ভারতবর্ষের বুকে এমন কিছু জায়গা রয়েছে যেগুলি আপনাকে সুইজারল্যান্ডের স্বাদ উপভোগ করাবে
তুষারপাত দেখতে আমরা প্রত্যেকেই ভালোবাসি
ভারতবর্ষের মধ্যেই এমন অনেক জায়গা রয়েছে যেখানে শীতকালে তুষারপাত হয়। এই তুষারপাত দেখার মজাই আলাদা। ভ্রমণপ্রেমী মানুষরা এই তুষারপাত দেখতেই ছুটে যায় সেই সব জায়গায়। তুষারপাত দেখার সবচেয়ে উপযুক্ত সময় ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি। ভারতের ভূস্বর্গ কাশ্মীর থেকে উত্তরাখণ্ডের মুসৌরি এইসব জায়গা শীতকালে তুষারপাতে ঢেকে যায়। অনেক রাস্তাও তুষারপাতের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। আজ আমরা এখানে এমন কিছু জায়গার কথা বলেছি, যেখানে আপনি শীতকালে তুষারপাত দেখতে আসতে পারেন পরিবারের সকলকে নিয়ে। তুষারপাতবেষ্টিত জায়গাগুলি দেখে নিন-
গুলমার্গ, জম্মুকাশ্মীর:
জম্মু-কাশ্মীরের বারামুলা জেলার অন্তর্গত যা পাকিস্তান সীমান্ত থেকে মাত্র ৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত যা “তাজ অফ কাশ্মীর” নামেও পরিচিত। কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগর থেকে ৫২ কিলোমিটার দূরে এবং ৮৮২৫ ফুট উপরে এই হিল স্টেশনে গেলে দ্বিধা সৃষ্টি হবে এই ভেবে যে, এই স্থানটি গুলমার্গ নাকি সুইজারল্যান্ডের কোনো বরফ ঢাকা শহর। জম্মু ও কাশ্মীরের পীরপঞ্জাল রেঞ্জে অবস্থিত এই হিল স্টেশনে সারাবছর পর্যটকদের ভিড় লেগেই থাকে। কনকনে ঠান্ডার যদি আসল আনন্দ নিতে হয় তাহলে গুলমার্গই সেরা জায়গা। এখানে তুষারপাত দেখার পাশাপাশি স্নো স্পোর্টসের আনন্দও আপনি উপভোগ করতে পারবেন। তাই বলা যায় তুষারপাতের মজা নিতে শীতে আসুন গুলমার্গ।
মানালী, হিমাচল প্রদেশ:
মানালি বিয়াস নদীর তীরে অবস্থিত হিমাচল প্রদেশের একটি জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য। এটি শ্বাসরুদ্ধকর জলপ্রপাত, তুষার-ঢাকা পর্বতমালা এবং মনোরম উপত্যকাকে ধারণ করে। রাফটিং, ট্রেকিং, স্কিইং, জিপলাইনিং এবং প্যারাগ্লাইডিং এর মতো দুঃসাহসিক খেলা শহরের শান্ত পরিবেশে উত্তেজনা যোগায়। এছাড়াও, মানালি তার সমৃদ্ধ সংস্কৃতি এবং তীর্থস্থানগুলির জন্য বিখ্যাত। এখানে একটি স্মরণীয় ভ্রমণের জন্য মানালির সেরা কয়েকটি পর্যটন স্থান রয়েছে। শীতের ছুটিতে বেড়াতে যাওয়ার প্ল্যান থাকলে মানালী যেতে পারেন। এখানে আপনি অনেক কিছু করতে পারবেন। আর মানালী গিয়ে রোটাং পাস দেখতে কখনোই ভুলবেন না।
মুসৌরি, উত্তরাখণ্ড:
মুসৌরি ভারতে ভ্রমণের জন্য একটি আবশ্যক স্থান। উত্তরাখণ্ডের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভ্রমণ গন্তব্যগুলির মধ্যে একটি হওয়ায়, মুসৌরি ভারতের সেরা ভ্রমণ পথের তালিকায় নিজের জন্য একটি জায়গা তৈরি করেছে। মুসৌরিকে বলা হয় “পাহাড়ের রানি।” বিশেষত শীতের মরশুমে এই জায়গা স্বর্গের মতো সুন্দর দেখায়। এখানে দেখারও বেশকিছু জায়গা রয়েছে।
লেহ, লাদাখ:
লেহ, লাদাখ হল প্রত্যেকটি বাইকপ্রেমীর কাছে স্বপ্নের জায়গা। আপনি যদি এখানে ভারী তুষারপাত উপভোগ করতে চান তবে যেতে পারেন নুব্রা ভ্যালি এবং লে-এর প্যাংগং সো লেকে। এখানকার শান্তি স্তূপের অনুভূতিও আপনি নিতে পারেন। শীতকালে এখানে ভয়ঙ্কর তুষারপাত হয়, ফলে অনেক জায়গা বন্ধ থাকে।
তাওয়াং, অরুণাচল প্রদেশ:
তাওয়াং ভারতের সেরা পাহাড়ী শহরগুলির মধ্যে অন্যতম যা অরুণাচল প্রদেশে অবস্থিত। ১০২০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত তাওয়াং এমন এক শহর যার তুলনা ভারতের অন্য কোন পাহাড়ী শহরের সাথে চলে না। অদ্ভুত সুন্দর এই শহরের উত্তরে উত্তুঙ্গ পর্বতমালা আর দক্ষিণে গভীর কামেং নদী উপত্যকা। ভারতের অন্তর্গত হলেও ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে চীন যে ৬টি স্থানকে দক্ষিণ তিব্বতের অংশ হিসেবে ঘোষণা করে তার মধ্যে একটি হল তাওয়াং।বরফের চাদড়ে ঢাকা তাওয়াং বিশ্বের সবচেয়ে বড়ো বৌদ্ধমঠগুলির অন্যতম। মনোমুগ্ধকর প্রকৃতিক দৃশ্যের জন্য এই অঞ্চল পর্যটকদের কাছে খুবই পছন্দের গন্তব্য। এখানে কখনও কখনও তাপমাত্রা শূন্যের নিচেও চলে যায়। কারও কারও মতে ভারতের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর তুষারপাত দেখা যায় এখানেই। তাওয়াং যাওয়ার সবচেয়ে আদর্শ সময় হল ডিসেম্বর-জানুয়ারি। ফলে শীতে তুষারপাত দেখতে আসতে পারেন এখানে।