Imran Khan Arrest: প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের গ্রেফতারিতে রণক্ষেত্র পাকিস্তান, সেনা সদর দফতরে সমর্থকদের হামলা
Imran Khan Arrest: ইমরানের খানের গ্রেফতারিতে জ্বলছে প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান
হাইলাইটস:
• ইমরান খানের গ্রেফতারিতে অগ্নিগর্ভ পাকিস্তান
• ইমরান সমর্থকরা রাস্তায় বেরিয়ে প্রতিবাদ দেখাতে শুরু করেছে
• এমনকি পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর সাথে খন্ড যুদ্ধ বাঁধে তাদের
Imran Khan Arrest: আল কাদির ট্রাস্ট মামলায় পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা তেহরিক-ই-ইনসাফের প্রধান ইমরান খান গ্রেফতার (Imran Khan Arrest)। এই ট্রাস্টটি তেহরিক-ই-ইনসাফ প্রধান ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রীর যৌথ মালিকানায় রয়েছে। এই মামলার জামিন নিতে মঙ্গলবার অর্থাৎ গতকাল ইসলামাবাদ হাইকোর্টে হাজির হয়েছিলেন ইমরান খান। আদালত চত্বরের বাইরে থেকে এদিন রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানি রেঞ্জার্স। ঘটনার খানিক পরেই গোটা পাকিস্তান জুড়ে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পিটিআই সমর্থকদের সঙ্গে দফায় দফায় খণ্ড যুদ্ধ পাক পুলিশ ও রেঞ্জার্সের। এমনকি সেনা ভবনে ঢুকে চলল তাণ্ডব। জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা।
পাকিস্তানের সেনা সদর দফতরে হামলার ঘটনা এই প্রথম। পিটিআই সমর্থকরা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সদর দফতরে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে। শুধু এখানেই শেষ নয়, পিটিআইয়ের উত্তেজিত কর্মী-সমর্থকরা রাওয়ালপিন্ডিতে সেনা সদরদপ্তর এবং লাহোরের একটি সেনানিবাসের ফটক ভেঙে ভিতরে ঢুকে হামলা-ভাঙচুর চালায়। পাশাপাশি পেশোয়ার ও করাচির সেনা সদরদপ্তরেও হামলা চালায় বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে পেশোয়ারের সেনা দপ্তরে আগুন ধরিয়ে দেয় পিটিআইয়ের নেতা-কর্মীরা। আবার লাহোর সেনানিবাসে ভাঙচুরের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর লাহোর শাখার শীর্ষ কর্মকর্তার বাসভবনেও হামলা ভাঙচুর চালিয়েছে উত্তেজিত জনতা। সেসময় সামরিক বাহিনী বিরোধী বিভিন্ন শ্লোগান দেয় তারা। এছাড়া পেশোয়ারে রেডিও পাকিস্তানের একটি ভবন ও করাচিতে একটি পুলিশ ভ্যানে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এককথায় বলা যায়, কার্যত রণক্ষেত্রের পরিস্থিতি সমগ্র পাকিস্তান জুড়ে।
সম্প্রতি আল কাদির ট্রাস্টের জমি হস্তগত করার অভিযোগ এনে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছিল। ক্ষমতাচ্যূত হওয়ার পর থেকেই একের পর এক মামলায় ফাঁসেন ইমরান খান। সব মিলিয়ে এখন তাঁর বিরুদ্ধে ১৩টি মামলা চলছে। এর আগে অন্যান্য বেশ কয়েকটি মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করতে চেয়েছিল পাক পুলিশ। এমনকি তাঁর বাড়িরও দখল নেওয়া হয়েছিল। তবে এর আগের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই গ্রেফতারি এড়াতে পেরেছিলেন পিটিআই প্রধান। এবার জমি দুর্নীতি মামলায় আর রেহাই মিলল না। অবশেষে পাক রেঞ্জার্স-এর হাতে গ্রেফতার হলেন ইমরান খান।
ইমরান খানের গ্রেফতারিতে জ্বলছে পাকিস্তান। ইমরান-সমর্থকদের তাণ্ডবে গতকাল রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় লাহোর, ইসলামাবাদ থেকে করাচি ও মুলতান। তাদের বিক্ষোভ, পাথরবৃষ্টি এবং অবরোধের জেরে রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিলবহু রাস্তাও। বিদ্রোহ দমনে কড়া পদক্ষেপ করল প্রশাসনও। সেনা-পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর আসছে। গভীর রাত পর্যন্ত বিক্ষোভ চলার কথা জানা গিয়েছে। যার জেরে বুধবার অর্থাৎ আজ সমস্ত স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজও একইভাবে বিক্ষোভ চলবে বলে পিটিআইয়ের তরফে জানানো হয়েছে। সকাল ৮ টায় ইসলামাবাদে সমস্ত কর্মী-সমর্থককে জড়ো হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এছাড়া গোটা দেশ জুড়েই ইমরানের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন চলবে বলেও দলের টুইটার হ্যান্ডলে থেকে ঘোষণা করেছিল দলীয় নেতৃত্ব।
এই অবস্থায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গতকাল থেকে পাক প্রশাসনের তরফে পাকিস্তানের বিভিন্ন অংশে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে৷ পাকিস্তান টেলি কমিউকেশন অথরিটি ঘোষণা করেছিল, মোবাইল ব্রডব্যান্ড পরিষেবা গোটা দেশের আপাতত বন্ধ রাখা হচ্ছে৷ এর পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়াও বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ পাকিস্তানে বন্ধ করা হয়েছে ফেসবুক, টুইটার এবং ইউটিউব পরিষেবা। উত্তপ্ত অঞ্চলগুলিতে হাই অ্যালার্টও জারি করা হয়েছে। আজ ইমরান খানকে পুনরায় আদালতে তোলা হতে পারে। এদিকে ভারতীয় সেনার তরফে জানানো হয়েছে, তারা পাকিস্তানের পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে। আন্তর্জাতিক সীমান্তরেখায় পাহারা মজবুত রাখা হয়েছে। পাকিস্তানের অশান্তির কোনও আঁচ যাতে সীমান্তের এপারে ভারতে না পড়ে তা নিশ্চিত রাখতেই এই পদক্ষেপ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং কানাডাও পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে।
এইরকম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।