lifestyle

Side Effects of Mobile In Children: আপনার সন্তান কী মোবাইলের সাথে দিনের বেশিটা সময় কাটাচ্ছে? এতে তার কী কী ক্ষতি হচ্ছে জানেন আপনি?

Side Effects of Mobile In Children: শিশুর হাতে মোবাইল তুলে দেওয়া উচিত না

হাইলাইটস:

•এখনকার দিনে বেশিরভাগ বাচ্চাই মোবাইলে ফোনকে সঙ্গী বানিয়ে নিয়েছে

•শিশুরা ছোটবেলা থেকে মোবাইলের প্রতি আসক্ত হলে হতে পারে তার মারাত্মক বিপদ

•তাই কিছু সাবধানতা অবলম্বন করা একান্তই জরুরি

Side Effects of Mobile In Children: তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে স্মার্টফোন আমাদের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় সঙ্গী হয়ে উঠেছে। মোবাইল ছাড়া যেন এক মুহূর্তও চলে না আমাদের। এর ফলে বেশিরভাগ শিশুও মোবাইলের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েছে। অনেক শিশু আছে যারা ঠিক মতো খেতে খায় না, তবে আধুনিক এই ডিভাইস তাদের হাতে তুলে দিলে অনায়াসে খেয়ে নেয়। তখন অভিভাবকরা মোবাইলে গেমস, গান, কার্টুন কিংবা মজার কোনও ভিডিও চালিয়ে দেন। এর ফলে যত দিন যাচ্ছে শিশুরা মোবাইলের প্রতি আরও বেশি আসক্ত পড়ছে।

তবে একটি বিষয় মাথায় রাখবেন, এই মোবাইল কিন্তু শিশুদের ভয়ঙ্কর বিপদ ডেকে আনতে পারে (Side Effects of Mobile In Children)। আপনিও তার হাতে মোবাইল তুলে দিয়ে কিন্তু তারই সর্বনাশ ডেকে আনছেন। তাই সময় থাকতে থাকতে যদি সাবধান না হন তবে সামনেই আপনার শিশুর ভয়ঙ্কর বিপদ আসতে চলেছে, এমনই আশঙ্কা করছেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা।

ছোটবেলা থেকে মোবাইলের প্রতি আসক্ত হতে কী কী বিপদ হতে পারে শিশুটির?

•মোবাইল থেকে নির্গত রেডিয়েশন বড়দের তুলনায় শিশুর বেশি ক্ষতি করে। বিশেষ করে তাদের মস্তিষ্ক, কান-সহ নানা অঙ্গের ক্ষতি করে। একটি বাচ্চার স্বাভাবিক ভাবে বেড়ে ওঠার সময়ে তা আরও বেশি ক্ষতিকর। মস্তিষ্ক এবং কানে নন-ম্যালিগন্যান্ট টিউমার হওয়ার ভয়ও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। আবার অন্যদিকে বিজ্ঞান বলছে, বাচ্চার মস্তিষ্কের ত্বক, কোষ এবং হাড় তুলনামূলক অনেক নরম ও পাতলা হওয়ার দরুন তারা প্রাপ্তবয়স্কের চেয়ে প্রায় ৬০% বেশি রেডিয়েশন গ্রহণ করে। WHO এই রেডিয়েশনকে ‘কারসিনোজেনিক’ আখ্যা দিয়েছে। সুতরাং বলা যায়, ফোনের ব্যবহার শিশুর ক্যান্সারের আশঙ্কাও বাড়িয়ে দেয়। তাছাড়া মোবাইলের অতিরিক্ত ব্যবহার বাচ্চার চোখেরও ক্ষতি করে।

•বাচ্চাদের খেলাধুলা করার সময় যদি তারা ফোনেই মধ্যে ডুবে থাকে, তবে স্বাভাবিক ভাবে তাদের বেড়ে ওঠা তো ব্যাহত হয়ই তার সাথে তাদের ওবেসিটি বা অতিরিক্ত মোটা হয়ে যাওয়ার প্রবণতাও বাড়তে পারে। এমনকী সারা দিন অতিরিক্ত মোবাইলের ব্যবহার বাচ্চার স্বাভাবিক ঘুমেরও ব্যাঘাত ঘটায়।

•বাচ্চারা বেশিক্ষণ মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত থাকলে অথবা সবসময় গেম খেললে তার মনের উপর একটি নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। ফলে তারা পড়াশোনায় ঠিক করে মন দিতে পারে না। এর ফলে তার পড়ারও ক্ষতি হয়, তার সাথে ভবিষ্যৎ জীবনও সংকটে পড়ার আশঙ্কা থেকে যায়।

