lifestyle

ব্যায়াম এবং সুষম খাদ্য একটি সুস্থ জীবনযাপনের চাবিকাঠি

আপনার খাদ্যতালিকায় কী কী অন্তর্ভুক্ত করা উচিত?

আজকালকার যুগে অনেক মানুষ নিজেকে ফিট রাখার জন্য খুব কঠোর জিম পদ্ধতি অনুসরণ করে, কিন্তু তারা প্রায়শই সুষম খাদ্যের কথা ভুলে যায়। সুস্থ থাকার জন্য ব্যায়াম এবং সুষম খাবার দুটোই জরুরি। একটি সুষম খাদ্য একটি স্বাস্থ্যকর জীবনধারার চাবিকাঠি। এটি আমাদের শরীরকে সঠিক পুষ্টি দেয় যা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয়। এটিতে বিভিন্ন ধরণের পুষ্টিকর খাবার যেমন গোটা শস্য, ফল, শাকসবজি ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। একটি সুষম খাদ্য আপনার শরীরকে অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টি সরবরাহ করে, যা শরীরের গঠন বজায় রাখা এবং বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয়। আপনি যদি স্বাস্থ্যকর খাবার না খান তবে শরীরচৰ্চা যথেষ্ট হবে না।

সঠিক খাদ্যতালিকা বনাম শরীরচৰ্চা:

এখনকার দিনের মানুষরা তাদের কাজের সময়সূচীতে এত বেশি ব্যস্ত যে তারা খাবারের জন্য সময় বের করতে পারে না। তারা স্বাস্থ্যকর খাবারের পরিবর্তে জাঙ্ক ফুড অথবা ফাস্ট ফুড গ্রহণে বেশি আগ্রহী, এটি দীর্ঘস্থায়ী রোগের প্রধান কারণ হয়ে ওঠে। এমন কিছু মানুষ আছে যারা একদম ফিট কিন্তু তারা সঠিক খাদ্যতালিকার পরিবর্তে বেশি ব্যায়াম করে।

ব্যায়াম করা আরও পুষ্টিকর খাবারের প্রয়োজনীয়তা বাড়ায়। আপনার শক্তির মাত্রা অপ্টিমাইজ করার জন্য আপনাকে একটি সঠিক খাদ্য গ্রহণ করা উচিত। ব্যায়ামের চেয়ে সঠিক খাদ্যতালিকা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আনন্দদায়ক এবং উপভোগ্য খাবার খাওয়া আমাদের একটি স্বাদ দেয় কিন্তু আমাদের শরীরের দরকার প্রয়োজনীয় পুষ্টি।

কেন আমাদের সুষম খাদ্যের প্রয়োজন?

সঠিক ডায়েট করার বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে কারণ এটি আমাদের শরীরকে শরীরের সিস্টেমে জ্বালানী দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত পুষ্টি সরবরাহ করে। প্রতিটি বয়সের ব্যক্তির জন্য একটি সুষম খাদ্য গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্যকর খাবার সুস্বাস্থ্যের জন্য অবদান রাখে এবং মানসিক কর্মক্ষমতাও বাড়ায়। জাঙ্ক ফুড খেলে আপনার ওজন বেশি হতে পারে আবার ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপের মতো মারাত্মক চিকিৎসা অবস্থার ঝুঁকি বাড়াতে পারে এবং কিছু ধরণের ক্যান্সারও হতে পারে। যখনই ওজন কমানোর কথা হয় তখনই মানুষ ডায়েটিং শুরু করে বা জিমের দিকে দৌড়ায় এবং ব্যায়াম করে কিন্তু তারা সঠিক খাবার খায় না। তারা মনে করে যে, ডায়েটিং হল অল্প পরিমাণে খাবার খাওয়া বা তারা নিয়মিত যে খাবার খেয়েছে তা হ্রাস করা। কিন্তু এটি সঠিক নয়, একটি দিনের জন্য একটি সঠিক খাদ্যতালিকায় একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ক্যালোরি রয়েছে যা শরীরের জন্য অপরিহার্য।

আমাদের প্রতিদিন কত ক্যালোরি খাওয়া উচিত?

