Trending News: বোরখা পরলেই এবার লাখ লাখ টাকার জরিমানা! এবার নয়া আইন আনছে এই দেশের সরকার, বোরখা-হিজাবে নিষেধাজ্ঞা!
মেলোনির দলের তিন জন সাংসদ বিলটি সংসদে পেশ করেছেন। তাদের দাবি যে, এই আইন কেবল ধর্মীয় উগ্রতা রোধই নয়, বরং আনা হয়েছে সমাজে সম্প্রীতি বজায় রাখার উদ্দেশ্যেই।
Trending News: প্রকাশ্য স্থানে শরীর সম্পূর্ণ ঢেকে রাখে এমন পোশাকে এবার নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে এই দেশে
হাইলাইটস:
- সম্প্রতি এবার নয়া আইন আনতে চলেছে এই দেশ
- বোরখা এবং হিজাব নিষিদ্ধ আইন আনা হচ্ছে
- ইতিমধ্যেই এই সংক্রান্ত বিলও পেশ করা হয়েছে
Trending News: ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সরকার এবার প্রকাশ্য স্থানে বোরখা বা হিজাব পরা বন্ধ আইন আনতে চলেছে। ইসলামি এবং সাংস্কৃতিক বিচ্ছিন্নতাবাদ রুখতেই এই পদক্ষেপ জারি বলে দাবি করেছে ইতালির শাসক দল ‘ব্রাদার্স অফ ইতালি’। ৮ই অক্টোবর ইতালির সংসদে এই সংক্রান্ত একটি বিল পেশ করা হয়েছে। বিলে স্পষ্ট বলা হয়েছে যে, স্কুল, দোকান, বিশ্ববিদ্যালয়, অফিস বা অন্য কোনও প্রকাশ্য স্থানে শরীর সম্পূর্ণ ঢেকে রাখে এমন কোনও পোশাক পরা যাবে না। বিশেষ করে হিজাব বা বোরখা পরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই আইন অমান্য করলে জরিমানা হতে পারে ৩০০ থেকে ৩০০০ ইউরো পর্যন্ত, যা ভারতীয় মুদ্রায় এর মূল্য প্রায় ২৬ হাজার থেকে ২.৬ লক্ষ টাকা পর্যন্ত।
We’re now on WhatsApp- Click to join
মেলোনি সরকারের বোরখা নিষেধাজ্ঞা
মেলোনির দলের তিন জন সাংসদ বিলটি সংসদে পেশ করেছেন। তাদের দাবি যে, এই আইন কেবল ধর্মীয় উগ্রতা রোধই নয়, বরং আনা হয়েছে সমাজে সম্প্রীতি বজায় রাখার উদ্দেশ্যেই। এই পদক্ষেপ ইতালিতে ধর্মের নামে বিভাজন ও ঘৃণা ছড়ানো রুখতেই। বোরখা এবং হিজাবের মতো পোশাক সমাজে বিচ্ছিন্নতার প্রতীক হয়ে উঠেছে এমনটাই মনে করছে সরকার। এই বিল যদি কার্যকর হয় তবে ইতালিতে ‘সাংস্কৃতিক ঐক্য’ বাড়বে ও চরমপন্থা বা ইসলামি উগ্রতার মূলে আঘাত করা বেশ সম্ভব হবে।
We’re now on Telegram- Click to join
উল্লেখ্য, ইতালিতে ১৯৭৫ সাল থেকেই একটি আইন বিদ্যমান, যেখানে বলা হয়েছে যে মুখ ঢাকা পোশাক প্রকাশ্য স্থানে পরা নিষিদ্ধ। তবে সেই আইনে বোরখা কিংবা হিজাবের কথা সরাসরি উল্লেখিত ছিল না। এবার সেই ফাঁক পূরণ করতেই মেলোনি সরকার নতুন এই বিল আনছে। চলতি বছরের শুরুতে দাবি তুলেছিল মেলোনির শরিক দল ‘লিগ পার্টি’, মুখ ঢাকা পোশাক বলতে বোরখা এবং হিজাবকেও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তাদের সেই দাবিকে এবার সরকার আইন আকারে রূপ দিচ্ছে। ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এক সদস্য এ প্রসঙ্গে বলেছেন, “ফ্রান্সের আইনের অনুপ্রেরণায় এই বিলটি তৈরি। ২০১১ সালে বোরখা নিষিদ্ধ করেছিল ফ্রান্স। ইতালিও এবার সেই পথেই হাঁটছে।” বিশ্লেষকদের মতানুযায়ী, বর্তমানে সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ জর্জিয়া মেলোনির জোট সরকার, তাই এই বিল পাস হওয়া সময়ের অপেক্ষা মাত্র।
View this post on Instagram
তবে এহেন পদক্ষেপ ঘিরে প্রবল বিতর্ক শুরু হয়েছে ইতালিতে। একদিকে, এই আইনটিকে “দেশের সংস্কৃতি রক্ষার পদক্ষেপ” বলে সমর্থন জানাচ্ছেন ডানপন্থী সমর্থকরা, আবার অন্যদিকে, একে “ইসলাম বিরোধী” এবং “নারীর স্বাধীনতার উপর আঘাত” বলে মুসলিম সংগঠনগুলি অভিযোগ তুলেছে। ইতালির মুসলিম কাউন্সিলের সম্প্রতি এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “বোরখা এবং হিজাব কোনও উগ্রতার প্রতীক নয়, বরং এটি বিশ্বাস আর স্বাধীনতার প্রকাশ। ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘন করছে এই আইন।”
অবশ্য এই সমালোচনাকে গুরুত্ব দিতে নারাজ ডানপন্থীরা। তাদের বক্তব্য যে, প্রায় পাঁচ লক্ষ মুসলিম ইতালিতে বাস করেন, যাদের মধ্যে একাংশ উস্কানি দিচ্ছে ধর্মীয় চরমপন্থাকে। সেই প্রেক্ষিতে এই বিল দেশের ঐতিহ্য এবং সামাজিক সংহতি রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে বলেই মনে করছে মেলোনি সরকার। বিশ্ব রাজনীতির বিশ্লেষকরা এ বিষয়ে মনে করছেন, ইউরোপে ডানপন্থী জাতীয়তাবাদের উত্থানকে আরও স্পষ্ট করে তুলছে এই পদক্ষেপ। অন্যদিকে, মানবাধিকার সংস্থা এবং মুসলিম সংগঠনগুলি এ প্রসঙ্গে বলছে, বোরখার ওপর এই নিষেধাজ্ঞা জারি হলে কিংবা এই আইন পাশ হলে তা ইউরোপে ধর্মীয় স্বাধীনতার ক্ষেত্রে এক নয়া বিতর্কের জন্ম দেবে।
এইরকম আরও গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।