lifestyle

একগুঁয়ে এবং জেদী বাচ্চাদের সাথে মোকাবিলা করার টিপসগুলি জেনে রাখুন

প্রায় প্রতিটি শিশুই কোনও না কোনও কারণে জেদ করে

হাইলাইটস:

•এখনকার বহু বাচ্চাই জেদী এবং একগুঁয়ে হয়

•বাচ্চাদের এইসব জেদী মনোভাবের পিছনেও যথেষ্ট কারণ থাকে

•এইরকম বাচ্চাদের মোকাবিলা করার জন্য এখানে কিছু টিপস দেওয়া হয়েছে

আজকাল অনেক বাচ্চাই অত্যন্ত জেদী হয়। জেদ এবং একগুঁয়েমি এমন একটি বৈশিষ্ট্য হয়ে উঠতে পারে যেটি হয়ত আপনার সন্তান তার শৈশব থেকেই প্রদর্শিত করতে পারে। এ ব্যাপারে আপনি স্বাচ্ছন্দ্যে থাকতে পারেন এই জন্যই যে এ ব্যাপারে আপনিই একা নন, এমন অনেক অভিভাবকই আছেন যারা একই পরিস্থিতির ভুক্তভোগী। বাচ্চাদের জেদ প্রত্যেক মা-বাবার কাছেই চিন্তার বিষয়। অনেক সময় বাচ্চাদের জেদের কারণে অভিভাবকদের বিব্রতও হতে হয়। তাদের নানাভাবে বুঝিয়েও সাফল্য লাভ করা যায় না। তারা যেটা চায়, সেটা যদি আপনি অভিভাবক হিসাবে না দেন তবে একেবারে নাছোড়বান্দা করে ছেড়ে দেয়।

বাচ্চারা কেন জেদী হয়ে যায়?

বড়দের মতোই শিশুদেরও হতাশা, ক্ষোভ বা চাহিদা থাকে। আর সেগুলি প্রকাশ করে এই জেদের মাধ্যমে। আমরা বড়রা যেভাবে নিজেদের এই অনুভুতিগুলি সম্বরণ করি যাকে সেল্ফ কন্ট্রোল বলে বাচ্চাদের ক্ষেত্রে তো তা হয় না। আার তার ফলে তাদের আচরণে বাহ্যিক প্রকাশ ঘটে এইভাবে।

জেদী বাচ্চাদের সাথে মোকাবিলা করার কিছু টিপসগুলি এখানে বলা হল:

বাচ্চাকে সর্বদা ব্যস্ত রাখুন:

আপনার বাচ্চা যদি একাকিত্ব অনুভব করে তাহলে সে তার বিরক্তি এবং খিটখিটে মেজাজ কোনওভাবে বাইরে প্রকাশ করবেই এবং কোনও কারণ ছাড়াই কান্নাকাটি, চ্যাঁচামেচি করে সকলকে নাজেহাল করে ছাড়বে। তাই বাচ্চাকে সর্বদা ব্যস্ত রাখুন। নানারকম মজাদার অ্যাক্টিভিটি করান বাচ্চাকে, অন্য বাচ্চাদের সঙ্গে খেলা করার সুযোগ করে দিন। এতে বাচ্চার জেদ অনেকটাই কন্ট্রোল করা যাবে।

নিজেকে শান্ত রাখুন:

বাচ্চার জেদ সামলানোর প্রাথমিক উপায় হল অভিভাবকদের মনকে সবসময় শান্ত রাখতে হবে। প্রথম থেকেই যদি সন্তানদের জেদে লাগাম দেওয়া যায় তাহলে আপনার শিশুর বহু সমস্যার সমাধান হয় যাবে। কেউ কেউ জেদ সামলানোর জন্য যা চাইছে তা দিয়ে দেন এতে সমস্যা আরও বেড়ে যায়। বরং আপনি যদি নিজেকে শান্ত রেখে শিশুকে সামলান তাহলে সমস্যা অনেকটাই মিটে যেতে পারে।

জেদের কারণ বোঝার চেষ্টা করুন:

বাচ্চা যখন কিছু নিয়ে জেদ করবে এবং সেটা না পাওয়া বা না হওয়া পর্যন্ত জেদ দেখাতেই থাকবে, তৎক্ষণাৎ চেষ্টা করুন যে, বাচ্চাটির কথা না শোনার পিছনে ঠিক কী কারণ রয়েছে। যদি জেদের মাত্রা বাড়াবাড়ির পর্যায় চলে যায় তাহলে সেই মুহূর্তে বাচ্চাকে কিছু না বলাই বুদ্ধিমানের কাজ। বাচ্চা কোনও জিনিস চাওয়া নিয়ে জেদ করতে থাকলে মুখের উপর ‘না’ বলার বদলে কেন জিনিসটি আপনি দিতে চান না তার সঠিক কারণ বিস্তারিত ভাবে বাচ্চাকে বুঝিয়ে বলুন। এতে বাচ্চা কারণটি সম্পর্কে জানতেও পারবে এবং কিছুটা বোঝার চেষ্টাও করবে।

তার সাথে বিশেষ তর্ক-বিতর্ক করবেন না:

জেদী ও একগুঁয়ে বাচ্চারা সর্বদাই একটি যুক্তির মুখোমুখি হয়ে সেটির মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত থাকে। সুতরাং তাদের সেই সুযোগটি দেবেন না। তার পরিবর্তে আপনার সন্তানের যা কিছু বলার আছে তা শোনার দিকে মনোযোগ দিন এবং তা যুক্তি-তর্কের পরিবর্তে কথোপকথনে পরিণত করুন। যখন আপনি তাকে এটি দেখান যে, আপনি তার বক্তব্যগুলি শোনার জন্য প্রস্তুত তখন এটিই আবার তাদের শোনার অভ্যাসকে আরও বাড়িয়ে তুলবে সম্ভবত আপনি তাদের যা কিছু বলতে চান।

বাড়িতে শান্তি বজায় রাখুন:

আপনার বাড়ির পরিস্থিতিকে এমন রাখার চেষ্টা করুন যেখানে আপনার সন্তান সব সময় আনন্দে, শান্তিতে, স্বাচ্ছন্দ্যে এবং নিরাপদে থাকবে। একজন অভিভাবক হিসাবে আপনি নিজে বাড়ির সকলের সাথে নম্র হন, বিশেষ করে আপনার জীবনসঙ্গীর সাথে কারণ বাচ্চারা যা দেখে তাই রপ্ত করে নেয়। তারা যা দেখে সেগুলিকে অনুরূপভাবে তারা অনুকরণ করার চেষ্টা করে। সুতরাং আপনার শান্তি বজায় রাখাটা এবং ঝগড়া-ঝামেলার পাশাপাশি শিশুর সামনে অপমান করার প্রবণতাগুলিকেও এড়িয়ে চলা অপরিহার্য। তবেই আপনার শিশু মানুষের মতো মানুষ হবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, তিন থেকে সাত বছরের বাচ্চাদের মধ্যে জেদ বা একগুঁয়ে মনোভাব সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। এই সময়ে যদি সঠিকভাবে শিশুদের চালনা করা না যায় তাহলে আগামী দিনে অনেক সমস্যার সন্মুখীন হতে হবে। বিশেষ করে তার মধ্যে নেতিবাচক গুনগুলি বেড়ে যায়। যা একদমই তার এবং তার পরিবারের জন্য স্বাস্থ্যকর নয়। তাই অভিভাবকদের সুবিধার জন্য উপরিউক্ত এই টিপসগুলি দেওয়া হল।

এইরকম জীবনধারা সম্পর্কিত প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button