Mamata Banerjee: ডিএ নীরবতায় ক্ষোভ! কর্মীদের কিছু সুবিধা ঘোষণা মুখমন্ত্রীর, সরকারি কর্মচারীদের কী আশ্বাস দিলেন তিনি?
ডিএ নিয়ে ক্ষোভ লঘু করার উদ্দেশ্য এবার সরকারি কর্মচারীদের পদোন্নতির প্রক্রিয়া সহজ করল পশ্চিমবঙ্গ সরকার৷
Mamata Banerjee: পদোন্নতির সুযোগ বাড়ানোর জন্য সেকশন অফিসার থেকে শুরু করে অ্যাডিশনাল সেক্রেটারির মতো পদের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে, খবর নবান্ন সূত্রে
হাইলাইটস:
• ডিএ নিয়ে সরকারি কর্মচারীদের ক্ষোভ নতুন বিষয় নয়
• গতকাল সাংবাদিক বৈঠকে ডিএ নিয়ে বক্তব্য রাখেন মুখ্যমন্ত্রী
• ডিএ নিয়ে ক্ষোভ কিছুটা লঘু করার জন্যই রাজ্য সরকারের এত প্রচেষ্টা
Mamata Banerjee: ডিএ নিয়ে ক্ষোভ লঘু করার উদ্দেশ্য এবার সরকারি কর্মচারীদের পদোন্নতির প্রক্রিয়া সহজ করল পশ্চিমবঙ্গ সরকার৷ কর্মজীবনের বিভিন্ন বছরে বর্ধিত বেতনের সময়সীমা বাড়ানো, সরকারি কর্মীদের স্বাস্থ্য বিমায় ‘ক্যাশলেস’ বা বিনা নগদের সুযোগ বৃদ্ধি, প্রশাসনের কয়েকটি স্তরে বাড়তি পদ তৈরির মতো কিছু সুবিধা বুধবার ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু কেন্দ্রের সমহারে ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা না-করে এই সব সুবিধা ঘোষণা করায় সরকারি কর্মচারী মহলের বড় অংশ ক্ষুব্ধ। মুখ্যমন্ত্রী সরকারি কর্মচারীদের একাংশের সঙ্গে আজ বৈঠক করেন। সেখানে ডব্লিউবিসিএস অফিসারদের সংগঠনের প্রতিনিধি সহ একাধিক সরকারি কর্মচারীদের সংগঠনের প্রতিনিধিরা হাজির ছিলেন৷ সেই বৈঠকেই এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়৷ তবে মুখ্যমন্ত্রীর এ দিনের ঘোষণায় ছিল না ডিএ নিয়ে কোনও আশ্বাস, আন্দোলনরত কর্মচারী সংগঠনগুলির একাংশ সেই নিয়ে তুলছে প্রশ্ন।
নবান্ন সভাঘরে কয়েকটি কর্মচারী সংগঠন এবং আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী, হাতে-গোনা কয়েকটি সংগঠনকে বৈঠকে ডেকে কর্মী-আন্দোলনে বিভাজন সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়েছে এবং ডিএ-র ব্যাপারে যথারীতি নীরব থেকেছে সরকার, অভিযোগ ডিএ-র দাবিতে মামলাকারী সংগঠনগুলির।নবান্ন সূত্রে জানা যাচ্ছে যে,পদোন্নতির সুযোগ বাড়ানোর জন্য অ্যাডিশনাল সেক্রেটারি থেকে শুরু করে সেকশন অফিসারের মতো পদের সংখ্যা বৃদ্ধি করার সিধান্ত নেয়া হয়েছে।
