health

শীতকালে সাইনাস রোগ বড়ো অসুবিধায় ফেলে মানুষকে! এই রোগের লক্ষণ, ঘরোয়া চিকিৎসা পদ্ধতি জেনে নিন

শীতকাল সাইনাস আক্রান্ত রোগীদের জন্য ভালো নাও হতে পারে

প্রথমেই বলা যায় যে, সাইনাস কোনও রোগই নয়, সাইনাস হল আমাদের মাথায় অবস্থিত একটি প্রকোষ্ঠ, যার কাজ ভেন্টিলেশনকে ঠিক রাখা। সেই ভেন্টিলেশনের কাজে বিঘ্ন ঘটার ফলে যে সমস্যা হয় তাকেই আমরা চলতি ভাষায়  ‘সাইনাস’ বলি। আর চিকিৎসকরা বলেন ‘সাইনোসাইটিস’। এই প্রকোষ্ঠগুলির ঝিল্লিপর্দায় বায়ু চলাচল স্বাভাবিক না থাকলে অথবা মিউকাস জমলে প্রবল প্রদাহ হয়। ফলে সাইনাস অঞ্চলে খুব ব্যথা অনুভূত হয়। শীতকালে এটি খুব ভয়াবহ রূপ নেয়। তখন দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

সাধারণত সাইনাসের সমস্যা ভাইরাসের কারণে হয়। এক্ষেত্রে নানা ভাইরাল ইনফেকশন থাকতে পারে নেপথ্যে। এছাড়াও মাথায় রাখতে হবে যে নানা ব্যাকটেরিয়াও এই অসুখের পিছনে থাকে। আবার অনেক ক্ষেত্রে অ্যালার্জি থেকে এই সমস্যা হয়। ডাস্ট, পোলেন অ্যালার্জি এই সমস্যা তৈরি করতে পারে। আবার অনেকে সাইনাসকে মাইগ্রেন ভাবেন। যদিও মাইগ্রেন সম্পূর্ণ আলাদা অসুখ।

সাইনাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে যে লক্ষণগুলি দেখা যায়, সেগুলি হল:

  • জ্বর
  • মাথা ব্যথা
  • কাশি, যা রাতের দিকে আরও খারাপ হয়।
  • কপাল ব্যথা (দপদপ করে)
  • দাঁতে ব্যথা
  • নাকের বন্ধ হয়
  • সর্দি বসতে পারে বুকে
  • নাক দিয়ে জল গড়াতে পারে
  • স্বাদ এবং গন্ধের অনুভূতির হ্রাস
  • নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ

অন্যান্য লক্ষণগুলি হল:

  • বমি বমি ভাব
  • বুকে মাঝারি থেকে গুরুতর অস্বস্তি
  • অত্যধিক ক্লান্তি বা অবসাদের একটা অনুভূতি
  • ক্ষুধা হ্রাস
  • কান ব্যথা(কটকট করা)

চিকিৎসা পদ্ধতি কী?

একটা ভালো গুণমানসম্পন্ন জীবনযাপনের জন্য সাই নাসের সঠিক চিকিৎসা গুরুত্বপূর্ণ। চিকিৎসা পদ্ধতিগুলি হল:

অ্যান্টিহিস্টামিনিক ড্রাগস: এগুলি সাধারণত অ্যালার্জিগত প্রতিক্রিয়ার উপসর্গগুলির চিকিৎসায় সাহায্য করে। এগুলি সাইনাসগুলির এবং নাসিকাগত গহ্বরের প্রদাহ প্রতিরোধ করে।

নেজাল স্যালাইন ইরিগেশনস: আপনার নাসিকাগত পথগুলি বিশুদ্ধ অথবা লবণাক্ত জল ব্যবহার করে ধুয়ে ফেলুন এবং ঘন শ্লেষ্মা ক্ষরণ সাফ করে ফেলুন।

নেজাল ডিকঞ্জেস্ট্যান্ট স্প্রে: এগুলি ফলদায়ক হতে পারে, যদি তিন থেকে চার দিনের একটা অল্প সময়ের জন্য ব্যবহার করা হয়। সাইনাসগুলি থেকে জমা তরল পদার্থ নিষ্কাশিত করতে এগুলি সাহায্য করে। এগুলির দীর্ঘ-মেয়াদী ব্যবহার নির্ভরতা সৃষ্টি করতে পারে যেক্ষেত্রে যদি ডিকঞ্জেস্ট্যান্ট ব্যবহার না করা হয় নাসিকাগত পথগুলি ফোলা এবং শ্লেষ্মার কারণে বন্ধ হয়ে যাবে।

টপিক্যাল নেজাল কর্টিকোস্টেরয়েডস: এগুলি প্রদাহ চিকিৎসা করতে ব্যবহার করা হয়। এই ওষুধগুলির স্বাভাবিক ডোজ দীর্ঘস্থায়ী সময়ের জন্য কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কিংবা আসক্তি ছাড়া ব্যবহার করা যেতে পারে।

অস্ত্রোপচার : যখন সমস্ত ওষুধ প্রয়োগ ব্যর্থ হয়ে যায় তখন চিকিৎসার সর্বশেষ বিকল্প হল অস্ত্রোপচার। নাকের ভিতরের পর্দাতে ত্রুটি সংশোধন, নাকের অস্বাভাবিক টিস্যু বৃদ্ধিগুলির অপসারণ, এবং বন্ধ পথগুলি খুলে দিতে অস্ত্রোপচার সাহায্য করতে পারে।

যে নিয়মগুলি মেনে চলতে হবে সেগুলি হল:

  • প্রচুর পরিমানে বিশ্রাম নিতে হবে।
  • প্রচুর পরিমানে জল খেতে হবে।
  • ধূমপান এড়িয়ে চলতে হবে।
  • ভাপ (গরম জলের বাষ্প শ্বাস) নিঃশ্বাসের সাথে টেনে নিতে হবে।
  • খাদ্যতালিকাতে পুষ্টিকর খাবার রাখতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button