আপনি যদি নিয়মিত ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যায় ভোগেন তবে করলা হতে পারে আপনার খাদ্যতালিকার সেরা খাবার
করলা খান এবং ইউরিক অ্যাসিড থেকে মুক্তি পান
হাইলাইটস:
•ইউরিক অ্যাসিড জনিত সমস্যা মানুষকে সুখে থাকতে দেয় না
•শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমান বেড়ে গেলে তবেই এই সমস্যা হয়
•ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে করলা হতে পারে আপনার সেরা পছন্দ
ইউরিক অ্যাসিড রক্তে পাওয়া একটি বর্জ্য পদার্থ। শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক প্রমাণ হতে পারে। এটি শরীরে জমা হয় এবং একটি স্ফটিকের রূপ নেয়। কারণ এটি জয়েন্টে জমা হয় যা গেঁটেবাত, কিডনিতে পাথর এবং অন্যান্য অনেক স্বাস্থ্য সমস্যার দিকে পরিচালিত করে। কোলেস্টেরল এবং ব্লাড সুগারের মতো শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধি করাও স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক। এটি তৈরি হয় যখন শরীরে পিউরিন নামক রাসায়নিক ভেঙ্গে যায়। যাইহোক, ইউরিক অ্যাসিড রক্তে দ্রবীভূত হয়ে কিডনির মধ্য দিয়ে যায় এবং প্রস্রাবের মাধ্যমে বেরিয়ে আসে।
ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলে অসুবিধাগুলি হল:
অনেক সময় ইউরিক অ্যাসিড রক্তে বেশি হয়ে যায় এবং তা বাইরে আসতে না পেরে এখানে জমা হয়ে স্ফটিকের রূপ নেয়। কারণ এটি জয়েন্টে জমা হয়ে গেঁটেবাত, কিডনিতে পাথর এবং অন্যান্য অনেক স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করে। এতে রোগীর জয়েন্টে প্রচণ্ড ব্যথা হয়। জয়েন্টে ব্যথা, শক্ত হয়ে যাওয়া, হাঁটতে কষ্ট হওয়া, ফুলে যাওয়া এবং জয়েন্টের লাল হওয়া বা ফাটল হওয়া ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধির প্রাথমিক লক্ষণ।
ইউরিক অ্যাসিডের চিকিৎসা পদ্ধতি:
ইউরিক অ্যাসিডের বৃদ্ধিকে ডাক্তারি ভাষায় বলা হয় হাইপারইউরিসেমিয়া। তাছাড়া আপনি কিছু আয়ুর্বেদিক প্রতিকারের মাধ্যমেও উপশম পেতে পারেন।
ইউরিক অ্যাসিডের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা:
ডাক্তাররা ইউরিক অ্যাসিড কমাতে এবং গাউট মোকাবেলা করার জন্য খাদ্যতালিকা এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তনের পরামর্শ দিলেও, আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার উপরও বহু মানুষ ভরসা করেন। আয়ুর্বেদ ইউরিক অ্যাসিড কমাতে বাঁধাকপি, বেগুন, মটরশুটি, বীটরুট, নির্দিষ্ট ধরণের মাছের মতো উচ্চ পিউরিনযুক্ত খাবার এড়ানোর পরামর্শ দেয়। আয়ুর্বেদের মতে, খাদ্যতালিকায় করলা যোগ করলে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমতে পারে।
করলার পুষ্টিগুন:
চিকিৎসকদের মতে, করলা এমন একটি সবজি যা আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম এবং ভিটামিন C -এর মতো পুষ্টিগুণে ভরপুর। এটি পুষ্টির একটি পাওয়ার হাউস। করলায় যথেষ্ট পরিমাণে বিটা-ক্যারোটিন আছে। করলায় যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন- C রয়েছে। ভিটামিন- C ত্বক ও চুলের জন্য একান্ত জরুরি। এই ভিটামিনটি আমাদের দেহে প্রোটিন ও আয়রন যোগায় এবং ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধক ক্ষমতা গড়ে তোলে।
করলা কীভাবে ইউরিক অ্যাসিড কমাতে সাহায্য করে?
NCBI-তে প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় দেখা যায় যে, একদল ইঁদুরকে কয়েকদিন ধরে করলার রস খাওয়ানো হয়। এরপর দেখা যায়, করলার রস খাওয়ার ফলে তাদের শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা অনেক শতাংশ কমে গেছে। আর এর সাথে লিপিড প্রোফাইলের মাত্রাও যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তাই কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইড রোধ করতে কাজে লাগানো যায় এই করলার জুস এমন ইঙ্গিতও মিলেছে এই গবেষণায়।
করলা কী কী ভাবে ব্যবহার করবেন?
ডাক্তাররা বলেন যে, করলার আরও উপকার পেতে প্রতিদিন সকালে এক কাপ করে এর রস পান করতে পারেন। যদিও এটি এমন একটি সবজি যে যেকোন রূপে খেলে উপকার পাবেন। আপনি এটি আপনার সবজি বা স্যুপেও ব্যবহার করতে পারেন। এর রস এলার্জি প্রতিরোধেও দারুণ উপকারী। আবার ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও এটি উত্তম। প্রতিদিন নিয়মিতভাবে করলার রস খেলে রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। ফাইবার সমৃদ্ধ করলা কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যাও কমায়।
এইরকম স্বাস্থ্য এবং জীবনধারা সম্পর্কিত প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।