Bangla News

ফেব্রুয়ারিতেই ছিল রেকর্ড ভাঙা গরম, তীব্র গরমের আশঙ্কায় বাংলার মানুষ

মার্চ মাসের শুরু থেকেই তীব্র দাবদাহের পূর্বাভাস

হাইলাইটস:

•ফেব্রুয়ারিতে কলকাতার গড় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস

•সর্বোচ্চ গড় তাপমাত্রা ছিল ২৯.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস

•যা শত বছরের রেকর্ড ভাঙার সাথে তুলনা করা হচ্ছে

গত ফেব্রুয়ারি মাস ঠান্ডা দিয়ে শুরু হলেও মাসের শেষ দিকে শীতের ঠান্ডা ভাব যেন কর্পূরের মতো উধাও হয়ে গিয়েছিল। ভারতে গত ফেব্রুয়ারি মাসে গরম শতাধিক বছরের রেকর্ড ভেঙেছে। আবার মার্চের শুরু থেকেই এক ধাক্কায় তাপমাত্রার পারদ বেড়ে গিয়েছে অনেকটাই। আর সামনের দিনগুলিতেও তীব্র দাবদাহের পূর্বাভাস দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। মার্চ মাস থেকে শুরু করে আগামী মে মাস পর্যন্ত সারা ভারতে এই দাবদাহ দেখা দেওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। এটি সত্য হলে ব্যাহত হতে পারে গম উৎপাদন। ভারতে বছরে একবারই গমের চাষ হয়। অক্টোবর-নভেম্বর মাসে চারা রোপন করা হয় এবং মার্চ মাস থেকে ফসল কাটা শুরু হয়। ফলে গম উৎপাদনকারী রাজ্যগুলি ক্ষতির মুখে পড়তে পারে।

শুধু তাপমাত্রা বেড়েছে তাই নয়। বরং ফেব্রুয়ারিতে স্বাভাবিকের চেয়ে বৃষ্টিপাত ৬৮ শতাংশ কম হয়েছে। গত বছর প্রচণ্ড গরম এবং বৃষ্টির অভাবে ভারতে গম, রাই, সরিষা ও ছোলার উৎপাদন স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম হয়েছিল। গমের উৎপাদন কম হওয়ায় বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ গম রপ্তানিকারক দেশ ভারত দেশীয় চাহিদা মেটাতে গম রপ্তানি নিষিদ্ধ করে। যা ইউক্রেইন যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে। তীব্র গরমে বিদ্যুতের চাহিদাও বেড়ে যাবে এবং চাহিদার তুলনায় উৎপাদন কম হওয়ার দেখা দেবে লোডশেডিং। তাপমাত্রার বিষয়ে সতর্ক করে ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় থেকে সব রাজ্য ও ইউনিয়নে গত মঙ্গলবার চিঠি পাঠানো হয়েছে। সেই চিঠিতে বলা হয়, দেশের কোথাও কোথাও এরই মধ্যে অস্বাভাবিক বেশি তাপমাত্রা লক্ষ্য করা গেছে।তাই কেন্দ্রীয় সরকার থেকে দেশেজুড়ে ছড়িয়ে থাকা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরগুলোকে ‘তাপদাহ জনিত স্বাস্থ্য ঝুঁকি মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের’ নির্দেশ জারি করা হচ্ছে।

আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, কলকাতায় গত মাসে গড় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যেখানে গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৯.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷ গত বুধবার অর্থাৎ ১লা মার্চ কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৯.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। ওইদিন কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৩.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের থেকে ৩ ডিগ্রি বেশি। আপেক্ষিক আর্দ্রতা সর্বোচ্চ ৮৮ শতাংশ। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের সব কটি জেলার আবহাওয়া শুকনো থাকবে। আগামী ৪-৫ দিন এই জেলাগুলিতে রাতের তাপমাত্রার পরিবর্তন না হলেও, দিনের তাপমাত্রা ২-৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। কিন্তু দার্জিলিং এবং কালিম্পং-এর কোনও কোনও জায়গায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, দোলের আগে তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত হতে পারে।

আবহবিদদের মতে, পশ্চিমী ঝঞ্ঝার ফলে তাপমাত্রা বেড়ে চলেছে পশ্চিমবঙ্গে। কমেছে উত্তুরে হাওয়ার দাপটও। আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, বাংলার পশ্চিম দিকে উত্তরপ্রদেশের কাছে অবস্থান করছে এই পশ্চিমী ঝঞ্ঝা। শীতকালেও শীতের আমেজ না মেলার নেপথ্যে দায়ী ছিল এই ঝঞ্ঝাই। তবে বেশি দিন এই ঝঞ্ঝা স্থায়ী হবে না। খুব শীঘ্রই কেটে যাবে।

আবহাওয়া সম্পর্কে সমস্ত আপডেট পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button