দৈনন্দিন জীবনের জন্য এই ৪টি পুষ্টিকর ডাল আপনার স্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখতে সক্ষম।
এখানে সেই ৪টি পুষ্টিকর ডালের কথা বলা হয়েছে যা নিয়মিত আপনার খাদ্যের অংশ হওয়া উচিত।
একটি ভারতীয় পরিবারে, ডাল সাধারণত আমাদের প্রতিদিনের খাবারের একটি মূল্যবান অংশ।
ডাল হল আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকার মধ্যে সবচেয়ে অন্যতম এবং গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। ডালের অনেকপ্রকার জাত রয়েছে। সুতরাং, প্রশ্ন করাই যায়, কোন ডালের গুণগত মান সেরা? এখানে পুষ্টিকর ডালের একটি তালিকা রয়েছে যা একটি সুস্থ জীবনের জন্য আপনার খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা একান্তই উচিত।
সুতরাং বলাবাহুল্য যে, তার মধ্যে একটি বেছে নেওয়া খুব কঠিন কারণ প্রতিটি ডালের তার অসুবিধা এবং সুবিধা রয়েছে। প্রতিটি ডাল বিভিন্ন উদ্দেশ্যে উৎপাদন করা হয়ে থাকে। তাই আমাদের প্রথমেই জানতে হবে কখন কী খাবেন, ওজন কমানোর জন্য কোন ডাল বিশেষ উপযোগী বা কোন ডাল ডায়াবেটিসে সাহায্য করে বা চুল পড়া কমাতে কমাতে সাহায্য করে।
নিম্নে আলোচনা করা হল পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যকর ডাল সম্বন্ধে :
১. ওজন কমানোর জন্য সাহায্যকারী মুগ ডাল :
মুগ ডাল ওজন কমাতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। আবার এটি হজমেও সাহায্য করে। আপনার যদি ডায়াবেটিস বা চুল পড়ার মতো সমস্যা থাকে, মুগ ডাল আপনাকে সেই সব সমস্যার চটজলদি সমাধান করতে সাহায্য করতে পারে। এটি স্তন্যদানকারী মায়েদের জন্যও ভালো বলা হয়ে থাকে।
মুগ ডাল ভারতের অন্যতম প্রিয় খাদ্যশস্য। এটি একটি ‘সুপারফুড’ হিসাবে বিবেচিত হয়। মুগ ডালের প্রধান ভূমিকা হল এটি ওজন কমাতে সাহায্য করে। এটি ফাইবার, পটাসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফোলেট এবং অন্যান্য বেশ কয়েকটি ভিটামিন দিয়ে পরিপূর্ণ।
কেউ কেউ আবার মুগ ডাল অর্ধেক সিদ্ধ করে খেতে ভালোবাসেন। তবে মুগ ডাল পুরোপুরি সিদ্ধ করা সবসময়ই ভালো। ভালোভাবে সিদ্ধ করা ডাল হজমের জন্য খুবই উপযোগী।
এখানে কিছু রেসিপি দেওয়া রয়েছে যা আপনি আপনার রান্নাঘরে চেষ্টা করতে পারেন:
মুগ ডালের স্যালাড
মুগ ডালের চিল্লাস
মুগ ডালের পকোড়া
মুগ ডালের ধোসা
মুগ ডালগুলি সারারাত ভিজিয়ে রোদে শুকিয়ে নিন। তারপর, এটি গুঁড়িয়ে নিন পাউডার আকারে। এই পাউডার প্রোটিনের পরিমাণ বাড়াতে বিভিন্ন খাবারের সঙ্গে যোগ করা যেতে পারে।
২. কোলেস্টেরলের মাত্রা সঠিক রাখতে চানা মটর ডাল :
আমাদের শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য চানা মটর ডাল অত্যন্ত প্রশংসিত। এমনকি এই ডালটি এথেরোস্ক্লেরোসিস পরিচালনা করে ফলে আমাদের শরীরের ধমনী ঘন হয়ে যায়। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হওয়ায় এই ডালের অনেক উপকারিতাও রয়েছে। ধমনী ঘন হওয়ার কারণে রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি কিছুটা কমায়। এটি রক্তে শর্করার মাত্রাও কমায় এবং এটি ভেজানো এবং সিদ্ধ করার পর ভাল কাজ দেয়।
কিছু রেসিপি দেওয়া হল যা আপনি বাড়িতে চেষ্টা করতে পারেন:
চানা মটর ডালের ধোকলা
চানা মটর ডালের পিতলা
চানা মটর ডাল ভুর্জিয়া
চানা মটর ডালের ডালচা
চানার ডাল শাকসবজিতে তড়কার অংশ হতে পারে বা ভেজানো এবং সবজির সাথে যোগ করা যেতে পারে। এগুলিকে মুগ ডালের মতো গুঁড়ো করে বিভিন্ন খাবারে যোগ করা যেতে পারে। এটি খুবই উপকারী একটি খাদ্যদ্রব্য।
৩. ভ্রূণের বিকাশের জন্য অড়হর ডাল :
অড়হর ডাল ব্যাপকভাবে ভ্রূণের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এটি সাধারণত নবজাতকের জন্মগত ত্রুটি রোধ করে। এটি ভাসোডিলেটর হিসেবে কাজ করে, রক্ত চলাচল কমায়। সুতরাং, এটি রক্তচাপকে স্থিতিশীল করে। উচ্চ রক্তচাপ বা হৃদরোগের ঝুঁকিতে ভুগছেন এমন রোগীদের জন্যও এটি উপকারী।
আপনি বিভিন্নভাবে রান্না করে এই ডালটি উপভোগ করতে পারেন। এইগুলি ব্যবহার করে দেখুন:
ডাল ধোকলি
ডাল ভাট্টি
৪. ত্বক ও চুলের যত্নের জন্য উপকারী বিউলির ডাল :
বিউলির ডালে প্রচুর পরিমাণে খনিজ ও ভিটামিন রয়েছে। এটি ত্বকের সমস্যার সমাধান করতে সাহায্য করে। বিউলির ডালে উচ্চ আয়রন থাকে যা আমাদের শরীরে বেশি অক্সিজেন সঞ্চালন করে। এটি উজ্জ্বল এবং মসৃন ত্বকের জন্য চমৎকার। রোদে পোড়া ভাবও কমায় আর সেই সঙ্গে ট্যান এবং ব্রণ দূর করে।
আয়ুর্বেদ অনুসারে, বিউলির ডাল ওজন বাড়াতে এবং অভ্যন্তরীণ শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
অতএব, যারা ওজন বাড়াতে চান এবং পেশীতে শক্তি যোগ করতে চান তাদের দ্বারা এটি আরও বেশি খাওয়ার অভ্যাস করুন। এই ডাল দিয়ে আমরা আমরা আনন্দদায়ক দক্ষিণ ভারতীয় খাবার তৈরি করতে পারি:
পাতলা আকারের ধোসা
উথাপ্পা
ইডলি
এই প্রধানত মুগ ডাল এবং চানা মটর ডালের মতো, বিউলির ডালও পাউডারে রূপান্তরিত করে বিভিন্ন খাবারে যোগ করা যেতে পারে।
বিঃদ্রঃ
বেশি পরিমাণে ডাল খেলে আবার ক্ষতিও হতে পারে। এতে ফোলাভাব হতে পারে তাই ডাল বেশি খাবেন না।
উল্লেখিত যে এই সমস্ত ডালগুলিকে খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করুন এবং একটি সুস্থ ও সুখী জীবনযাপন করুন।