health

Miscarriage: গর্ভাবস্থায় সামান্য অসাবধানতাতেও থেকে যায় মিসক্যারেজের ঝুঁকি, তাই প্রথম থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলুন

Miscarriage: মা হওয়া হল নারীত্বের অহংকার

হাইলাইটস:

•মা হওয়া সে এক অন্যরকম অনুভূতি

•একজন নারী হয়ে জন্ম নেওয়ার অহংকার হল মাতৃত্ব

•কিন্তু এখনকার দিনে সামান্য অসাবধানতাতেও মিসক্যারেজের ঝুঁকি থেকেই যায়

Miscarriage: মিসক্যারেজ বা গর্ভপাতের ঘটনা আগের তুলনায় কিন্তু অনেকখানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, শিশু পরিপূর্ণ হয়ে ওঠার আগেই মিসক্যারেজ (Miscarriage) বা গর্ভপাত হয়ে যাওয়া বিশ্বে খুব সাধারণ একটি ঘটনা হয়ে উঠেছে। প্রতি ১০০ জন গর্ভবতী নারীর মধ্যে ১০-১৫ শতাংশ ক্ষেত্রে গর্ভপাতের ঘটনা ঘটে। সাধারণত গর্ভাবস্থার ২৮ সপ্তাহের আগে যদি মাতৃজঠরেই শিশুর মৃত্যু হয় তাহলে সেই ঘটনাকে মিসক্যারেজ বা গর্ভপাত বলা হয়। মাতৃত্ব এক অনন্য অনুভূতি, নারীত্বের অহংকার। সন্তান গর্ভে আসার পরে যদি কোনও কারণে মিসক্যারেজ বা গর্ভপাত হয়ে যায়, তা বয়ে নিয়ে আসা যন্ত্রণা এবং হতাশা।

আইনতভাবে গর্ভপাত নিষিদ্ধ। এমনকী সব সময় গর্ভপাতকে যে সমাজ ভাল চোখে দেখে এমনটাও কিন্তু নয়। কারণ এই গর্ভপাত ঘিয়ে অনেক রকম মিথ প্রচলিত রয়েছে। এখনও গর্ভপাত হলে কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে মা-কেই দায়ী করা হয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে নিজেদের ছোট ছোট ভুলে মিসক্যারেজের আশঙ্কা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পায়। আবার কিছু কিছু মিসক্যারেজ জেনেটিক কারণেও ঘটে। ভ্রূণ গর্ভস্থ হওয়ার পর মায়ের খেয়াল রাখা ভীষণই জরুরি। গর্ভাবস্থায় নিয়মিত ভাবে শরীরের যত্ন না নিলে, স্বাস্থ্যকর খাওয়া-দাওয়া, শরীরচর্চা না হলে এবং ধূমপান, মদ্যপানের অভ্যাস থাকলে কিন্তু সেখান থেকে গর্ভপাতের সম্ভাবনা থাকে। তাই ভ্রূণ গর্ভস্থ হওয়ার হওয়ার সাথে সাথেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

গর্ভাবস্থায় কী কী সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে তা স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী নিম্নে আলোচনা করা হল –

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে:

গর্ভাবস্থায় আপনাকে শরীরের ওজন ঠিক রাখতে হবে। ওজন বেড়ে গেলেই মুশকিল। তখনই প্রেগন্যান্সির ঝুঁকি বাড়ে, এমনকি মিসক্যারেজের আশঙ্কাও তৈরি হয়। গর্ভাবস্থায় যে মায়েদের BMI ৩৫-এর উপরে তারা প্রথম থেকেই সচেতন হয়ে যান। আর সবসময় চেষ্টা করুন BMI ২৫-এর ভিতর নিয়ে আসার। তাই যে করেই হোক হবু মায়েদের যে করেই হোক ওজন নিয়ন্ত্রণে আনতেই হবে। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। তবেই গর্ভাবস্থায় মিসক্যারেজের ঝুঁকি থেকে নিজেকে বাঁচানো সম্ভব।

আগে থেকে কোনও রোগ থাকলে, সাবধান:

