Mamata Banerjee On Government Jobs: পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বিরাট ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর! ১ লক্ষ ২৫ হাজার শূন্য পদ নিয়োগ রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি দফতরে
রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা না হলেও প্রস্তুতি করে দিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলি। শাসক থেকে বিরোধী কেউই পিছিয়ে নেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের তোড়জোরে।
Mamata Banerjee On Government Jobs: পঞ্চায়েত নির্বাচনের বিপুল এই কর্মসংস্থানের ঘোষণা নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ
হাইলাইটস:
• পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সুখবর শোনালেন মুখ্যমন্ত্রী
• রাজ্যের সরকারি পদে নিয়োগ হতে চলেছে ১ লক্ষ ২৫ হাজার কর্মী
• কোন কোন দফতরে নিয়োগ হতে চলেছে, একনজরে দেখে নিন
Mamata Banerjee On Government Jobs: রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা না হলেও প্রস্তুতি করে দিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলি। শাসক থেকে বিরোধী কেউই পিছিয়ে নেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের তোড়জোরে। এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে রাজ্যের সরকারি পদে নিয়োগ নিয়ে একগুচ্ছ ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার অর্থাৎ গতকাল নবান্নে এক সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানান, আগামী একবছরে রাজ্যের সরকারি দফতরগুলিতে ১ লক্ষ ২৫ হাজার পদে নিয়োগ হবে। সঙ্গে বিরোধীদের কাছে তাঁর অনুরোধ, এই নিয়োগে যেন বাধা না দেন তাঁরা।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানিয়েছেন, ‘আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যেই এই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘রাজ্য সরকার নতুন কর্মসংস্থানের ব্যাপক জোর দিচ্ছে। আমরা দ্রুত এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বদ্ধপরিকর।’ এর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ছাত্রছাত্রীদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য চালু করা হয়েছে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড এবং কারিগরি শিক্ষার সুযোগ করে দিতে শুরু হয়েছে উৎকর্ষ বাংলা প্রকল্প। তবে এই লক্ষাধিক নিয়োগের মধ্যে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা, রাজ্য সরকারের গ্রুপ ডি সহ বিভিন্ন দফতরে নিয়োগের কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ এছাড়াও চিকিৎসক, নার্স, অধ্যাপক থেকে শুরু করে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী নিয়োগের কথাও ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ পঞ্চায়েত নির্বাচনের বিপুল এই কর্মসংস্থানের ঘোষণা নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহল।
নিয়োগ দুর্নীতিতে রাজ্য সরকার যখন কার্যত কোনঠাসা অবস্থায় তখন মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণা আবারও রাজ্য সরকারকে ফ্রন্ট ফুটে নিয়ে আসতে পারে। কারণ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন শাসকদলের নেতা, বিধায়ক এবং শাসক-ঘনিষ্ঠরা। এমনকি চাকরির দাবিতে মাসের পরমাস আন্দোলন এবং অনশন চলছে কলকাতার রাজপথে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পর দেখা যায়, শিক্ষা দফতরে কর্মসংস্থানের হার বেশি। কিছু দিন আগে মন্ত্রিসভার বৈঠকে নিয়োগ নিয়ে মন্ত্রী এবং আমলাদের উপর ক্ষুব্ধ হন মুখ্যমন্ত্রী। সূত্রের খবর, তিনি জানান তাঁর ছাড়পত্র সত্ত্বেও বেশ কিছু পদে নিয়োগ আটকে রয়েছে। তার কারণও জানতে চান তিনি। রাজ্যের বিভিন্ন পদে শূন্যপদের সংখ্যা চোখে পড়ার মতো। অবশেষে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই এই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে, গতকাল এমনই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
একনজরে জেনে নেওয়া যাক রাজ্য সরকারের কোন পদে কত কর্মী নিয়োগের কথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী –
• শিক্ষার ক্ষেত্রে – প্রাথমিক শিক্ষায় ১১ হাজার শিক্ষক নিয়োগ এবং উচ্চ প্রাথমিকে ১৪ হাজার ৫০০ শিক্ষক নিয়োগ হতে চলেছে রাজ্যে।
• অন্যদিকে রাজ্যের কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে প্রায় ২ হাজার ২০০ অধ্যাপক নিয়োগ হবে।
• পুলিশের বিভিন্ন পদে নিয়োগ করা হবে ২০ হাজার কর্মী। প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। এবং ৩ হাজার আবগারী কনস্টেবল নিয়োগ করা হবে।
• রাজ্য সরকারের গ্রুপ ডি পদে ১২ হাজার এবং গ্রুপ সি পদে ৩ হাজার কর্মী নিয়োগ করা হবে।
• স্বাস্থ্য দফতরে ২ হাজার ডাক্তার, ৭ হাজার নার্স নিয়োগ করা হবে।
• সমাজকল্যাণ দফতরে শীঘ্রই অঙ্গনওয়াড়ি ওয়ার্কার পদে ৯ হাজার ৪৯৩ জনএবং তার সাথে অঙ্গনওয়াড়ি হেল্পার পদে ১৩ হাজার ৯২৬ জনকে নিয়োগ করা হবে।
• কমিউনিটি হেলথ কর্মী ২ হাজার এবং ৭ হাজার আশা কর্মীও নিয়োগ হবে।
• এছাড়া রাজ্য সরকারের বিভিন্ন পদে ১৭ হাজার নিয়োগ হতে চলেছে।
তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার আগেই তৃণমূলের তরফে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছিল, দল জয়ী হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মসনদে বসলে বিশেষ জোর দেওয়া হবে কর্মসংস্থানের উপর। সেই মোতাবেক এবার বড় ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে এর আগে একাধিকবার বিরোধীরা রাজ্য সরকারি পদে নিয়োগ প্রসঙ্গে তৃণমূল সরকারকে তোপ দেগেছেন। বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, একাধিক শূন্যপদ থাকা সত্ত্বেও সরকার নিয়োগ করছে না। এই নিয়ে বিভিন্ন সময় সুর চড়াতে শোনা গিয়েছিল বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে। গতকাল নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক থেকে চাকরির ঘোষণা শেষে মুখ্যমন্ত্রী বিরোধীদের উদ্দেশ্যেও বার্তা দেন। তিনি বলেন, চাকরি দেওয়ার ক্ষমতা নেই কিন্তু চাকরি বাতিল করা বা চাকরিতে বাধা দেওয়ার কাজটা দয়া করে কোনো রাজনৈতিক নেতারা করবেন না। রাজ্যের যুবক যুবতীদের স্বার্থে এই কাজ করবেন না। সুতরাং বলা যায়, রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এইরকম জনকল্যাণমূলক নিয়োগের ঘোষণা শাসকদলকে বাড়তি অক্সিজেন দিতে মুখ্য ভূমিকা গ্রহণ করবে।
এইরকম রাজনৈতিক বিষয়ক প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।