Satyajit Ray Birth Anniversary: আজ কিংবদন্তী চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ১০২তম জন্মবার্ষিকী
Satyajit Ray Birth Anniversary: ‘মহারাজা তোমারে সেলাম’, জন্মদিনে ফিরে দেখা সত্যজিৎবাবুর সফরনামা
হাইলাইটস:
•আজ কিংবদন্তী চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের জন্মদিন
•তিনি কলকাতার বিখ্যাত রায় পরিবারের সন্তান ছিলেন
•ভারতীয় চলচ্চিত্র তথা বিশ্ব চলচ্চিত্রের শ্রেষ্ঠ পরিচালকদের মধ্যে অন্যতম হলেন সত্যজিৎ রায়
Satyajit Ray Birth Anniversary: আজ, ২রা মে অর্থাৎ কিংবদন্তী চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের জন্মদিন। ১৯২১ সালের ২রা মে কলকাতা শহরের সাহিত্য ও শিল্প সমাজে খ্যাতনামা রায় পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি (Satyajit Ray Birth Anniversary)। তবে তাঁর পৈতৃক বাড়ির ছিল তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের কিশোরগঞ্জে (বর্তমানে বাংলাদেশ) কটিয়াদী উপজেলার মসূয়া গ্রামে। তিনি ছিলেন বিখ্যাত শিশুসাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর সুযোগ্য উত্তরসূরি এবং বাংলা সাহিত্য জনক ও শিশুসাহিত্যিক সুকুমার রায়ের সুযোগ্য সন্তান। তিনি কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ ও শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। তবে পড়াশোনার পর তিনি চলচ্চিত্র নির্মাণের দিকে ঝুঁকে পড়েছিলেন।
১৯৪৯ সালে ফরাসী পরিচালক জঁ রনোয়ারের সাথে সাক্ষাৎ হয় সত্যজিৎ রায়ের। তখন ফরাসী চলচ্চিত্রকার তাঁর ‘দি রিভার’ চলচ্চিত্রের শুটিংয়ের জন্য কলকাতায় আসেন। প্রথমে কলকাতায় ফরাসি চলচ্চিত্রকার জঁ রনোয়ারের সাথে সাক্ষাৎ ও পরে লন্ডন শহরে সফররত অবস্থায় ইতালীয় নব্য বাস্তবতাবাদী চলচ্চিত্র লাদ্রি দি বিচিক্লেত্তে (ইতালীয়: Ladri di biciclette, বাইসাইকেল চোর) দেখার পর তিনি চলচ্চিত্র নির্মাণে উদ্বুদ্ধ হন। তারপর ১৯৫৫ সালে সত্যজিৎ রায় নির্মাণ করেন তাঁর প্রথম ছবি ‘পথের পাঁচালী’। যা সর্বকালের সেরা চলচ্চিত্র হিসেবে পরিগনিত হয়। ছবিটি ১১টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করে যার মধ্যে অন্যতম হল কান চলচ্চিত্র উৎসবে ‘বেস্ট ডকুমেন্টরি ফিল্ম’ হিসাবে পুরস্কৃত হয়। বাঙালির অস্কার বিজয়ের সুখও আসে একমাত্র তাঁর হাত ধরেই।
এরপর ‘অপুর সংসার’, ‘দেবী’, ‘কাঞ্চনজঙ্ঘা’-র মতো একের পর এক ছবি তৈরি করলেন তিনি। ইতিমধ্যে তাঁর মাথার মধ্যে ছোটদের জগৎ নিয়েও ছবি তৈরির চিন্তা ভাবনার সূত্রপাত ঘটে। ঠিক তার পরেই তিনি বাঙালিকে উপহার দিলেন ‘গুপি গাইন বাঘা বাইন’, ‘হীরক রাজার দেশে’, ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’, ‘সোনার কেল্লা’-র মতো ছবি বিখ্যাত ছবিগুলি। চলচ্চিত্রের পাশাপাশি সাহিত্যকর্মেও ছিল তাঁর অগাধ দক্ষতা। বাংলা সাহিত্যের রোমাঞ্চকর কিছু গল্প লিখেছেন তিনি। ফেলুদা, প্রফেসর শঙ্কু, তাড়িনি খুড়ো তাঁর অমর চরিত্র। চলচ্চিত্র জগতে তিনি মোট ৩২টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের পাশাপাশি পেয়েছেন ‘বিবিসির শ্রেষ্ঠ বাঙালি’ (১৩তম) উপাধি। এমনকি তাঁর সাফল্যের ঝুঁড়িতে আছে পদ্মভূষণ এবং ভারতরত্নের মতো সম্মানজনক পুরস্কারও। অবশেষে ১৯৯২ সালে ২৩শে এপ্রিল হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর কর্মজীবনের সমাপ্তি ঘটে মাত্র ৭১ বছর বয়সে। তবে বিশ্বের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সত্যজিৎ রায় নামটি আজীবন অক্ষুণ্ণ থাকবে।
ভারতীয় চলচ্চিত্র তথা বিশ্ব চলচ্চিত্রের শ্রেষ্ঠ পরিচালকদের মধ্যে অন্যতম হলেন সত্যজিৎ রায়। আজ তাঁর জন্মদিন উপলক্ষ্যে কলকাতায় তাঁর বাসভবনে সকাল থেকেই অনুরাগীদের ভিড় থাকে চোখে পড়ার মতো। কারণ বছরের এই বিশেষ দিনে রায় বাড়ির দরজা খুলে যায় সত্যজিৎ রায়ের অনুরাগীদের জন্য। তবে করোনা কালে মাঝে দু’বছর রায় বাড়িতে এই বিশেষ দিনে সাধারণের প্রবেশ ছিল নিষিদ্ধ। সত্যজিৎ-পুত্র সন্দীপ রায় বললেন, ‘‘এই দিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অতিথিরা আসতেই থাকেন। তাই ব্যস্ততা লেগেই থাকে।’’ আজ সকালে সন্দীপবাবুর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন তাঁরই পর্দার ফেলুদা সব্যসাচী চক্রবর্তী। গতকাল কিংবদন্তী চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ‘মহানগর’ ছবির ৬০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে নন্দনে একটি বিশেষ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। তাতে সন্দীপ রায়ের সাথে উপস্থিত ছিলেন ‘মহানগর’ ছবির মুখ্য চরিত্র বর্ষীয়ান অভিনেত্রী জয়া বচ্চন।
অন্যদিকে টলিপাড়াতেও উন্মাদনার শেষ নেই সত্যজিৎ রায়ের জন্মদিন উপলক্ষ্যে। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় একটি ভিডিও পোস্ট করেন। ভিডিওটির ক্যাপশনে তিনি লেখেন ‘মানিক জেঠু আমাদের মনে চির-উজ্জ্বল। উজ্জ্বল তাঁর সৃষ্টি ও স্মৃতি। আগামীকাল, ২রা মে সত্যজিৎ রায়ের জন্মবার্ষিকী। কিছু বিশেষ স্মৃতি আজ ভাগ করে নিলাম আপনাদের সঙ্গে।’ অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তও সোশ্যাল মিডিয়া সত্যজিৎবাবুর একটি পোর্ট্রেটের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি শেয়ার করেছেন। পরিচালক রাজ চক্রবর্তী থেকে অরিন্দম শীল সকলেই টুইট করে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন মানিকবাবুকে। এছাড়া সত্যজিৎ রায়ের জন্মদিন উপলক্ষ্যে টুইটে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
এইরকম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।