অনেক মায়েরাই আগে থেকেই কোনও ক্রনিক অসুখে আক্রান্ত থাকেন। যেমন – ডায়াবেটিস, হাই ব্লাড প্রেশার, ডিসলিপিডিমিয়া এবং থাইরয়েড ইত্যাদি। তবে কনসিভ করার আগেই এই ক্রনিক রোগগুলিকে অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। কারণ এই রোগগুলি শরীরে আগে থেকে থাকলে গর্ভাবস্থায় মিসক্যারেজের সম্ভাবনা থাকে। তাই আগে এই রোগগুলির চিকিৎসা প্রয়োজন। একবার যদি এই ক্রনিক অসুখগুলি নিয়ন্ত্রণে চলে আসে তারপর আপনি অবশ্যই খুশির সংবাদ সকলকে শোনাতে পারেন। আপনার মাতৃত্বে আর কোনও বাধা আসবে না।

হাই ইমপ্যাক্ট এক্সারসাইজ করা থেকে বিরত থাকুন:

স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, গর্ভাবস্থায় হবু মায়েদের বিশেষ করে এই সময় কোনও ভারী বা জটিল এক্সারসাইজ করা উচিত নয়। কারণ এতে মিসক্যারেজের আশঙ্কা বহুগুন বৃদ্ধি পায়। হবু মায়েরা যত বেশি এইরকম এক্সারসাইজ থেকে নিজেকে বিরত রাখবেন তিনি এবং ভ্রূণও সুস্থ থাকবে। এই সময় চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী হালকা এক্সারসাইজ করুন। আপনি যোগব্যায়াম করতে পারেন। এতে শরীর চাঙ্গা থাকবে এবং আপনি এবং আপনার গর্ভে থাকা সন্তানও সুস্থ থাকবে।

বারবার মিসক্যারেজের ইতিহাস:

বারবার মিসক্যারেজের ইতিহাস থাকলে আপনাকে প্রথম থেকেই অতি সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। বিশেষ করে যাদের এর আগে ২ বারের বেশি মিসক্যারেজ হয়েছে তারা কনসিভ করার আগেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। নিজে থেকে কিছু করতে যাবেন না, বরং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ীই পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন। অনেকেই মধ্যেই এই লক্ষণ দেখা দেয় যে, তাদের অত্যধিক মিসক্যারেজের ফলে গর্ভে সন্তান ধারণ করার সেই ক্ষমতাটাই আর নেই। সেক্ষেত্রে আধুনিক চিকিৎসাশাস্ত্র অনেক বেশি উন্নত হয়ে গেছে। এখন আইভিএফ-এর পরামর্শ দেওয়া হয়। এই অত্যাধুনিক পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে প্রায় অনেকেই এখন মা হওয়ার স্বাদ পাচ্ছেন।

অনুন্নত জীবনযাত্রা: 

গর্ভাবস্থায় আপনাকে সবার প্রথমে যা করতে হবে, তা হল জীবনযাত্রা মানকে উন্নত করা। কারণ অনেকেই আছেন যারা গর্ভাবস্থাতে অনুন্নত জীবনযাত্রাকে সঙ্গী করে চলেন। তারা ধূমপান, মদ্যপান ছাড়াও অতিরিক্ত তেল-ঝাল-মশলা জাতীয় খাবার খান। বিশেষ করে বাইরের জাঙ্ক ফুড। এর ফলে হতে পারে মিসক্যারেজ। তাই তাই গর্ভপাত রুখতে ধূমপান, মদ্যপান কিন্তু একেবারেই এড়িয়ে চলতে হবে। সেই সঙ্গে কফিও যতটা সম্ভব কম খাওয়াই কিন্তু ভালো। সুষম খাবার খেতে হবে, বাইরের জাঙ্ক ফুডকে বর্জন করতে হবে। রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়তে হবে।

সুতরাং বলা যায়, এই গাইডলাইনগুলি যদি সঠিকভাবে মেনে চলেন তবে অনায়াসে সুস্থ মাতৃত্বের স্বাদ পাবেন আপনিও। আর অবশ্যই কোনওরকম কোনও সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকের শরণপন্ন হতে ভুলবেন না।

এইরকম স্বাস্থ্য এবং জীবনধারা সম্পর্কিত প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button