Positive Parenting Tips: আদর্শ বাবা-মা হয়ে উঠার কিছু সহজ কৌশল অনুসরণ করুন
সন্তান তার বাবা-মার কাছ থেকেই নৈতিক শিক্ষা পেয়ে থাকে
হাইলাইটস:
•সন্তানের প্রতি বাবা-মার প্রচুর দায়িত্ব, তাদের মানুষ করতে বাবা-মারা নিজেদের কথা ভাবতেই ভুলে যান
•সন্তানের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে
•আদর্শ বাবা-মা হয়ে উঠার জন্য যেকোনও পরিস্থিতিতে সন্তানের পাশে থাকা উচিত।
Positive Parenting Tips: জীবনের সবচেয়ে সুন্দর মুহূর্ত হল বাবা-মা হওয়া। সেই সাথেই বাবা-মার কাঁধের উপর এসে পড়ে বিশাল দায়িত্ব। প্রত্যেক বাবা-মাই তাদের সন্তানদের যথাসম্ভব সর্বোত্তম উপায়ে লালন-পালন করার চেষ্টা করেন। কিন্তু বর্তমানে সন্তান লালন-পালনে অবশ্য নানান জটিলতা দেখা দিচ্ছে। এটাও সত্য যে, আদর্শ বাবা-মা হয়ে উঠার কোনও একক পদ্ধতি নেই। বিভিন্ন মানুষের জন্য ভালো অভিভাবকত্বের (Parenting) অর্থ বিভিন্ন জিনিস হতে পারে। যদিও বাবা-মার জন্য কোনও নির্দিষ্ট নির্দেশিকা বা নিয়ম নেই, এটি এমন একটি দক্ষতা যা সময়ের সাথে সাথে শেখা এবং বিকাশ করা যেতে পারে।
একজন আদর্শ বাবা-মা হওয়ার অর্থ হল আপনার সন্তানের সর্বোত্তম স্বার্থে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেষ্টা করা। যেমন – আপনার সন্তানকে ধৈর্য, ভালোবাসা, বোঝাপড়া, নির্দেশনা এবং লালন-পালনের মাধ্যমে বড় করা। অন্যদিকে শুধু ভালো বাবা-মা হয়েই নিজের দায়িত্ব পূরণ করলে হবে না, পাশাপাশি সন্তানের উপর নজরদারিও চালাতে হবে। অতএব বলা যায়, সন্তানকে ভালো আচরণ শেখাতে এবং সন্তানের সুখ এবং সাফল্য বৃদ্ধি করার জন্য এখানে কিছু সহজ টিপস দেওয়া হল। দেখে নিন সেগুলি –
সন্তানকে সঠিক শিক্ষা দিন:
সন্তানের মানসিক অবস্থা বুঝে তাদের চিন্তাভাবনার উন্নত করা এবং ভালো কাজ করার জন্য অনুপ্রাণিত করা একজন ভালো অভিভাবকদের লক্ষণ। আপনি যদি আপনার সন্তানকে একজন সম্মানজনক, সদয় এবং প্রেমময় ব্যক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে চান, তাহলে আপনার নিজেরও সম্মানজনক আচরণ প্রদর্শন করা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ছোট বাচ্চারা নৈতিক শিক্ষা বাবা-মার কাছ দিয়েই পেয়ে থাকে। আর ছোটবেলার এই শিক্ষা তাকে একজন মানুষে পরিণত করতে সাহায্য করে।
ইতিবাচক কথা বলুন:
