West Bengal Panchayat Election 2023: পিছোতে পারে পঞ্চায়েত ভোট! তড়িঘড়ি ভোট ঘোষণা নিয়ে প্রশ্ন হাইকোর্টের

West Bengal Panchayat Election 2023: পঞ্চায়েত মামলায় হাইকোর্টে ব্যাকফুটে কমিশন

হাইলাইটস:

• পিছিয়ে যেতে পারে পঞ্চায়েত ভোটের দিনক্ষণ

• ২০১৮ সালের মডেল অনুযায়ী ভোট করানোর পক্ষে আদালত

• মনোনয়নের সময় পেছনো নিয়ে পরিবর্তন প্রস্তাব কমিশনের

West Bengal Panchayat Election 2023: পঞ্চায়েত ভোট কি শেষ পর্যন্ত পিছিয়ে যাবে? সোমবার হাইকোর্টে পঞ্চায়েত মামলার শুনানির পর নতুন মাত্রা যোগ হল সেই জল্পনাতেই৷ গতকাল কলকাতা হাইকোর্ট ২০১৮ সালের মডেল অনুযায়ী যেভাবে পঞ্চায়েত ভোট করানোর পরামর্শ দিয়েছে তাতে ভোটের দিন পিছিয়ে ১৪ই জুলাই করতে হবে কমিশনকে। কমিশনের পক্ষ থেকে যদিও পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়নের দিন না বাড়ালেও প্রতিদিন মনোনয়ন জমা দেওয়ার জন্য ২ ঘণ্টা বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে হাইকোর্টে৷ নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী পঞ্চায়েত ভোট সংক্রান্ত মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের সামনে এই প্রস্তাব দেন সোমবার৷ গতকাল কলকাতা হাইকোর্টে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দায়ের করা দুটি জনস্বার্থ মামলার শুনানি শুরু হয়েছে৷

গতকাল বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম হাইকোর্টে সওয়াল জবাব চলাকালীন বার বারই মনোনয়ন জমা দেওয়ার কম সময় নিয়ে, বিরোধীদের তোলা অভিযোগটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন৷ সোমবার হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতির এজলাসে হাজির ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও৷

প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম গতকাল বলেন, ২০১৮ সালে যে ভাবে ভোটের বিজ্ঞপ্তি, মনোনয়ন প্রক্রিয়া এবং ভোটের দিনক্ষণ ঠিক করেছিল কমিশন, এ বারও সেই পথেই কমিশন ভোটের দিনক্ষণ ঠিক করলে সমস্যা কাটানো যেত। কিন্তু এখন ২০১৮ সালের মডেল অনুযায়ী মনোনয়নের দিনক্ষণ সাজালে কম বেশি এক সপ্তাহ পিছিয়ে যেতে পারে পঞ্চায়েত ভোট৷

কমিশনের তাড়াতাড়ি ভোট ঘোষণা নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘২০১৮ সালে পঞ্চায়েত ভোট বিজ্ঞপ্তির ৫ দিন পর থেকে শুরু হয় মনোনয়ন শুরু হয়েছিল৷ এটাই মামলাকারীরা তাঁদের অভিযোগে বলছেন। সকাল ১০ টায় বিজ্ঞপ্তি ও সকাল ১১ টায় মনোনয়ন কীভাবে? এমনটা তো করা হয়নি বিগত বছরের ভোটে? ২০১৮ সালে ভোটের বিজ্ঞপ্তি হয় ২৭শে মে আর মনোনয়ন জমা নেওয়া শুরু হয় ২রা জুন থেকে। বিজ্ঞপ্তির দিন বাদ দিলেও, ৫ দিন পর থেকে সেবার মনোনয়ন প্রক্রিয়া শুরু হয়৷ নির্বাচন কমিশন যদি বিজ্ঞপ্তির দিন বাদ দিয়ে ৫ দিন পর থেকে মনোনয়ন পর্ব শুরু করে সেক্ষেত্রে ১৫ই জুন থেকে ২১শে জুন পর্যন্ত মনোনয়ন জমার প্রক্রিয়া চলবে৷ ২৩শে জুন স্ক্রুটিনি হবে৷ ২৬শে জুন হবে মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন।’

রাজ্য নির্বাচন কমিশন আগেই ঘোষণা করেছে পঞ্চায়েত ভোট হবে ৮ই জুলাই হবে৷ কিন্তু হাইকোর্টের পরামর্শ অনুযায়ী ২০১৮ সালের মডেল অনুযায়ী মনোনয়ন প্রক্রিয়া নতুন করে সাজালে ১৪ই জুলাই পঞ্চায়েত ভোট করতে হবে৷

সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবী তড়িঘড়ি ভোট ঘোষণার প্রক্রিয়া এবং নতুন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ নিয়েই প্রশ্ন তোলেন৷ হাইকোর্টে কমিশনের পক্ষ থেকে আইনজীবী যুক্তি দেন, মনোনয়নের সময়সীমা একদিনই বাড়ানো সম্ভব পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী৷ মনোনয়নের দিন বাড়ানোর পরিবর্তে প্রতিদিন ১১টা থেকে ৩টের বদলে ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময়সীমা বাড়া্নোর প্রস্তাব দেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী৷

গতকাল কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তায় ভোট করানো নিয়েও কমিশনের ওপর চাপ বাড়িয়েছেন প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম৷ শুনানি চলাকালীন প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন, নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে কমিশনের অবস্থানের র্মূল্যায়ন হওয়া উচিত৷ কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তায় পঞ্চায়েত ভোট করানোর প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘‘নির্বাচনে কেন্দ্রীয় মোতায়েন করলে ভাল হয়। নিজের মতো বাহিনী দেবে রাজ্য। ধরুন, কলকাতা থেকে পুলিশ হাওড়া এবং হুগলীতে পাঠালেন। সে ক্ষেত্রে তো বাহিনী কম পড়তে পারে শহরে। তাই কমিশনের কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে চিন্তা করা প্রয়োজন।’’ ভোটকার্যে সিভিক ভলিন্টিয়ারদের ব্যবহার করা প্রসঙ্গেও সতর্ক করে মহামান্য আদালত বলেছে, ‘‘অভিযোগ রয়েছে এ বিষয়ে। মনে রাখতে হবে, সিভিক কিন্তু পুলিশ নয়। সিভিক পুলিশকে সাহায্য করার কাজে যুক্ত।’’

রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী অবশ্য আদালতে জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং অস্থায়ী কর্মীদের ভোটের কাজে ব্যবহার করা নিয়ে আদালতের নির্দেশ মেনে চলবে নির্বাচন কমিশন৷

এইরকম রাজনৈতিক বিষয়ক প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.