নিৰ্বাচন

Governor CV Ananda Bose: নির্বাচন কমিশনারের জয়েনিং রিপোর্ট ফেরত পাঠালেন রাজ্যপাল! স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে ‘নজিরবিহীন’ ঘটনা

Governor CV Ananda Bose: রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ফেরত পাঠালেন কমিশনার রাজীব সিনহার জয়েনিং রিপোর্ট

হাইলাইটস:

• বুধবার নির্বাচন কমিশনারের যোগদান রিপোর্ট ফেরত পাঠালো রাজ ভবন

• রাজ্যপালের সম্মতিতেই রাজীব সিনহাকে কমিশনারের নিযুক্ত করা হয়েছিল

• বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি ভারতের ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা

Governor CV Ananda Bose: পঞ্চায়েত ভোটকে কেন্দ্র করে আবার এক নাটকীয় রূপ নিলো রাজ্য রাজনীতি। বুধবার হাইকোর্ট রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে নানা প্রশ্নের মুখে ফেলার পর দ্রুত ৮০০ কোম্পানির বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার রায় দেয়। তাঁর কিছুক্ষনের মধ্যেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনার পদে রাজীব সিনহার জয়েনিং রিপোর্ট ফেরত পাঠিয়ে দিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম বুধবারই তাঁর পর্যবেক্ষণে জানান, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কমিশনার রাজ্যপালের কাছে ইস্তফা দিয়ে দিতে পারেন যদি তিনি আদালতের কেন্দ্রীয় বাহিনী সংক্রান্ত নির্দেশ পালন করতে না চান। তারপরেই রাজ ভবনের পক্ষ থেকে কমিশনারের যোগদান রিপোর্ট ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সুতরাং, এর ফলে রাজীব সিনহা আদৌ কী নির্বাচন কমিশনার হিসেবে কাজ চালিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন, তা নিয়েই একপ্রকার আইনি জটিলতা সৃষ্টি হল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

রাজ্য সরকার রাজীব সিনহার নাম সুপারিশ করে নির্বাচন কমিশনারের পদের জন্য। বেশ কিছুদিন টানাপোড়েন হলেও অবশেষে রাজ্যপাল সেই নামে সম্মতি দিয়েছিলেন। নিয়ম অনুসারে, নির্বাচন কমিশনার পদে রাজীব সিনহা যোগদানের করার পর রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সচিব সেই যোগদান রিপোর্ট রাজ ভবনে পাঠিয়েছিলেন। সেই রিপোর্টই ফেরত পাঠালেন রাজ্যপাল। এর মানে হল, নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ করলেও কমিশনার পদে রাজীব সিনহার কাজ চালিয়ে যাওয়া নিয়ে অনুমোদন দিলেন না রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।

প্রসঙ্গত, গতকাল কলকাতা পঞ্চায়েত মামলায় হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে মামলার রায় দেওয়ার সময় নির্বাচন কমিশনার হিসেবে রাজীব সিনহার ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, যদি কমিশনার হাইকোর্টের নির্দেশ কার্যকর করতে পারছেন না মনে করেন, তাহলে তিনি ইস্তফা দিয়ে পদ থেকে সরে যান। তার পরিবর্তে রাজ্যপাল নতুন কমিশনার নিয়োগ করবেন বলেও মন্তব্য করলেন প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম৷

বিচারপতির এইরকম মন্তব্যের পরই রাজ্যপালের জয়েনিং রিপোর্ট ফেরত পাঠান রাজ্যপাল৷ রাজভবনের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছে যে, রাজ্য নির্বাচন কমিশনার পদে নবনিযুক্ত কমিশনার রাজীব সিনহা রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচন সংক্রান্ত সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য রাজ্যপাল তলব করার পরেও রাজভবন যাননি। সুতরাং বলাই যায়, রাজীব সিনহার এহেন কাজে যথেষ্টই ক্ষুব্ধ রাজ্যপাল। ফলে রাজভবন ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছে তাঁর জয়েনিং রিপোর্ট।

প্রশ্ন উঠছে আইনি ভাবে বৈধ কি না রাজীব সিনহার কমিশনার পদে থাকা৷ সংবিধান বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজ্যপাল রিপোর্ট ফেরত পাঠালেও, কোনও পরিস্থিতিতেই রাজ্যপাল নির্বাচন কমিশনারের পদ থেকে রাজীবকে সরাতে পারবেন না। কারণ, রাজ্যপালের অনুমোদন দেওয়ার পরেই রাজীব সিনহা কমিশনারের দায়িত্ব নিয়ে কাজ শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে কমিশন পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজীব সিনহার নামে একাধিক বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। পাশাপাশি সুপ্রিমকোর্টে এবং হাইকোর্টে নির্বাচন কমিশনকে ঘিরে যে সমস্ত মামলা চলছে, তাতেও নাম রয়েছে কমিশনার রাজীব সিনহার। ওপর পক্ষে, রাজ্যপালের সম্মতি নেওয়ার পরেই রাজ্য সরকার নির্বাচন কমিশনার পদে রাজীব সিনহাকে বসিয়েছে। এক তরফা ভাবে তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা সাংবিধানিক ভাবে রাজ্যপালের নেই বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। বিশেষজ্ঞদের মতে, কমিশনারের যোগদান রিপোর্ট রাজ্যপালের ফেরত পাঠানো স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে একটি ‘নজিরবিহীন’ ঘটনা। সাথে সাথে রাজ্য সরকার ও রাজ ভবনের মধ্যে সংঘাত আরও তীব্র হল৷ অতীতে ২০১৫ সালে পুরভোটের আগে হঠাৎ করেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনার পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন সুশান্ত উপাধ্যায়৷ কিন্তু সেবারে এভাবে কমিশনারের পদ নিয়ে এই রকম আইনি টানাপোড়েন তৈরি হয়নি৷ পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে বিতর্ক চলছিলই। তারই মাঝে তৈরি হল এক বেনজির পরিস্থিতি৷

এইরকম রাজনৈতিক বিষয়ক প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button