প্রত্যেকটি অভিভাবকের উচিত তাদের সন্তানের সাথে সবসময় ইতিবাচক কথা বলা। শুধু সন্তানের চাহিদা ও প্রয়োজনীয়তা পূরণ করলেই হবে না, বরং জীবনে ভারসাম্যের গুরুত্বও তাকে সুন্দর করে বোঝাতে হবে। আবার সন্তানের মনের কথা বুঝে তাকে সামলানো নিঃসন্দেহে একটা বড় দায়িত্ব। আপনার প্রতিটি কথায় যাতে ভালোবাসা ও যত্নের ছোঁয়া থাকে, সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। আপনার ইতিবাচক ব্যবহারের তাকে বুঝিয়ে দিন আপনি ঠিক কতটা ভালোবাসেন তাকে। অনেক সময় দেখা যায়, ইতিবাচক লালনপালন বা পজিটিভ পেরেন্টিং আপনাকে আপনার সন্তানের কাছাকাছি এনে দেয়।
অন্য কারও সাথে তুলনা করবেন না:
অন্য কারও সাথে তুলনা করা খুবই খারাপ অভ্যাস। আপনি আপনার সন্তানকে অন্য কারও সাথে তুলনা করার দৌড়ে নাম লেখাতে যাবেন না। এতে তার মধ্যে নেতিবাচক লক্ষণ দেখা দিতে পারে। অনেক অভিভাবকরা আকাশ ছোঁয়া চাহিদা নিয়ে থাকেন। আপনি কিন্তু সেই দলে নাম দেবেন না। সবেতেই ‘প্রথম’ হতে হবে এই চাপ থেকে সন্তানকে দূরে রাখুন। বরং আপনার সন্তান যে বিষয়ে পারদর্শী, তার যেটা মন থেকে করতে ভালো লাগে, তাকে সেটাই করে দিন। জোর করে কিছু চাপিয়ে দিলে, অতিরিক্ত চাপ দিলে, প্রবল কড়া শাসনে রাখলে সন্তানের ক্ষতিই করবেন। অন্যের সঙ্গে তুলনা করবেন না নিজের সন্তানের। বরং তাকে সমর্থন করুন।
সন্তানের সাথে বন্ধুর মতো আচরণ করুন:
ছোট বাচ্চাদের মধ্যে আত্মসম্মান বোধ জাগিয়ে তোলার জন্য কখনই তাদের ছোট-বড় কথা বলা উচিত নয়। বরং বাচ্চার সঙ্গে বন্ধুর মতো মিশতে হবে। তাহলে মা-বাবাকে বাচ্চাও ভরসা করতে শিখবে। সন্তানকে বোঝান, গোটা দুনিয়া তার বিরুদ্ধে গেলেও যেকোনও পরিস্থিতিতে মা-বাবাকে সে পাশে পাবে। সেই সঙ্গে আপনাকেও বুঝে নিতে হবে তার পছন্দ-অপছন্দ। প্রয়োজনে অবশ্যই সন্তানকে শাসন করুন। কিন্তু বকাঝকা বা মারধর একেবারেই নয়। বাচ্চা ভুল করলে তাকে বুঝিয়ে বলুন কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল।
সন্তানের বয়ঃসন্ধিকালে তাকে একটু নজরে রাখুন:
অতিরিক্ত সতর্ক থাকুন সন্তানের বয়ঃসন্ধিকালে। মূলত এই সময় বেশিরভাগ ছেলে-মেয়েই অত্যন্ত স্পর্শকাতর এবং আবেগপ্রবণ থাকে। তাই তাদের সামলানো মুশকিল হয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে কোনও ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সন্তানকে বুঝিয়ে বলুন ঠিক, ভুলের কথা। সন্তানের সঙ্গে বন্ধুর মতো মিশে তার মনের কথা জানুন। সন্তানের আনন্দের পাশাপাশি ভাগ করে নিন তার দুঃখও। তাদের কথা মন দিয়ে শুনুন এবং বেশি করে সময় দিন। কোনও সমস্যার কথা বললে তা এড়িয়ে না গিয়ে সমাধানের চেষ্টা করুন। অবশ্যই ভুল দেখলে প্রয়োজনে শাসন করুন, কিন্তু তা যেন অমানবিক না হয়। সন্তানকে ঠিক, ভুল শেখানোর দায়িত্ব বাবা-মায়ের।
এইরকম জীবনধারা সম্পর্কিত প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।