•ফার্মেন্টেশনের কারণে পান্তা ভাতে কার্বোহাইড্রেট এবং ফ্যাটের পরিমাণ অনেকটাই কমে যায়। তাই অনেকক্ষেত্রে ওজন কমাতে কার্যকরী ভূমিকা নেয় এটি।
•পান্তা ভাতকে ‘বিউটি সিক্রেট অফ এশিয়া’ বলা হয়। কারণ এটি কোলাজেন তৈরিতে সাহায্য করে। এটি ত্বকের ইলাস্টিসিটি বৃদ্ধি করে। ফলে ত্বক মসৃণ, টানটান ও উজ্জ্বল দেখায়।
•ফারমেন্টেশনের ফলে ল্যাকটিক অ্যাসিডও তৈরি হয়। যা স্তন্যপান করানো মায়েদের দুগ্ধ উৎপাদনে সাহায্য করে।
•পান্তা ভাতেক বলা হয় বডি রিহাইড্রেটিং ফুড। এটি গরমে শরীরকে ঠান্ডা রাখতে এবং হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে পান্তা ভাত।
পান্তা ভাতের সুস্বাদু রেসিপিটি হল:
•প্রথমে যে ভাবে বাড়িতে ভাত বানান তা বানিয়ে নিন।
•তারপর ভাত ঠান্ডা হওয়ার সময় দিন।
•এরপর তাতে ঠান্ডা জল ঠেলে দিন। অবশ্য তার আগে অল্প চটকে মেখে নিতে পারেন ভাতটা।
•এবার এতে একে একে পিঁয়াজ কুচি, ধনেপাতা কুচি, কাঁচা লঙ্কা কুচি মিশিয়ে নিন।
•তারপর গতাতে গন্ধরাজ লেবু রস ছিটিয়ে দিন।
•এর সঙ্গে তেল লঙ্কা ও আলু সেদ্ধ বানিয়ে নিন। আপনি ডিম সেদ্ধও বানাতে পারেন।
দ্রষ্টব্য: অনেকে সারা রাত ধরে ভাত জলে ভিজিয়ে রাখে।
এইরকম স্বাস্থ্য এবং লাইফস্টাইল সম্পর্কিত প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।