Abhishek Banerjee: জঙ্গলমহলের দিকে বিশেষ নজর দিতে আগামীকাল বাঁকুড়া সফরে অভিষেক বন্দোপাধ্যায়
আগামীকাল ওন্দা স্টেডিয়ামে একটি জনসভা আছে অভিষেকের
হাইলাইটস:
•আগামীকাল জঙ্গলমহল সফরে অভিষেক
•বাঁকুড়ার ওন্দা স্টেডিয়ামে একটি জনসভা করবেন তিনি
•জঙ্গলমহলকে পাখির চোখ করে দেখছে তৃণমূল
Abhishek Banerjee: পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক না হলেও মে মাসেই হতে চলেছে রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচন। ফলে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক দলগুলিরও প্রস্তুতি তুঙ্গে। বিশেষ করে জঙ্গলমহলের দিকে নজর দিতে চাইছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। জেলা সংগঠনকে একদম বুথ স্তর পর্যন্ত মজবুত করতে গতকাল বাঁকুড়া সফরে আসছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বও জঙ্গলমহলকে পাখির চোখ হিসাবে দেখতে চাইছে। বুধবার অর্থাৎ আগামীকাল বাঁকুড়ার ওন্দা স্টেডিয়ামে একটি জনসভা করবেন অভিষেক।
আগেই জঙ্গলমহল লাগোয়া মূলত জেলাগুলির সাংগঠনিক নেতৃত্বদের সঙ্গে নিয়ে আগেই বৈঠক করেছেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) এবং রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী (Subrata Bakshi)৷ ফলে গতকাল অভিষেকের জঙ্গলমহলের সভা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহল। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে জঙ্গলমহল জুড়ে ভালো ফলাফল করেছিল তৃণমূল। কিন্তু ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ছবিটা পুরোপুরি বদলে যায়। প্রায় গোটা জঙ্গলমহলই চলে যায় পদ্ম শিবিরের দখলে।
ঠিক তারপর থেকেই পদ্ম শিবির জোর দিতে শুরু করে জঙ্গলমহলের এই সব এলাকায়। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগেও জোরকদমে প্রচার চালানো হয় বিজেপির তরফে। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস জঙ্গলমহলে তাদের হারানো জমি কিছুটা পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হলেও পদ্মের দাপট একফোঁটাও কম হয়নি ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে। দু’বছর সংগঠন মজবুত করে মাঠে নেমে তারা সফল। ফলে এইবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনকে পাখির চোখ করছে রাজ্যের শাসকদল। কারণ বছর ঘুরলেই আছে লোকসভা নির্বাচন।
উত্তরবঙ্গের দিকে যেমন বিশেষ নজর রয়েছে তৃণমূল নেতৃত্বের, তেমনই জঙ্গলমহলকেও বিশেষ হাতিয়ার বানাতে চাইছে তারা। এই পরিস্থিতিতে গতকাল জঙ্গলমহল সফরে আসবেন অভিষেক। বাঁকুড়ার ওন্দা স্টেডিয়ামে একটি জনসভা করবেন তিনি। তাঁর জনসভা ঘিরে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের উন্মাদনা প্রায় তুঙ্গে। সেখান থেকেই জঙ্গলমহলের যাত্রা শুরু করতে চান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচন এবং ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে এখন থেকেই ঘুটি সাজাতে শুরু করেছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। গতকাল দলের নেতাদের নিয়ে বৈঠক করে তিনি সাফ বুঝিয়ে দেন, ব্যক্তিস্বার্থের জন্য নয়, মানুষের স্বার্থের জন্য কাজ করতে হবে। দল যে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির দিকে জোর দিচ্ছে সেই বিষয়ে আরও একবার মনে করিয়ে দিয়েছে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব।
তিনি আরও বলেন, ‘কে কী কাজ করছে তার পূঙ্খানুপুঙ্খ রিপোর্ট যে দল পাচ্ছে তা বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। শুধু নিজের দলীয় কার্যালয়ে বসে থাকা আর সব কাজ হয়ে গিয়েছে, এটা বলা যাবে না। প্রতিটি স্থানে নিজেদের যেতে হবে। বুথ ভিত্তিক অসুবিধা কোথায় কোথায় হচ্ছে তা জানতে হবে। কাজ করে যেতে হবে।’
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জঙ্গলমহল সফরকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। গতকাল সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সৌমিত্র খাঁ বলেন, ‘বুধবার পশ্চিমবাংলার আলিবাবা তাঁর ৪০ চোরকে নিয়ে ওন্দাতে আসছেন। তিনি যেখানেই যাচ্ছেন, আইএএস ও আইপিএস আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে চুরি করার পরিকল্পনা করছেন। এখানকার গরিব মানুষদের ৩০০ টাকার বালি ৩ হাজার টাকায় কিনতে হচ্ছে, বাংলা জুড়ে চাকরি প্রতারণা হয়েছে, কুন্তল-শান্তনুর সঙ্গে কী সম্পর্ক, সেই নিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কথা বলতে হবে।’
তবে এখানেই শেষ নয়, তিনি এদিন ‘আলিবাবা ও ৪০ চোরে’র কটাক্ষ ছাড়াও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কয়লা ভাইপো বলে তোপ দাগেন। তিনি বলেন, কোটি কোটি টাকা তাঁর শ্যালক ও শ্যালিকার নামে চলে যাচ্ছে কী করে, তার জবাব ‘কয়লা ভাইপো’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিতে হবে। এমনকি তৃণমূলকে আদিবাসী বিরোধীও বলেন তিনি৷ আবার কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষ যে আন্দোলন করছেন দিনের পর দিন ধরে তারও কেন সুরাহা এখনও করেনি রাজ্য সরকার তারও উত্তর চেয়েছেন অভিষেকের থেকে।
অভিষেকের সভার পরে ওই একই জায়গাতে সভা করবেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এবার আগামীকাল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা থেকে বিজেপি সাংসদদের জন্য ঠিক কী কী উত্তর অপেক্ষা করছে সে দিকেই নজর রাজনৈতিক মহলের।
এইরকম রাজনৈতিক বিষয়ক প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।