Bangla News

Cyclone Mocha: ফের অশনি সংকেত! ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় মোকা, কতটা প্রভাব পড়বে বাংলায়?

Cyclone Mocha: মৌসুম বিভাগ জারি করেছে আগাম সতর্কতা

হাইলাইটস:

•আবার ঘূর্ণিঝড় মাথাচাড়া দিচ্ছে বঙ্গোপসাগরে

•ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করা হয়েছে মোকা

•ওড়িশার উপকূলবর্তী অঞ্চলে আঁছড়ে পড়ার সম্ভবনা রয়েছে

Cyclone Mocha: বঙ্গোপসাগরে ফের মাথাচাড়া দিচ্ছে ঘূর্ণিঝড়ের প্রকোপ। এবার আতঙ্কের নাম ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’ (Cyclone Mocha)। বছরের প্রথম ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়তে পারে বঙ্গোপসাগর উপকূলবর্তী অঞ্চলে। আগামী কয়েক দিনে একটি নিম্নচাপ পুঞ্জীভূত চলেছে বঙ্গোপসাগরে। আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী ৬ই মে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হতে পারে ঘূর্ণাবর্ত। পরদিন সেই ঘূর্ণাবর্ত শক্তি বাড়াবে। আর ৮ মে এটি নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। হতে পারে ঝড় এবং তার সাথে বৃষ্টিপাতও। তবে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হবেই, এমন নিশ্চয়তা এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি। তাদের তরফে কেবলমাত্র জানানো হয়েছে, বঙ্গোপসাগরের পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে।

তবে অতীতে আমরা দেখেছি নিম্নচাপ ক্রমাগত শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়। ফলে আতঙ্কে কাঁপছে বঙ্গোপসাগর উপকূলবর্তী রাজ্য ওড়িশা। কারণ ওড়িশা উপকূলেই আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা এই ঘূর্ণিঝড়ের। বাংলাদেশেও এর ব্যাপক প্রভাব পড়তে পারে। তবে এখনই স্পষ্টভাবে কিছু জানায়নি মৌসম ভবন। শুধু মাত্র ঘূর্ণিঝড় মোকা নিয়ে পূর্বাভাস জারি করেছে মৌসম ভবন। এই সতর্কতার পরে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েকের নেতৃত্বে গতবার উচ্চস্তরীয় বৈঠকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার কৌশল নির্ধারণ স্থির করা হয়৷ বিশেষ করে সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকাগুলির জন্য বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে সেই রাজ্যের তরফে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর পাশাপাশি রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং দমকল বিভাগকেও তৈরি থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকা থেকে এখন থেকেই নিরাপদ দূরত্বে স্থানীয় মানুষ জনকে সরিয়ে নিয়ে যেতে হবে বলেও পরামর্শ দিয়েছেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী। ত্রাণকার্য এবং পুনর্বাসন নিয়েও এখন থেকে পরিকল্পনা সেরে রাখতে বলা হয়েছে। এমনকি আধিকারিকদের যে কোনওরকম পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সূত্রের খবর, যুদ্ধকালীন তৎপরতায় নানান পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে৷ সম্ভবত ওড়িশা উপকূলবর্তী এলাকাতেই এর ল্যান্ডফল হতে পারে। ফলে ল্যান্ডফল কোথায় হবে এই বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও আপডেট দেয়নি মৌসম ভবন।

তবে ঘূর্ণিঝড় মোকা আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছে। যা শীঘ্রই নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। তবে বাংলায় সরাসরি কোনও ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়বে না বলেই জানিয়েছে হাওয়া অফিস। কিন্তু অতীতে আমরা দেখেছি বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড়গুলির প্রভাব সরাসরি বাংলায় না পড়লেও বাংলার উপকূলবর্তী এলাকাগুলি, যেমন- দক্ষিন ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর এইসব জেলাগুলি অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই গতকাল নবান্ন সভাঘরে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের সঙ্গে একটি জরুরি বৈঠকে বসেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করতে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে রাজ্য সরকার। পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য এবার মে মাসেই খোলা হচ্ছে কন্ট্রোল রুম। সূত্রের খবর, রাজ্যের সব জায়গায় বিপজ্জনক নদী বাঁধগুলির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার জন্যও এদিনের বৈঠকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বঙ্গবাসীও সাক্ষী থেকেছে একাধিক ঘূর্ণিঝড়ের। এর আগে ফণী, আমফান এবং ইয়াসের আতঙ্ক ভুলতে পারেনি রাজ্যবাসী। আমফানের ভয়াবহতা আজও বঙ্গবাসীর চোখে ভেসে উঠে। এর মধ্যে আরও একটি ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা ঘনীভূত হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় ফণীর সঙ্গে মোকার মিল থাকতে পারে ধরে নিয়েই আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে ওড়িশা প্রশাসন। তার জন্য এখন থেকেই কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। তবে বাংলায় সরাসরি প্রভাব না থাকলেও সেক্ষেত্রে আগামী সপ্তাহ থেকে শহর এবং রাজ্যজুড়ে এর কী প্রভাব পড়তে পারে, তার পূর্বাভাস এখনও মেলেনি। জলভাগে এর অবস্থান যত বেশি স্থায়ী হবে, তত বেশি শক্তি বাড়াবে নিম্নচাপ। এর প্রভাবে প্রচুর জলীয় বাষ্প ঢুকবে রাজ্যে। যার ফলে উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি হতে পারে বিক্ষিপ্তভাবে। দক্ষিণবঙ্গের নয়টি জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টিপাত এবং ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। আজ বিকাল থেকে কালবৈশাখীর মতো পরিস্থিতি হতে পারে দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায়। এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের নাম শুনেই আতঙ্কের প্রহর গুনছে বঙ্গবাসী।

বিশ্ব আবহাওয়া দফতর সংস্থা সূত্রে খবর, এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরের সংযুক্ত দেশের আর্থিক ও সামাজিক সংগঠন সদস্যদের পক্ষ থেকে নাম করণ সংক্রান্ত বিষয়ে ঘূর্ণিঝড়টির নাম মোকা রাখার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নামটি রেখেছে ইয়েমেন। লোহিত সাগরের তীরে অবস্থিত ইয়েমেনে মোকা নামে একটি সমুদ্রবন্দর রয়েছে। এই বন্দর শহর থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে রফতানি করা হয় সেরা স্বাদের ইয়েমেনি কফি। এই বন্দরটির নামানুসারেই নামটি রাখা হয়েছে। বঙ্গোপসাগর এবং আরব সাগরে সৃষ্টি ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণের ক্ষেত্রে ১৩টি দেশের সুপারিশ লাগে। ভারত সহ এই দেশগুলির তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ, ইয়েমেন, কাতার, ইরান, মলদ্বীপ, মায়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, সৌদি আরব, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহি। নিয়ম অনুযায়ী, প্রতি বছর এই ১৩টি দেশ থেকে ঘূর্ণিঝড়ের নাম সুপারিশ করা হয়। এমন ১৬৯টি নাম জমা পড়ে প্রতি বছর। ইংরেজিতে নামের হরফ ধরে, ক্রমানুযায়ী পালা আসে প্রত্যেক দেশের।

এইরকম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button