lifestyle

রসগোল্লা খেতে তো আমরা প্রত্যেকেই ভালোবাসি! কিন্তু জানেন কী রসগোল্লা খাওয়ার উপকারিতাগুলি?

বাঙালির যেকোনও অনুষ্ঠান রসগোল্লা ছাড়া অসম্পূর্ণ

হাইলাইটস:

•রসগোল্লা মানেই বাঙালির আবেগ

•ডায়াবেটিস আক্রান্তদের বেশি রসগোল্লা খাওয়া উচিত না

•রসগোল্লার খাওয়ার উপকারিতাগুলি জেনে নেওয়া দরকার

ভারতের বাইরে বাঙালিরা যদি কলকাতাকে বিশ্বের দরবারে এককথায় তুলে ধরতে চায়, তবে শুধুমাত্র ‘রসগোল্লা’র নামটাই যথেষ্ট। বিশেষ করে বাঙালির বাঙালিয়ানার পরিচয় কিন্তু রসগোল্লার মাধ্যমে প্রকাশ পায়। নরম তুলতুলে রসে ডোবানো রসগোল্লা, মুখে দিলেই একেবারে মিলিয়ে যায়। রসগোল্লার নাম শুনলে জিভে জল চলে আসে বেশিরভাগ মিষ্টিপ্রেমীরই। কারণ সব মিষ্টির মধ্যে রসগোল্লার স্বাদ আলাদা। তবে, খেতে ভালো লাগলেও অনেকে শরীরের কথা ভেবে রসগোল্লা খেতে চান না। বিয়ে থেকে অন্নপ্রাশন যেকোনও অনুষ্ঠান রসগোল্লা দিয়ে উদযাপন করার অভ্যাস বাঙালির দীর্ঘদিনের। এই রসগোল্লা কেবল সুস্বাদুই নয়, আছে স্বাস্থ্য উপকারিতাও।

দেখে নিন স্বাস্থ্য উপকারিতাগুলি –

•রসগোল্লা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও দারুণ কার্যকরী। যাদের আমাশয়ের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত গরম রসগোল্লা খেতে পারেন। এতে দ্রুতই রোগ সেরে যাবে। তবে খুব বেশি খাবেন না। প্রতিদিন ১-২টি রসগোল্লা যথেষ্ট। এর বেশি খেলে তা শরীরের জন্য ভালো নাও হতে পারে। আবার গরম রসগোল্লা রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়িয়ে তোলে, এর ফলেও দেহের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণে থাকে। তার সাথেই সর্দি এবং কাশি কমাতেও সাহায্য করে।

•পুষ্টিবিদদের মতে, রসগোল্লা হাই প্রোটিন ডায়েট। যারা ওজন কমাতে চাইছেন তারা খাবারের তালিকায় রাখতে পারেন রসগোল্লা। মোনোস্যাচুরেটেড ও পলিস্যাচুরেটেড ফ্যাট ওজন কমাতে সাহায্য করে। রসগোল্লার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ডায়েটারি ফাইবার থাকে, যা হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। ফলে দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। তবে খুব বেশি খাওয়া চলবে না। কারণ যেকোনও খাবারই অতিরিক্ত খেলে তা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে।

•রসগোল্লা তৈরির প্রধান উপাদান হল ছানা। দুধ থেকে তৈরি ছানায় থাকে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড। যা গাঁট ও বাতের ব্যথা কমাতে দারুণ কার্যকরী। তাই যেকোনও যন্ত্রণা উপশমে গরম রসগোল্লার জুরি মেলা ভার। এছাড়া এতে থাকা ভিটামিন K এবং ম্যাগনেসিয়াম। হাড় শক্ত ও সুস্থ রাখতে এই দুই উপাদান অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তাই রসগোল্লা হাড় ভালো এবং হাড়ের ঘনত্ব ঠিক রাখতে সহায়তা করে।

•কিডনিতে পাথর জমতে দেয় না রসগোল্লা। এটি ইউরিনারি সিস্টেম এর কর্মক্ষমতাকে উন্নত করতে সাহায্য করে। যার ফলে কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়। প্রস্রাবের সময় যাদের জ্বলন হয় তাদের রসগোল্লা খাওয়া উচিত। তবে আপনার যদি ডায়াবেটিস থাকে বা এতে আক্রান্ত হওয়ার ভয় থাকে সেক্ষেত্রে রসগোল্লা খাওয়ার আগে একবার চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভালো।

•হার্টের যত্নে রসগোল্লায় ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকার ফলে এটি শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। ফলে হার্টের অসুখে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই কমে যায় এবং হার্ট ভালো থাকে।

•ক্যান্সার প্রতিরোধে গরম রসগোল্লাতে উচ্চমানের প্রোটিন থাকার ফলে ব্রেস্ট ক্যান্সার, প্রোস্টেট ক্যান্সার বা কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

•রসগোল্লায় থাকে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও প্রোটিন, যা হাড় ও দাঁতকে সুস্থ রাখে। এছাড়াও শরীরের বিভিন্ন ক্ষত রোধ করতে সাহায্য করে। এছাড়াও এতে থাকা ভিটামিন D দাঁতের ক্যাভিটি রোধে সহায়ক। এবং রসগোল্লায় ল্যাকটোসের পরিমাণ কম থাকায় দাঁত ক্ষতিকারক সুগারের হাত থেকেও রক্ষা পায়।

পরিশেষে বলা যায়, ডায়াবেটিসের সমস্যা আছে এমন মানুষজনদের খুব বেশি রসগোল্লা না খাওয়াই তাদের স্বাস্থ্যের জন্য মঙ্গলময়। প্রয়োজন মনে হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তবেই রসগোল্লা খাওয়া উচিত।

এইরকম স্বাস্থ্য এবং জীবনধারা সম্পর্কিত প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button