Governor CV Ananda Bose in Bhangar: শুক্রবার ভাঙড়ের হিংসা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে যান রাজ্যপাল, সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলে গন্ডগোলের বিষয়ে জানতে চান তিনি
Governor CV Ananda Bose in Bhangar: রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস হিংসা কবলিত ভাঙড় পরিদর্শন করেন শুক্রবার
হাইলাইটস:
• শুক্রবার রাজ্যপাল ভাঙড় পরিদর্শনে যান
• সেখানে তিনি হিংসা কবলিত এলাকাগুলি ঘুরে দেখেন
• ভাঙড়ের সাধারণ মানুষ, পুলিশ এবং বিডিও অফিসের আধিকারিকদের সাথেও কথা বলেন তিনি
Governor CV Ananda Bose in Bhangar: গতকাল হিংসায় ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়া ভাঙড়ে যান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন জমার শেষ দিনে ভয়ঙ্কর হিংসার সাক্ষী থেকেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়। একের পর এক গাড়িতে আগুন জ্বালানো হয়, মুহুর্মুহু বোমা পরে, সাথে চলে গুলিও। গত বৃহস্পতিবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস রাজ্যের রাজনৈতিক হিংসা নিয়ে রাজভবন থেকে কড়া বিবৃতি প্রকাশ করেন। সূত্রের খবর, রাজ্যপাল তাঁর সকল পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি বাতিল করে ভাঙড়ে যান গতকাল। ওই দিন বেলায় ভাঙড়ের হিংসা কবলিত এলাকায় গিয়ে পৌঁছন রাজ্যপাল। সেখানে মানুষের কাছ থেকে হিংসার বিবরণ শোনেন তিনি।
গত বৃহস্পতিবার ভাঙড়ের কাঁঠালিয়ার বিজয়গঞ্জ বাজারে তুমুল উত্তেজনা ছড়ায়। শুক্রবার ভাঙ্গড় পৌঁছে প্রথমেই রাজ্যপাল বিজয়গঞ্জ বাজারে যান। এই বিজয়গঞ্জ বাজারেই তুমুল অশান্তি ছড়িয়েছিল মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে। ওই বাজারেই আইএসএফের দুই কর্মী খুন হন বৃহস্পতিবার। রাজ্যপাল প্রথমে বিজয়গঞ্জ বাজারে পৌঁছে এলাকা পরিদর্শন করেন, কথা বলেন সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে। বৃহস্পতিবার ঝামেলার সময় বোমা ছোড়ার ব্যাপারে প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানতে চান। পরবর্তীতে পুলিশ কর্তাদের কথা বলেন রাজ্যপাল। এরই মধ্যে কয়েকজন আইএসএফ প্রার্থী রাজ্যপালের সঙ্গে কথা বলেন। রাজ্যপালের কাছে তারা নালিশ জানায়, ভয় দেখিয়ে ও পথ আটকে তাদের মনোনয়ন জমা দিতে দেওয়া হয়নি। উল্লেখ্য, ভাঙড় কার্যত যুদ্ধক্ষেত্রের রূপ নিয়েছিল গত দু-তিনদিন ধরে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয় সেখানে।
এমনকী পুলিশকেও অসহায় অবস্থায় দেখা যায় সেখানে। ভাঙড়ের পরিস্থিতি এখনও থমথমে। এরই মধ্যে ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি প্রাণনাশের আশঙ্কার কথা জানিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখেছেন এবং নিরাপত্তা চেয়েছেন।
শুক্রবার স্থানীয়রা রাজ্যপালকে জানান, ক্যানিং থেকে গাড়ি করে দুষ্কৃতীরা ভাঙড়ে ঢুকেছিল বৃহস্পতিবারের ঝামেলায়। ক্যানিং পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক শওকাত মোল্লার নেতৃত্বে দুষ্কৃতীরা ভাঙড়ে ঢুকে এই ঝামেলার সৃষ্টি করেছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। রাজ্যপাল নিজের সঙ্গে থাকা অফিসারদের কাছে জানতে চান- ‘কে এই শওকাত মোল্লা?’। অফিসাররা শওকাত মোল্লার পরিচয় সম্পর্কে জানান সিভি আনন্দ বোসকে।
রাজ্যপাল বৃহস্পতিবারই জানিয়ে দেন, এই হিংসা বরদাস্ত করা হবে না কোনও অবস্থাতেই। রাজ্যপাল বলেন, তিনি হতবাক যে ভোটের আগেই হিংসার ঘটনায় রাজ্যে মৃতের সংখ্যা দেখে। রাজ্যপাল হুঁশিয়ারির সুরে জানান, ‘আমি পদক্ষেপ করলে তা অত্যন্ত কড়া পদক্ষেপ হবে।’ তারপর রাতে বিবৃতি জারি করে রাজ্যপাল বলেন, ‘নির্বাচনে বিজয় মৃতদেহ গণনার উপর নয়, ভোট গণনার উপর নির্ভর করা উচিত। আক্রমণের মুখে আমাদের সংবিধান। শয়তানের এই খেলা শেষ হওয়া উচিত। শেষের শুরুটা হবে পশ্চিমবঙ্গে। জনগণই প্রভু গণতন্ত্রে। নির্ভয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ অবিচ্ছেদ্য অধিকার। হিংসার কোনও অবস্থান নেই গণতান্ত্রিক নির্বাচনে। যে কোনও মূল্যে সহিংসা নির্মূল করা হবে।’
বিজয়গঞ্জ রাজ্যপাল রাজ্যপাল ভাঙড় ২ নং বিডিও অফিসে যান। সেখানে তিনি কর্তব্যরত আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন। ভাঙড়ের এই ২ নং বিডিও অফিস কার্যত দুষ্কৃতীদের দখলে চলে গিয়েছিল গত বৃহস্পতিবার। গেট আটকে রেখে মনোনয়ন জমা পর্ব চলে বিডিও অফিসের ভিতরে। পরিস্থিতি সামলাতে হিমশিম খেয়ে যায় পুলিশ।
এদিকে হাইকোর্ট হিংসার প্রেক্ষিতে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাতেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনার স্বরাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন। এদিকে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়েও। তৃণমূলের কুণাল ঘোষ এই ব্যাপারে মন্তব্য করেন, ‘কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হলেও পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূল কংগ্রেস জিতবে’। অপরদিকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, পশ্চিমবঙ্গে মৃত্যুমিছিল অন্তত থামবে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হলে।
এইরকম রাজনৈতিক বিষয়ক প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।