Mamata Banerjee on Coromandel Train Accident: এখনও শনাক্ত করা যায়নি ১৮২ জনকে! বাংলায় মৃতের সংখ্যা কত? ওড়িশায় ট্রেন দুর্ঘটনা নিয়ে বিস্ফোরক মুখ্যমন্ত্রী
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় শনিবার পর্যন্ত আমাদের রাজ্যে মৃতের সংখ্যা ৩১ থাকলেও গতকাল তা বেড়ে হয় দ্বিগুন।
Mamata Banerjee on Coromandel Train Accident: কেন্দ্রীয় সরকার এবং রেল মন্ত্রকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী
হাইলাইটস:
• করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী
• কারণ মৃতদের বাংলার মানুষের সংখ্যা বেশি
• ফলে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্নের মুখে রেল মন্ত্রক এবং কেন্দ্রীয় সরকার
Mamata Banerjee on Coromandel Train Accident: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় শনিবার পর্যন্ত আমাদের রাজ্যে মৃতের সংখ্যা ৩১ থাকলেও গতকাল তা বেড়ে হয় দ্বিগুন। রবিবার সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ”বালেশ্বরে ট্রেন দুর্ঘটনায় এখনও পশ্চিমবঙ্গের ৬২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ১৮২ জনকে এখনও শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।” রাজ্যের ৬২ জন মৃত বলে সংবাদিক সম্মেলনে ঘোষণা করেছেন মুখমন্ত্রী। তবে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা তাঁর। মৃত ৬২ জনকে সনাক্ত করা সম্ভব হলেও ১৮২ জনের এখনও পরিচয় মেলেনি। মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান,ওড়িশার নানান হাসপাতালে ওই দুর্ঘটনার ৭৩ জন ভর্তি আছেন। ২০৬ জন আহত মানুষকে দুর্ঘটনাস্থল থেকে এনে কলকাতায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর ৫৬ জনকে ছাড়া হয়েছে। যে ১৮২ জনের এখনও পরিচয় মেলেনি তাদের ছবি প্রত্যেক জেলায় শেয়ার করা হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের জেলা হাসপাতালগুলিতে রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে হেল্প ডেস্ক বসানো হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, “হাওড়া, সাঁতরাগাছি, খড়্গপুরে ২৪ ঘণ্টা মনিটরিং সেল আছে। কয়েকজন আইএএস অফিসার বর্ডারে নিযুক্ত আছেন। আমাদের এ রাজ্যের লোক দেখলেই বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। গতকাল ৭০০ জনকে আনা হয়েছে।” মৃতদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে ৫ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করা হয়েছে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে। এছাড়াও দুর্ঘটনা থেকে ফিরে আসা প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। এছাড়াও আগামী তিন মাস তাদের সকলকে দুই হাজার টাকা এবং চাল, ডাল সহ ত্রাণ দেওয়া হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। এই মুহূর্তে অজ্ঞাত পরিচয় ১৮২ জনকে শনাক্ত করার পরই পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে রাজ্য সরকার। রবিবার নবান্নে থেকে সাংবাদিক বৈঠকে যাবতীয় তথ্য জানালেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রবিবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে এই সকল বিষয়ের পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন তোলেন ভারতীয় রেলের ভূমিকা নিয়েও। তিনি বলেন, “আমি রেলমন্ত্রী থাকাকালীন রেল দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলে প্রত্যেক মৃতের পরিবারের সদস্যের একজনকে চাকরি দিতাম। নতুন সিগন্যালিং ব্যবস্থা করি আমিই। প্রায় ৪০০ আনম্যানড লেবেল ক্রসিংকে ম্যানড করি। অ্যান্টি কলিউশন সিস্টেম ছিল না, আমি রেলমন্ত্রী থাকা কালীন সেটা চালু করি। ডাল মে কুছ কালা হ্যায়। মৃতের সংখ্যা আমাদের কাছে বাড়ছে অথচ ওদের কমছে। দুরন্ত এক্সপ্রেস চালু করেছিলাম আমিই।” সেই দুরন্ত এক্সপ্রেসের এখন বেহাল দশা বলে দাবি করেন তিনি। বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, সেদিন একটা গাছ পড়েই ট্রেন আটকে গেল। সেই ঘটনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন বন্দে ভারতের ইঞ্জিন কোথা থেকে করা হয়েছে? সেই ইঞ্জিন কী আদেও ফিট বন্দে ভারতের জন্য? আর্থিক ক্ষতিপূরণ থেকে চিকিৎসায় গাফিলতি- নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
ওড়িশায় ঘটে যাওয়া করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার প্রাথমিক তদন্তের রিপোর্টে অনুযায়ী, ট্রেনের গতিবেগ ঘণ্টায় ১২৮ কিলোমিটার ছিল লুপ লাইনে ঢোকার সময়। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী ট্রেনটি ১৫ থেকে ৩০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিবেগে থাকবে যখন সেটি লুপ লাইনে ঢুকবে। সাথে সাথে বিশেষ রুট সিগন্যাল জ্বলার কথা। কিন্তু জানা যাচ্ছে, সে সব কিছুই হয়নি। নিয়ম না মেনে প্রচণ্ড গতিবেগে লুপ লাইনে ঢুকে পড়েই দুর্ঘটনার শিকার হয় করমণ্ডল এক্সপ্রেস এমনই খবর রেল সূত্রে। ২৪ কোচের করমণ্ডলের গতিবেগ শূন্য হয়ে যায় মাত্র ২৩ সেকেন্ডের মধ্যে। ট্রেনের ২১ টি কামরা নিমেষের মধ্যে লাইন থেকে ছিটকে পড়ে যায় সংঘর্ষের ফলে।
কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব সাংবাদিকদের দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার মূল কারণ চিহ্নিত করা গেছে। ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং-এ বদল এই দুর্ঘটনার মূল কারণ। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণ করে গেছেন। রেলের তরফ থেকে গতকাল ট্র্যাকটি পুনরুদ্ধার করার কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। সমস্ত মৃতদেহ সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। ভারতীয় রেলের পক্ষ থেকে তিনি বলেন, বুধবার সকালের মধ্যে পুনরুদ্ধারের কাজ শেষ করে যাতে ট্রেনগুলি পুনরায় চলতে শুরু করে সেই চেষ্টা করবে ভারতীয় রেল। তিনি জানিয়েছেন রেলওয়ে নিরাপত্তা কমিশনার শীঘ্রই এই ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট জমা দেবে।
এইরকম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।