ভিটামিন D-এর অভাবে শরীরে কী কী ক্ষতি হতে পারে দেখে নিন
শরীরের জন্য অপরিহার্য হল ভিটামিন D
শীতকালে দেহে ভিটামিন D-র ঘাটতি দেখা দিতে পারে। এই সময় দেহে ক্যালশিয়ামের বিপাক যথাযথ বজায় রাখার জন্য প্রতিদিন ১০-১৫ মিনিট সরাসরি সূর্যালোক প্রয়োজন। কারণ ভিটামিন D-এর প্রধান প্রাকৃতিক উৎস হলো সূর্যের আলো।
ভিটামিন D শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। মানসিক সুস্থতার জন্যও এটি খুবই জরুরি। এই ভিটামিনের কাজ হল অন্ত্র থেকে ক্যালসিয়াম শোষণ করা। এর পাশাপাশি এটি আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম ও ফসফরাসকেও দ্রবীভূত করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং শারীরিক অবস্থার উন্নতি ঘটাতে ভিটামিন D প্রয়োজনীয়তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।
শরীরের জন্য অপরিহার্য ভিটামিন D শরীরের অভ্যন্তরেই উৎপন্ন হয়। এটি শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করে, বিভিন্ন সংক্রমণ এবং রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে। এমনকি হাড় ও দাঁতের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও বিকাশকেও সহজ করে তোলে এই ভিটামিন। এটি শরীরের পেশিকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। শরীরের দুর্বল পেশিকে সবল করতে প্রাচীন যুগেও শরীরে সূর্যালোক লাগানোর প্রথা ছিল যা আসলে দেহে ভিটামিন D-ই সরবরাহ করে।
ভিটামিন D-এর ঘাটতি মেটাতে হলে মাশরুম, ডিম, কমলালেবুর রস, পনির, চর্বিযুক্ত মাছ যেমন স্যামন, ম্যাকেরেল, দুগ্ধজাত খাবার যেমন দই, দুধ, সয়া জুস ইত্যাদি খান।
ভিটামিন D-এর অভারে যে রোগগুলি হয়-
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে:
চিকিৎসকদের মতে, ভিটামিন D এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কিত। ভিটামিন D রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে, তাই এর ঘাটতি দেখা দিলে শরীরে বিভিন্ন রোগজীবাণু বাসা বাঁধে। যারা ঘন ঘন অসুস্থ হয়ে পড়েন তারা ঠিক করে জানেনই না যে, তাদের শরীরে ভিটামিন D-এর ঘাটতি রয়েছে। ফলে ভিটামিন D সমৃদ্ধ খাবার খান এবং সুস্থ থাকুন।
ক্লান্তি ভাব লাগে:
বার বার কোনও কারণ ছাড়াই আপনি যদি ক্লান্ত বোধ করেন তাহলে বুঝবেন আপনার শরীরে ভিটামিন D-এর অভাব রয়েছে। ভিটামিন D-এর অভাব আপনার দেহের শক্তির স্তরের পাশাপাশি নতুন কাজের প্রতি আপনার মেজাজকেও প্রভাবিত করতে পারে। তাই শরীরে ভিটামিন D-এর ঘাটতি দেখা দেওয়ার আগেই সতর্ক হন।
মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব পড়ে:
ক্রমাগত ক্লান্তি আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। ফলে বিষণ্ণতার সমস্যা দেখা দেয়। বিষণ্নতা হল ভিটামিন D-এর অভাবের আরেকটি সম্ভাব্য লক্ষণ। তাই এইরকম সমস্যা দেখা দিলে ভিটামিন D সমৃদ্ধ খাবার খান এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
চুলে প্রভাব পড়ে:
অনেকেই জানেন না যে, ভিটামিন D-এর ঘাটতি চুলের উপর গভীর প্রভাব ফেলে। অত্যধিক চুল পড়া এবং দুর্বল চুলের বৃদ্ধি ভিটামিন D-এর অভাবের সাথে সম্পর্কিত। চুল পড়া রোধ করতে আমরা অনেক শ্যাম্পু ব্যবহার করি, কিছুতেই কোনও কাজ যদি না হয় তাহলে আমাদের বুঝতে হবে ভিটামিন D-এর অভাব রয়েছে শরীরে। ফলে আগে থেকে সতর্ক হওয়া উচিত আমাদের।
ত্বকের উপরও প্রভাব পড়ে:
ভিটামিন D-এর অভাবে ত্বকের উপরও গভীর প্রভাব পড়ে। যাদের শরীরে ভিটামিন D-এর ঘাটতি রয়েছে, তাদের ত্বকে নানা সমস্যা দেখা দেয়। ফুসকুড়ি, ব্রণ সবসময় লেগেই থাকে। অনেক ক্রিম বা ওষুধ লাগানোর পরেও ভালো হয় না সেগুলি। এছাড়া ত্বকের বয়সও খুব দ্রুত বেড়ে যায়। তাই বলা যায় যে, এইরকম সমস্যা হলে আমাদের বুঝতে হবে ভিটামিন D-এর অভাব রয়েছে শরীরে এবং দ্রুত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।