lifestyle

বার্ধক্যের প্রাথমিক লক্ষণগুলি কী জানেন? এই স্বাস্থ্যকর পানীয় দিয়ে আপনার ত্বকের চিকিৎসা সম্ভব তৎক্ষণাৎ!

এখানে একটি পুষ্টিকর পানীয় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে যা বার্ধক্যের প্রাথমিক লক্ষণগুলি কমাতে সক্ষম

বার্ধক্য একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া যা এড়ানো মানবজাতির পক্ষে সম্ভব না। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে, আমাদের এই ব্যস্ত জীবনধারার মধ্যে রয়েছে উদ্বেগ, চিন্তা,খারাপ খাদ্যাভ্যাস এবং একটি খারাপ রুটিন যা এই বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে বহুগুন বৃদ্ধি করছে। বিশ দশকের প্রথম দিকের লোকেরা আজকাল বার্ধক্য বা অকাল বার্ধক্যের প্রাথমিক লক্ষণগুলি দেখায় যেমন চুলের ধূসর হওয়া, ত্বকে বলিরেখা, শরীরের দুর্বলতা এবং শারীরিক ব্যথা, পিঠে ব্যথা এবং হাঁটুতে ব্যথা, ক্লান্তি ইত্যাদি। যদিও তাদের কোনো নীতিগত চিকিৎসা নেই, যা থেকে বোঝা যায় তারা অসুস্থ।

মানসিক চাপ হল বার্ধক্যজনিত রোগের একটি প্রধান কারণ। আমাদের মন এবং শরীর একে অপরের সাথে জড়িত এবং জর্জরিত, বাড়ির দৈনন্দিন সমস্যা, ব্যক্তিগত জীবনে সমস্যা, কর্মজীবনে সমস্যা, এই সমস্ত কিছু অবশ্যই মানসিক চাপের মাত্রা বৃদ্ধি করতে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। এই কারণে, এটির প্রভাব আপনার ত্বকের উপরেও পরে।

অতএব বলা যায়, এখানে এমন কিছু স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর পানীয় রয়েছে যা বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে ধীরে ধীরে কমিয়ে দেবে এবং আপনাকে পুনরুজ্জীবিত করতে সাহায্য করবে। এই পানীয়টি আপনার ত্বককে পুনরায় সতেজ করতে এবং আপনার বার্ধক্যের প্রাথমিক লক্ষণগুলির গতি ধীর করতে সাহায্য করবে।

আমলকীর উপকারিতা:

এই পানীয়টি হল আমলা জাতীয় একটি ভেষজ ফল। আমলার রয়েছে অসাধারণ উপকারিতা। এটি আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা, ত্বক মসৃণ রাখতে এবং ব্রণ থেকে মুক্ত রাখতে সাহায্য করবে। আমলকী সাধারণত শুষ্ক ত্বক এবং বলিরেখা প্রতিরোধে সাহায্য করে কারণ এতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন C রয়েছে।

ভিটামিন C কোলাজেনের বিকাশেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কোলাজেন ত্বক ও চুলের উন্নতি করে, চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

ফোর্টিস-এসকর্টস হাসপাতালের চিফ ক্লিনিকাল নিউট্রিশনিস্ট ডাঃ রূপালী দত্তের মতে, “ভিটামিন C একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আপনাকে ফ্রি র‌্যাডিক্যালের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে। এটি বার্ধক্যের প্রাথমিক লক্ষণগুলিকে ধীর করতে সাহায্য করে এবং কোলাজেন উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় তাই চুলকে সুস্থ রাখতে, আপনার ত্বককে সতেজ রাখতে এবং রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।”

উপাদানসমূহ:

১.আমলকী ২০০ গ্রাম

২. খেজুর অথবা খেজুরের গুড় ৩০০ গ্রাম

৩. শুকনো আদা গুঁড়ো ৩ গ্রাম

৪. এলাচ ও হলুদ ৩ গ্রাম

প্রস্তুতির পদ্ধতি:

আগে থেকে আমলকীকে ভালো কড়াতে নেড়ে একটি আমলা ডি-সিড তৈরী করুন। এই বীজগুলিকে নরম করতে মিক্সারে রাখুন। এবার তাতে সামান্য জল মিশিয়ে ছেঁকে রস বের করে নিন। আবার, প্রায় ১৫০ মিলিগ্রাম জল যোগ করুন এবং আরও রস বের করার জন্য এটি ভালো করে পিষে নিন।

খেজুরের গুড়কে ছোট ছোট করে কয়েকটি টুকরো করে তাতে ১০০ মিলিগ্রাম জল দিয়ে সেদ্ধ করতে করে নিন যতক্ষণ না এটি একটি সিরাপে পরিণত হয়। এই সিরাপটি আমলকীর রস এবং বাকি উপাদানগুলির সাথে মেশান। ভালো করে নাড়ুন এবং চটজলদি পানীয় প্রস্তুত।

এই পানীয়টির বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে। এটি একটি তাৎক্ষণিক শক্তির বুস্টার হিসাবে কাজ করে কারণ এটি আপনাকে এতবেশি শক্তি দেয় যে আপনি সুস্থ বোধ করেন। এটি ভিটামিন C, ক্যালসিয়াম, B-কমপ্লেক্স এবং পটাসিয়ামের কল্যাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং বার্ধক্যের প্রাথমিক লক্ষণগুলিকে অনেকঅংশে কমিয়ে দেয়। যখন মানুষ আলসার, অ্যাসিডিটি এবং বুকজ্বালায় ভোগে তখন তারা এই পানীয়ের থেকে উপকৃত হয়েছে।

বিশেষত মনে রাখবেন: ডায়াবেটিস রোগীদের গুড়ের শরবত খাওয়া একদমই স্বাস্থ্যকর না। 

তাই, বার্ধক্যের প্রাথমিক লক্ষণগুলি থেকে মুক্তি পেতে এই স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিসমৃদ্ধ পানীয়টি ব্যবহার করে দেখুন। ফলস্বরূপ আপনি অনেক অংশে উপকৃত হবেন। আবার, শুধুমাত্র একটি স্বাস্থ্যকর পানীয়ই যথেষ্ট নয়, আপনার জীবনেরও একটি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি থাকা একান্তই দরকার।

মানসিক চাপ সম্বন্ধে সচেতন হন। আপনি প্রত্যহ সকালে হাঁটতে যান। প্রকৃতির সাথে জড়িয়ে থাকুন যা আপনাকে নিশ্চিন্ত এবং সুস্থ রাখবে সারাজীবন। বিশেষ করে চেষ্টা করুন এবং দেখুন আপনি নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খাওয়া সম্বন্ধে সচেতন কী না। খাবারগুলি হতে হবে স্বাস্থ্যকর, পুষ্টিকর এবং গুণমানবিশিষ্ট।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, আপনি প্রানভরে হাসুন এবং আপনার সাথে অন্যদেরও হাসান, আপনি যখন হাসবেন, তখন অনেক বলিরেখা কমে যাবে এবং আপনি আপনার জীবনকে সম্পূর্ণরূপে উপভোগ করবেন। সুতরাং, আপনার স্বাস্থ্যের যত্ন নিন। স্বাস্থ্যকর খাবারের সাথে একটি স্বাস্থ্যকর রুটিন তৈরী করুন এবং একটি স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button