ক্যালোরি হল শক্তির একক। খাবারে ক্যালোরির সংখ্যা হল সেই খাবারে সঞ্চিত শক্তির পরিমাণের পরিমাপ। শ্বাস-প্রশ্বাস থেকে হাঁটা বা যেকোনো শারীরিক কাজ করার জন্য আপনার শরীর ক্যালোরি ব্যবহার করে। প্রতিদিন একজনের ওজন বজায় রাখতে কমপক্ষে ২,০০০ ক্যালোরি গ্রহণ করা উচিত। একজন ব্যক্তির দৈনিক খাদ্য তাদের বয়স, লিঙ্গ এবং শারীরিক কার্যকলাপ স্তরের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে।

ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচার (USDA) নির্দেশিকাগুলির উপর ভিত্তি করে দৈনিক ক্যালোরি গ্রহণ:

•২ থেকে ৮ বছর বয়সী শিশুদের: ১,০০০ থেকে ১,৪০০ ক্যালোরি

•৯ থেকে ১৩ বছর বয়সী মেয়েদের: ১,৪০০ থেকে ১,৬০০ ক্যালোরি

•৯ থেকে ১৩ বছর বয়সী ছেলেদের: ১,৬০০ থেকে ২,০০০ ক্যালোরি

•১৪ থেকে ৩০ বছর বয়সী সক্রিয় মহিলাদের : ২,৪০০ ক্যালোরি

•১৪ থেকে ৩০ বছর বয়সী আসীন মহিলাদের: ১,৮০০ থেকে ২,০০০ ক্যালোরি

•১৪ থেকে ৩০ বছর বয়সী সক্রিয় পুরুষদের: ২,৮০০ থেকে ৩,২০০ ক্যালোরি

•১৪ থেকে ৩০ বছর বয়সী আসীন পুরুষদের: ২,০০০ থেকে ২,৬০০ ক্যালোরি

•৩০ বছরের বেশি বয়সী সক্রিয় পুরুষ এবং মহিলাদের: ২,০০ থেকে ৩,০০০ ক্যালোরি

•৩০ বছরের বেশি বয়সী আসীন পুরুষ এবং মহিলাদের: ১,৬০০ থেকে ২,৪০০ক্যালোরি

ব্যায়াম এবং খাদ্য উভয়ই সমান গুরুত্বপূর্ণ:

নিয়মিত ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্যকর খাবার দুটোই গুরুত্বপূর্ণ। শত শত ক্যালোরি খরচ করতে এক মিনিট সময় লাগতে পারে কিন্তু বার্ন হতে কয়েক ঘণ্টা সময় লাগে। আপনি হয়তো দেখেছেন, যারা ওজন কমিয়েছে বা নিজেদের ওজন বজায় রেখেছে তারা ব্যায়াম এবং সঠিক খাদ্যতালিকার মাধ্যমে সঠিক পরিমাণে ক্যালোরি, ভিটামিন, ভালো চর্বি, খনিজ এবং ক্যালসিয়াম গ্রহণ করে।

উপসংহার:

একটি সঠিক খাদ্যতালিকা আপনাকে সক্রিয় রাখতে ভালো পরিমাণে ক্যালোরি সরবরাহ করে এবং ব্যায়াম আপনার বিপাক বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এই ব্যস্ত জীবনধারার মাঝেও যারা জিমে যাওয়ার সময় পেতে পারে কিন্তু তারা সঠিক খাদ্য গ্রহণ করে না, কিন্তু দিনে যে ক্যালোরি গ্রহণ করা উচিত তা তাদের স্বাস্থ্যের উপরও প্রভাব ফেলে। ব্যায়াম প্রত্যেকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, এমনকি ওজন কমানোর জন্য আপনাকে ব্যায়ামের সাথে সঠিক খাদ্যতালিকাও বজায় রাখতে হবে। আপনি যদি ব্যায়াম করার সময় স্ন্যাকস খান এবং ওজন কমানোর জন্য কঠোর পরিশ্রম করেন তবে আপনি যে ফলাফল চেয়েছিলেন তা পাবেন না। প্রোটিন একটি অপরিহার্য পুষ্টি যা খাদ্যতালিকায় যোগ করা উচিত। প্রোটিন আপনার ওজন কমানোর গতি বাড়াতে পারে, আপনাকে শক্তিশালী এবং শারীরিকভাবে সক্রিয় করে তুলতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button