Cyclone Mocha: অতীতে আমফান, ইয়াসের থেকে শিক্ষা নিয়ে ঘূর্ণিঝড় মোকার মোকাবিলায় কতটা তৎপর নবান্ন?
Cyclone Mocha: অতীতে বাংলা সাক্ষী থেকেছে আমফান, ইয়াসের মতো ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের
হাইলাইটস:
• আবারও মে মাসে আসতে চলেছে আরও এক ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়।
• যার ফলে কতটা প্রভাব পড়বে বাংলায়?
• কতটা প্রস্তুত নবান্ন?
Cyclone Mocha: আবারও ঘূর্ণিঝড়ের ভ্রুকুটি নাড়া দিচ্ছে বঙ্গোপসাগরের বুক। প্রতিবছর মে মাস একের পর এক ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত বাংলা-ওড়িশা উপকূলবর্তী অঞ্চল। এবার আতঙ্কের নাম ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’ (Cyclone Mocha)। হ্যাঁ ইয়েমেনের দেওয়া ঘূর্ণিঝড় মোকা বছরের প্রথম ঘূর্ণিঝড় হিসাবে আছড়ে পড়তে চলেছে বঙ্গোপসাগর উপকূলবর্তী অঞ্চলে। তবে এই ঘূর্ণিঝড়টি ঠিক কবে এবং কোথায় আছড়ে পড়তে চলেছে তা এখনও নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি আবহবিদরা৷ এমনকি এই ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা কী রূপ হবে তাও এখনও পর্যন্ত নিশ্চিত না আবহবিদরা৷
অতীতে আমরা দেখেছি বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড়গুলি প্রভাব সরাসরি বাংলায় আছড়ে না পড়লেও বাংলার উপকূলবর্তী এলাকাগুলি, যেমন- দক্ষিন ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর এইসব জেলাগুলি অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ২০২০ সালে বাংলা-ওড়িশা উপকূলবর্তী আছড়ে পড়েছিল ঘূর্ণিঝড় আমফান। যেটি সারা বাংলা জুড়ে তান্ডবলীলা চালিয়েছিল। যার ফলে কার্যত তছনছ হয়ে গিয়েছিল শহর কলকাতার একাংশ। সেই দৃশ্য এখনও মনে পড়লে বঙ্গবাসীর গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠে। তারই মধ্যে বাংলায় আরও এক ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা। ঠিক তার পরের বছর ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তান্ডবে অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয় রাজ্যের উপকূলবর্তীজেলাগুলি।
গতকাল সন্ধ্যে পর্যন্তও মৌসম বিভাগ ঠিক মতো আপডেট দিতে পারে নি। অবশ্য গতকাল মৌসম ভবনের তরফে বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছিল, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, তামিলনাড়ু এবং অন্ধ্রপ্রদেশ এই চার রাজ্যের কোনও একটির দিকে ধেয়ে আসতে পারে ঘূর্ণিঝড়। যার মধ্যে বাংলা এবং ওড়িশা ঘূর্ণিঝড়ে সব থেকে বেশি ঝুঁকির মুখে রয়েছে বলেই মনে করছে হাওয়া অফিস। মৌসম বিভাগ সূত্রে খবর, আজ অর্থাৎ শনিবার দুপুরের পরই দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরের বুকে হতে চলেছে ঘূর্ণাবর্ত। যা আগামী ২৪ ঘণ্টায় পরিণত হবে নিম্নচাপে। পরে তা আরও শক্তি সঞ্চয় করে ৮ই মে নাগাদ গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। অবশেষে ৯-১০ই মে নাগাদ গভীর নিম্নচাপে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে আছড়ে পড়তে পারে উপকূলবর্তী কোনও একটি রাজ্যে। আগামীকাল অর্থাৎ রবিবার থেকেই পর্যায়ক্রমে মোকা-র সর্বোচ্চ সম্ভাব্য গতিবেগ ও ল্যান্ডফলের সম্ভাব্য অভিমুখ জানাতে শুরু করবে আলিপুর আবহাওয়া দফতর।
তবে এখনও পর্যন্ত সঠিক আপডেট না থাকার পরেও প্রস্তুত থাকছে ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকার। ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েকের নেতৃত্বে গত মঙ্গলবার উচ্চস্তরীয় বৈঠক হয়েছে। একেবারে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার ওড়িশা সরকার সবরকম ভাবে প্রস্তুত। ইতিমধ্যে সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকাগুলির জন্য বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। অন্যদিকে অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়েই আর কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি নয় নবান্ন। তাই এবার আগেভাগে ই সংশ্লিষ্ট দফতরগুলিকে সতর্ক করেছে নবান্ন। ইতিমধ্যে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর নেতৃত্বে নবান্নে উচ্চস্তরীয় বৈঠকও হয়। নবান্ন সূত্রে খবর, বঙ্গোপসাগরের পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে ১০ই মে থেকেই কেন্দ্রীয়ভাবে বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য ২৪ ঘন্টার কন্ট্রোলরুম চালু করা হবে। কন্ট্রোল রুম চলবে ২০ই মে পর্যন্ত।
আবার রাজ্যের উপকূলবর্তী অঞ্চলের বিপজ্জনক নদী বাঁধগুলির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার কথাও বলেছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব। ইতিমধ্যেই সেচ, বিপর্যয় মোকাবিলা, ত্রাণ সহ বিভিন্ন দফতরকে নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে। বিশেষ করে নদী বাঁধগুলিতে নজর দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সেচ দফতরের আধিকারিকদের। কারণ ঘূর্ণিঝড়গুলিতে রাজ্যের উপকূলবর্তী এলাকাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই উপকূলবর্তী জেলাগুলি জেলাশাসক এবং প্রশাসনকে বাড়তি নজর দিতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় সরাসরি এখানে আছড়ে না পড়লেও অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত এবং ঝোড়ো হাওয়ায় অনেক দুঃসংবাদ শোনা যায়। তাই বিশেষ করে জেলা প্রশাসনগুলিকে বলা হয়েছে বিশেষত জল বের করার জন্য পাম্প, গাছ কাটার প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি যাতে পর্যাপ্ত সংখ্যায় থাকে সে বিষয়গুলি নিশ্চিত করতে। এমনকি বিদ্যুৎ দফতরকেও বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছিল নবান্নের তরফে। সূত্রের খবর, ঝড়ের পূর্বাভাস মিলতেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে কলকাতা পুরসভা। কোথাও যাতে কোনও অপ্রীতিকর অবস্থা না হয় অথবা বিদ্যুৎ-এর কারণে কারোর মৃত্যু সংবাদ না আসে তাই এবারে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় আগে থেকেই প্রস্তুত নবান্ন।
এইরকম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।