বৈঠকের পরে রাজ্য সরকার লিখিত ভাবে জানায়,এবার থেকে কাজে যোগ দেওয়ার ৮, ১৫ ও ২৪ বছরের মাথায় CAS-এর সুবিধা পাবেন কর্মচারীরা, এতদিন ধরে কাজে যোগ দেওয়ার পর ৮, ১৬ ও ২৫ বছর পর প্রমোশন না হলেও সরকারি কর্মচারীরা পেতেন CAS-এর সুবিধা। অর্থাৎ চাকরিজীবনের শুরু থেকে ৮, ১৬ এবং ২৫ বছরের মাথায় বর্ধিত ‘পে স্কেল’ বা বেতনহার পাওয়া যেত। এ বার শেষের দু’টি ধাপ এক বছর করে কমে হবে ১৫ এবং ২৪ বছর। অর্থাৎ ওই দু’টি স্তরে রাজ্যে সরকারি কর্মীরা এক বছর করে আরও দু’বছর বাড়তি হারে বেতন পাবেন। সেই নিয়মের সরলিকরণ করলো রাজ্যে সরকার।এর পাশাপাশি,সরকারি স্বাস্থ্য বিমায় দেড় লক্ষের বদলে দু’লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনা নগদের সুবিধা পাওয়া যাবে। অর্থাৎ,যাঁরা হেলথ স্কিমের আওতায় ছিলেন তাঁদের জন্য ক্যাশলেস চিকিৎসার ঊর্ধ্বসীমা ১.৫ লক্ষ থেকে বাড়িয়ে ২ লক্ষ করা হলো।পাশাপাশি সংখ্যালঘু দফতরের অধীনে এসএসকে এবং এমএসকে শিক্ষকদের ৩ শতাংশ করে বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট এবং অবসর নেওয়ার সময় এককালীন তিন লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা।
সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, মাদ্রাসা শিক্ষা এবং সংখ্যালঘু বিষয়ক দফতরের আওতায় থাকা সাড়ে তিন হাজার শিক্ষকও ১লা জুন থেকে এই সুবিধা পাবেন। পদোন্নতির ফলে বিভিন্ন দফতরে তৈরি শূন্য পদগুলি তিন মাসের মধ্যেই পূরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সরকারি সিদ্ধান্তে ‘কমন ক্যাডার সার্ভিসে’ অতিরিক্ত সচিবের ১০টি বাড়তি পদ সৃষ্টি হয়েছে। সেকশন অফিসারের ৪৭০টি পদ বেড়ে ৬০০, ওএসডি বা অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি কিংবা তার মতো পদ ২০৮ থেকে বেড়ে ৩০০, সহকারী সচিবের ১১২টি পদ বেড়ে ১৫০, উপসচিবের পদ ১১৪ থেকে বেড়ে ১৫০ এবং যুগ্মসচিবের ২০টি পদ বেড়ে হচ্ছে ৩০টি। রেভিনিউ সার্ভিস, সমবায়, শ্রম, খাদ্য ও সরবরাহ, তথ্য ও সংস্কৃতি, অডিট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস লিগ্যাল এবং স্ট্যাটিস্টিক্স সার্ভিসে যুগ্ম ও বিশেষ সচিব পদের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।এমনকি সেচ, পূর্ত ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের ইঞ্জিনিয়ারিং শাখার বিভিন্ন ধাপেও পদ বাড়ানো হচ্ছে।
অন্যতম মামলাকারী সংগঠন কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের সভাপতি শ্যামলকুমার মিত্র বলেন, “বকেয়া ৩৬% ডিএ ১২ মাস দিতে সরকারের খরচ হত ২৭,৭৫৬ কোটি টাকা। কিন্তু ২০১১-১২ থেকে ২০২১-২২ অর্থবর্ষ পর্যন্ত বেতন এবং ভাতা খাতে ব্যয় না হওয়া অর্থের পরিমাণ প্রায় ২৫,২৬২ কোটি। ফলে ২৬০০ কোটি টাকার মতো দিতে হবে সরকারকে। কিন্তু এই বিষয়ে এ দিনের ঘোষণায় কোনও উচ্চবাচ্যই নেই।” আর কর্মচারী পরিষদের সভাপতি দেবাশিস শীলের মতে, “এসএসকে, এমএসকে শিক্ষকদের ছিটেফোঁটা সুযোগ ছাড়া বাকি সব তেলা মাথায় তেল ঢালার ঘোষণা।”
এইরকম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।