Abhishek Banerjee: জামালপুর ক্যাম্প থেকে রায়নার সভায় যাওয়ার পথে অভিষেকের কাছে রাস্তায় আলো জ্বলছে না বলে নালিশ এক RSS কর্মীর
Abhishek Banerjee: ভিডিওটি তৃণমূলের অফিসিয়াল ট্যুইটার হ্যান্ডেল থেকে পোস্ট করা হয়েছে
হাইলাইটস:
• অভিষেকের জনসংযোগ যাত্রা এখন পূর্ব বর্ধমান জেলায় প্রবেশ করেছে
• গতকাল তাঁর কাছে রাস্তায় আলো জ্বলছে না বলে অভিযোগ করেন এক RSS কর্মী
• রায়নার সভা থেকে এই কথা টেনে এনে বিজেপিকে নিশানা অভিষেকের
Abhishek Banerjee: গত ২৫শে এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসংযোগ যাত্রা। উত্তরবঙ্গ পর্ব মিটিয়ে জনসংযোগ যাত্রা প্রবেশ করেছে দক্ষিণবঙ্গের মাটিতে প্রবেশ করেছে। গত বৃহস্পতিবার সেই যাত্রার ১৭তম দিনে ২ হাজার কিলোমিটার পথ ইতিমধ্যে অতিক্রম করে ফেলেছেন অভিষেক। যা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকের থেকে অনেকটাই বেশি। আজ এই জনসংযোগ যাত্রা ২১তম দিনে প্রবেশ করেছে। কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদহ, মুর্শিদাবাদ এবং বীরভূম শেষ করে এখন জনসংযোগ যাত্রা রয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলায়। আজও এই জেলার বিভিন্ন প্রান্তে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) জনসভা এবং রোড শো রয়েছে।
তৃণমূল সূত্রে খবর, ৩,৩৪৩টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ইতিমধ্য়েই ১,০০৬টিরও বেশি গ্রাম পঞ্চায়েতে পৌঁছে গিয়েছে জন সংযোগ যাত্রা। ২৪ ঘণ্টা পরিশ্রম করে রাজ্যের প্রতিটি বাসিন্দার কাছে পৌঁছে যেতে পেরেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে একবার চোখের দেখা দেখার জন্য সাধারণ মানুষের মধ্যেও উদ্দীপনার শেষ নেই। ব্যাপক সাড়া ফেলেছে তৃণমূলের জনসংযোগ যাত্রা। পঞ্চায়েত ভোটের আগে যা মাস্টারস্ট্রোক হিসাবে কাজ করবে রাজ্যের শাসকদলের। গতকাল বিকেলে পূর্ব বর্ধমানের রায়না বিধানসভার অন্তর্গত বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে জনসংযোগ সারছিলেন অভিষেক। তার সাথেই শুনছিলেন গ্রামবাসীদের অভাব-অভিযোগের কথা। সকলের অভিযোগ শোনার পর তিনি আশ্বাস দেন, সংশ্লিষ্ট দপ্তরে কথা বলে তিনি দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করবেন।
অন্যদিকে জামালপুর ক্যাম্প থেকে বেরিয়ে রায়নায় সভায় যাওয়ার পথে তাঁর গাড়ি দাঁড় করান হুবহু RSS- উর্দিতে সজ্জিত এক যুবক। তৃণমূল সূত্রে খবর, ওই যুবক নাকি একজন RSS কর্মী। ওই যুবক অভিযোগ জানান, তাঁদের এলাকার পথে আলো জ্বলে না। বিডিও অফিসে জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি। এমনকি বিজেপি নেতারাদেরও বলেছেন, তারপরও সমাধান হয়নি এই গুরুতর সমস্যার। এই সমস্যা বিগত ৫-৬ বছর ধরে চলে আসছে বলে জানান তিনি। যার ফলে ব্রিজ পারাপারকারীদের সমস্যা হয়। একইসঙ্গে ওই যুবক বলেন, তাঁর স্কুলের কাছে কোনও ল্যাম্পপোস্ট নেই। এর সমাধান করার জন্য অভিষেক ‘স্যর’-এর কাছে হাতজোড় করে আবেদন করেন আরএসএস কর্মী। সেই অভিযোগগুলি গাড়িতে বসেই মন দিয়ে শোনেন অভিষেক। তারপর ওই যুবকের নাম, ফোন নম্বর সব নিয়ে আশ্বাস দেন দ্রুত সমাধান করার।
এই ঘটনার ভিডিওটি তৃণমূলের অফিসিয়াল ট্যুইটার হ্যান্ডেল (AITC) থেকে পোস্ট করা হয়েছে। এবং জানানো হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস এভাবেই রাজ্যজুড়ে মানুষকে পরিষেবা দিচ্ছে।
Today, during #JonoSanjogYatra in Raina, a RSS worker reached out to Shri @abhishekaitc and raised his concern about the need of lampposts in that area.