•যে বয়স শিশুকে মানসিকভাবে সুস্থ, সুন্দর ও বড় করে তুলতে সাহায্য করে, সেই সময়েই যদি থাবা বসায় মোবাইল ফোন তবে বাচ্চার মানসিক সমস্যাও দেখা যেতে পারে। আজকাল শিশুদের মধ্যেও ডিপ্রেশনে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আধুনিক ডিভাইসটির সঙ্গে এত বেশি বন্ধুত্ব পাতিয়ে ফেলেছে যে রক্ত মাংসের মানুষের সঙ্গে তার সম্পর্ক তৈরি করার ইচ্ছাও চলে যাচ্ছে। এর প্রভাব তার আচরণে দেখতে পাবেন। সে কারও সঙ্গে মিশতে পারবে না। মোবাইল ছাড়া আর কাউকে চিনবে না। এর ফলে সে একটা সময় পরে একাকিত্বও বোধ করবে।

•মনস্তত্ত্ববিদরা মনে করেন, ফোনের প্রতি আসক্ত বাচ্চাটিকে ফোন না দিলে তার বিরক্তির ভাব দেখা দেয়। কথোপকথনেও অল্পেই ধৈর্য হারিয়ে বিরক্ত হয়ে পড়ে সে। এর ফলে ফোনে আটকে থাকা শিশুর সৌজন্যবোধ হারিয়ে যেতে পারে। এমনকী তাদের হাতে চলে আসে ইন্টারনেটের মতো ভয়ংকর অস্ত্র। আর এই অন্তর্জালের ফাঁদে পড়ে তারা ছোট বয়স থেকেই নানা ধরনের জটিলতায় জড়িয়ে পড়তে পারে। খারাপ কিছু শিখতে বা দেখতে পারে। তাই এই দিকটাতেও খেয়াল রাখতে হবে। নইলে সমস্যার শেষ থাকবে না।

শিশুদের মোবাইল ফোনের আসক্তি কমানোর কিছু উপায়:

•সাধারণত বড়োদের দেখেই বাচ্চারা শেখে। যে দুনিয়ায় প্রায় সব কিছুই ডিজিটাল হতে বসেছে, সেখানে আপনার বাচ্চার সুস্থতার জন্য ফোন ব্যবহারে সংযত হোন আপনিও। শিশুর সামনে মোবাইলে চ্যাট করা, গান শোনা, গেম খেলা ইত্যাদি এড়িয়ে চলুন। এগুলি দেখার ফলে শিশুদের মনে আরও বেশি করে কৌতূহল জাগতে থাকে।

•অবসর সময়ে বাচ্চাকে মোবাইলের বদলে গল্পের বইয়ের প্রতি বাচ্চার আগ্রহ বাড়ান। এখন পপ-আপ জাতীয় ত্রিমাত্রিক বইও পাওয়া যায়। এতে তার কল্পনাশক্তি বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া ড্রয়িং করান অথবা সাঁতার শেখান।

•যে সময়টায় শিশু ফোনের গেমিংয়ে আটকে, তাকে ওই সময়েই বাড়ির কাছাকাছি কোনও পার্কে বা খেলার মাঠে নিয়ে যান খেলাধূলার জন্য। আশেপাশের স্পোর্টস ক্লাবে ওর নাম নথিভুক্তও করাতে পারেন। প্রকৃতির সঙ্গে তার পরিচয় করান। এতেওম তার ফোনের আসক্তি কমবে।

•যে শিশু ইতিমধ্যেই ফোনে ডুবে আছে, তার কাছ থেকে এক ঝটকায় ফোন কেড়ে নিয়ে মূলস্রোতে ফেরানোর চেষ্টা না করাই ভালো। হিতে বিপরীত হতে পারে। তাই বাচ্চার দৈনিক ফোন ব্যবহারের সময়ে লাগাম টানুন। দিনে ১ ঘণ্টার বেশি সময় তাকে মোবাইল ব্যবহার করতে দেবেন না।

•মোবাইল ফোনের কোন কোন অ্যাপ আপনার সন্তান বেশি ব্যবহার করে, সেদিকে নজর রাখুন। ওই অ্যাপগুলি দ্রুত ফোন থেকে ডিলিট করে ফেলুন। তাতে কিছুটা হলেও ফোনের প্রতি শিশুটির আগ্রহ কমবে।

এইরকম জীবনধারা সম্পর্কিত প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button