health

আদা জলের স্বাস্থ্য উপকারিতাগুলি কী কী? এই ডিটক্সিফাই পানীয়টি ২ মিনিটের মধ্যে প্রস্তুত করুন সহজ উপায়ে।

আদা জলের স্বাস্থ্য উপকারিতা: এতে ক্যান্সার প্রতিরোধ করার ক্ষমতা বহুগুন রয়েছে।

“ডিটক্সিফিকেশন” হল একটি সহজ উপায় যার মাধ্যমে আপনার শরীরে জমে থাকা অবাঞ্ছিত বিষাক্ত পদার্থ দূর হয়। আদা একটি সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্যকর মশলাজাতীয়, কারণ অনেক সময় এটি ঔষধ তৈরির জন্যও ব্যবহৃত হয়। কিন্তু আপনি কী আদা জলের স্বাস্থ্য উপকারিগুলির সাথে পরিচিত?

আদা জলের উপকারিতা :

আদা জল সবচেয়ে শক্তিশালী এবং প্রাকৃতিক উপাদান যা পেটের চর্বি কমাতে সাহায্য করে। আদা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে, রক্ত ​​সঞ্চালন প্রক্রিয়া উন্নত করে, হাড়ের ব্যথা উপশম করে এবং হজমশক্তি উন্নত করে।

প্রতিদিন প্রাতঃরাশ এবং রাতের খাবারের আগে এই শক্তিশালী পানীয়টি আপনাকে উরু ও কোমর থেকে চর্বি কমাতে এবং অন্যান্য অসুস্থতার সাথে লড়াই করতে সহায়তা করবে।

বিভিন্ন গবেষণাতে দেখা গেছে যে, এই মূল্যবান ভেষজটি মানবদেহে স্বাস্থ্য উপকারিতা হিসাবে কাজ করছে। কিন্তু যখন আদা জলের কথা আসে তখন গবেষণা যে চূড়ান্ত তা একেবারেই বলা যায়না।

একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, গরম আদা জল প্রাতঃরাশের পরে যারা পান করে তারা কিছুটা সুস্থতা বোধ করে। আবার শরীরের ওজন সঠিক রাখতেও এটি একটি ইতিবাচক ভূমিকা নেয়। কিন্তু কোনো গবেষণায় পাওয়া যায়নি যে, আদা জল রক্তে শর্করার মাত্রা কমিয়ে দিতে পারে।

অনেকসময় দেখা যায়, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদেরও আদা জল পান করা একান্তই দরকার কারণ এটি ব্যথা উপশমেও সাহায্য করে। সামগ্রিকভাবে আদা জল পান করা নিরাপদ বলে মনে হয়, তবে আপনি এটি ব্যবহার করার আগে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে পারেন।

আদা জল খাওয়ার আগে যেসব সতর্কতা অবলম্বন করতে হয় সেগুলি হল :

১. খুব বেশি আদার জল পান করবেন না কারণ আপনি গ্যাস, পাতলা পায়খানা, পেটে ব্যথা বা বুকজ্বালা অনুভব করতে পারেন।

২. আদা রক্ত ​​পাতলা করার ওষুধে হস্তক্ষেপ করতে পারে। সুতরাং, প্রথমে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলা গুরুত্বপূর্ণ।

৩. আদা বমি বমি ভাবের সাথে সাহায্য করার জন্যও পরিচিত। যদিও কোন গবেষণায় কোন ক্ষতির ইঙ্গিত আমরা পাইনি। তবে আপনি যদি গর্ভবতী হন এবং প্রতিদিন সকালে অসুস্থতা বোধ করেন তবে প্রথমে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করবেন।

৪. সবশেষে, আপনি সহজেই আপনার আদা জলটি প্রস্তুত করতে পারেন। বাজার থেকে একদম তাজা আদা কিনুন কারণ এটি ত্বককে মসৃণ রাখতে সাহায্য করে। এর একটি সুস্বাদু মশলাদার গন্ধ থাকা উচিত তবেই আপনি এর স্বাদ পাবেন। আবার আপনার স্বাদের মানকে বাড়ানোর জন্য মধু বা লেবুর রস যোগ করতে পারেন। সুতরাং, আসুন আমরা নিজেরাই এটি তৈরি করার চেষ্টা করি।

লেবুর জলের সাথে আদা জলের মিশ্রণ প্রক্রিয়া ?

আদা চা :

•একটি বাটিতে ২ কাপ জল নিন।

•তারপর এটিকে আঁচে ফুটতে দিন।

•এদিকে ১ইঞ্চি মাপের একটি আদাকে টুকরো টুকরো করে কেটে ফেলুন।

•তারপর ভালো করে পিষে নিন একটি পাথরের পেষকদন্তে।

•এক চিমটে লবণ যোগ করুন এবং এটি ভালোভাবে মেশান। এটি একটি ঐচ্ছিক পদক্ষেপ। আপনি যদি এটি এড়িয়ে যেতে চান তাহলে আপনি করতে পারেন।

•মিশ্রণটি মাঝারি আঁচে ২-৩ মিনিট রাখুন।

•জল ফুটতে শুরু করলে আপনার প্রত্যহ ব্যবহৃত চা পাতা যোগ করুন।

•তারপর আঁচ বন্ধ করে এক মিনিট ঢেকে রাখুন।

•চা ছাঁকনি ব্যবহার করে এটি ছেঁকে নিন।

•তারপর ১ টেবিল চামচ লেবুর রস যোগ করুন এবং আরও ভালো স্বাদের জন্য এটি ভালোভাবে মেশান।

•আপনার কাপটি ভর্তি হওয়ার পর আপনি তাতে ২ টেবিল চামচ মধু যোগ করে এটিকে আরো ভালোভাবে মেশাতে পারেন।

আদার রস :

•আঁচে জল ফুটিয়ে নেওয়ার পর, আদার মূল অংশকে পাতলা পাতলা করে ৫-৬ টুকরো করে নিয়ে সেই জলে মেশান।

•মিশ্রণটি ১৫ মিনিট আঁচে রাখার পর, আঁচ দিয়ে নামিয়ে এটি ঠান্ডা হতে দিন।

•তারপর ছেঁকে নিন এবং কয়েক ফোঁটা লেবুর রস যোগ করুন।

এর সাথেই আপনার “ডিটক্সিফাইং টনিক” অর্থাৎ আদা জল প্রস্তুত।

আপনি সেসব দোকান থেকেও আদা জল কিনতে পারেন যেখানে এটি ভেষজ জল বা চা বা জুস আকারে আছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, এই পানীয়গুলিতে অনেক প্রকার রঙ মেশানো হয় যেগুলি স্বাভাবিকভাবেই, আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button