Our leader assured him of immediate resolution!
We will continue serving people, regardless of their political affiliation. pic.twitter.com/bHYImYL3Sz
— All India Trinamool Congress (@AITCofficial) May 14, 2023
এরপরই রায়নার সভায় পৌঁছে, এই যুবককের প্রসঙ্গ টেনে এনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে কড়া ভাষায় নিশানা করেন তিনি। তিনি বলেন, “বিজেপির একজন কার্যকর্তা, আমাকে আলোর কথা বলেছেন। তিনি সুকান্ত, শুভেন্দুর কাছে আবেদন করছেন না, মোদি-শাহের কাছেও আবেদন করছেন না। আমার কাছে আবেদন করছেন। কারণ তিনি জানেন, তৃণমূলই পারে সমস্যার সমাধান করতে। রাজনীতি রাজনীতির জায়গায় থাকুক। এরকম ছেলেদের স্যালুট করি। রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে তুমি মানুষের দাবিদাওয়ার কথা নিয়ে সরব হয়েছ। আমাদের গর্ব এটা।” RSS কর্মী বলে যাকে দাবি করা হচ্ছে, সে যদি সত্যিই একজন RSS কর্মী হন তবে এই পুরো ঘটনাটি বিজেপির ক্ষেত্রে যথেষ্ট সন্তোষজনক বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহল। অবশ্য এই বিষয়ে বিজেপির তরফে জানানো হয়েছে, ছেলেটি RSS করে কী না তা তাদের জানা নেই।
এই দিনের সভা থেকে অভিষেক আবারও কেন্দ্রীয় বঞ্চনার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “১ লাখ ১৫ হাজার কোটি বাংলার প্রাপ্য টাকা কেন্দ্র আটকে রেখে দিয়েছে। আমি যদি ভুল বলি তবে আমার নামে মামলা করে দিক। গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রীর কাছে আমি নিজে গেছি ২৫ জন সাংসদ নিয়ে। কিন্তু মন্ত্রী থেকেও আমাদের সঙ্গে দেখা করেননি। তিনি আরও বলেন, “আপনারা যারা এখানে ১০০ দিনের কাজের সঙ্গে যুক্ত, তাঁরা শুনুন। কেন্দ্রীয় সরকার থেকে ১০০ দিনের কাজের টাকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাই অসুবিধে হচ্ছে। কিন্তু আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি। দিল্লিতে গিয়ে আমি ধরনা দেব, আর আপনাদের হকের টাকা নিয়ে তবেই আসব। একটু ধৈর্য ধরুন। তৃণমূল কংগ্রেস কথা দিয়ে কথা রাখে।”
বিশেষ করে এদিন তিনি বিজেপির কর্নাটকের পরাজয়ের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘‘১৫ দিন আগে বাংলায় এসে অমিত শাহ বলেছিলেন দিদি ২০২৫ সালে আপনার সরকার শেষ। আর আমরা কি দেখলাম, কর্নাটকে ডাবল ইঞ্জিন সরকার মুখ থুবড়ে পড়েছে। দক্ষিণ ভারত থেকে মুছে গিয়েছে। পূর্ব ভারতেও বিজেপি নেই। আছে শুধু মধ্য ও পশ্চিম ভারতে। তাও শেষের শুরু হয়ে গেছে, চলে যাওয়া শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা।’’ তাঁর অভিযোগ, ২০২১ সালের বাংলার নির্বাচনে পরাজয়ের পরেই বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের পাওনা ইচ্ছাকৃত আটকে রেখেছে। তিনি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর দল তৃণমূলকে জেতাতে থাকলে আপনারা সকলে কন্যাশ্রী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পাবেন। কিন্তু যদি বিজেপির উপর ভরসা দেখান তবে গ্যাসের দাম, পেট্রলের দাম দিনের পর দিন বাড়তে থাকবে।” রায়নার জনসভা থেকে একের পর এক অভিযোগ তুলে বিজেপিকে নিশানা করেন অভিষেক।
এইরকম রাজনৈতিক বিষয় প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।