Bangla News

Sourav Ganguly: বিজেপি শাসিত ত্রিপুরার পর্যটন দফতরের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর পদে নিযুক্ত হলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়

Sourav Ganguly: ত্রিপুরা সরকারের এই প্রস্তাবকে করলেন 'প্রিন্স অফ ক্যালকাটা'

হাইলাইটস:

• বিজেপি শাসিত ত্রিপুরার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হচ্ছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়

• সৌরভের বেহালার বাড়িতে এসে তাঁর সাথে বৈঠক করেছেন ত্রিপুরার পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী

• এনিয়ে আবারও রাজনৈতিক জল্পনা শুরু হয়েছে

Sourav Ganguly: বিজেপি শাসিত ত্রিপুরার পর্যটন দফতরের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হচ্ছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক তথা প্রাক্তন বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। আইপিএলে দিল্লি ক্যাপিটালসের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলানোর পর আরও এক দায়িত্ব এবার সৌরভ কাঁধে। সূত্রের খবর, কয়েক দিন আগে ত্রিপুরা সরকারের তরফে তাঁর কাছে এই প্রস্তাবটি আসে। কিছুদিন আলোচনা করার পর, ত্রিপুরা সরকারকে সবুজ সঙ্কেত দেন তিনি। সৌরভকে রাজ্যের পর্যটন ক্ষেত্রের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর করতে গতকাল কলকাতায় আসেন ত্রিপুরার পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। তারপর সৌরভের বেহালার বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন সুশান্তবাবু। জানা গিয়েছে, এদিন সৌরভের সঙ্গে বৈঠকে সুশান্তবাবুর পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা পর্যটন দফতরের সচিব উত্তমকুমার চাকমা এবং ওই দফতরের শীর্ষ আধিকারিক তপনকুমার দাস।

তবে সৌরভ যে বিজেপি শাসিত ত্রিপুরার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হচ্ছেন সে নিয়ে রাজনৈতিক জল্পনাও শুরু হয়েছে। বিষয়টি যে আকস্মিক ভাবে ঘটেছে, তা-ও নয়। ফলে মনে করা হচ্ছে, তিনি ভেবেচিন্তেই সম্মতি দিয়েছেন। তবে কী তিনি বিজেপির দিকে পা বাড়াতে চাইছেন? এমন অনেক প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে রাজনৈতিক মহলে। কারণ এর আগে একুশের বিধানসভা নির্বাচনের সময় সৌরভকে সরাসরি বাংলার বিধানসভা ভোটে তাদের ‘মুখ’ হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল বিজেপি, এমনটাই শোনা যাচ্ছিল। তবে মহারাজ বিজেপির এই প্রস্তাবে রাজী হয়নি। ফলে অনেকটাই দূরত্ব তৈরি হয়েছিল বিজেপির সাথে। তাই তাঁকে বিবিসিআই সভাপতি পদও খোয়াতে হয়েছিল, এমনটাই সূত্রের খবর।

সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বাংলা পেরিয়ে গোটা বাঙালি সমাজের কাছে আইকন। তাঁর সেই জনপ্রিয়তাকেই কাজে লাগাতে চাইছে বিজেপি শাসিত ত্রিপুরা সরকার। সৌরভের এভাবে ত্রিপুরা সরকারের প্রস্তাবে রাজি হয়ে যাওয়াটাও বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। আসলে মহারাজকে ঘিরে দীর্ঘদিন ধরেই রাজনৈতিক মহলে জল্পনা-কল্পনা রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর ভালো সম্পর্ক, আবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গেও তাঁর সুসম্পর্ক রয়েছে। গতবছর দুর্গাপুজোর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিপ্রাপ্তিতে রেড রোডে মুখ্যমন্ত্রীর ঠিক পাশেই দেখা যায় সৌরভকে। মুখ্যমন্ত্রীর সাথে তাঁকে সরকারি নানা অনুষ্ঠানেও দেখা যায়। কিন্তু ত্রিপুরার এহেন প্রস্তাবে রাজী হয়ে আবারও রাজনৈতিক ময়দানে নামার জল্পনাকে আরও একটু উস্কে দিলেন তিনি, একথা বলাই যায়। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর তরফে এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। তবে বঙ্গ বিজেপি নেতারা শাসকদলকে আক্রমণ করতে ছাড়েনি। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, ‘‘বাংলায় অনেক কৃতী এবং যশস্বী মানুষ রয়েছেন। যাঁরা সর্বভারতীয় ক্ষেত্রেও বিখ্যাত। সৌরভ তাঁদেরই একজন। কিন্তু তাঁকে রাজ্যের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর নিয়োগ না করে শাহরুখ খানকে বাইরে থেকে এনে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর করা হয়েছে! উনি তো বহিরাগত।’’

প্রসঙ্গত, গত বছরেই সিএবি কর্তাদের সঙ্গে মনোমালিন্যের জেরে বাংলা ছেড়েছিলেন ঋদ্ধিমান সাহা। বাংলা দল ছেড়ে ত্রিপুরা দলে যোগ দিয়েছেন মিডল অর্ডার ব্যাটার সুদীপ চট্টোপাধ্যায়ও। তাঁরা দুজনেই ত্রিপুরার রঞ্জি দলে নাম লিখিয়েছিলেন। এখন ঋদ্ধিমান ত্রিপুরা দলের অধিনায়ক তথা মেন্টর। উল্লেখ্য, একর আগে ত্রিপুরা ক্রিকেট সংস্থার প্রধান পদে থেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা নিজে। এই আবহে রাজ্যের পর্যটনকে জাতীয় মঞ্চে তুলে ধরতে বাংলার সৌরভের দ্বারস্থ হয় তাঁর সরকার। ত্রিপুরা প্রশাসনের দাবি, সৌরভ ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডার হলে তাদের রাজ্যের পর্যটনের শিল্পে জোয়ার আসবে।

সৌরভের সাথে সাক্ষাতের পর ত্রিপুরার পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী জানিয়েছেন, আইপিএল চলাকালীনই তাঁরা সৌরভের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওই প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সৌরভ তখনই নীতিগত সম্মতি দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি দিল্লিতে থাকায় বিষয়টি বাস্তবায়িত হয়নি। তাঁর দলের আইপিএল অভিযান শেষ হওয়ার পর সৌরভ কলকাতায় ফেরামাত্রই ত্রিপুরার পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত তাঁর দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে মঙ্গলবার সৌরভের বাড়িতে যান। ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার সঙ্গেও সৌরভের একপ্রস্ত কথা হয় বলেই খবর। তার পরেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়। জুনের প্রথমে সৌরভের লন্ডনে যাওয়ার কথা। তিনি ফিরলে তাঁর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হওয়ার বিষয়টি খাতায়কলমে মিটিয়ে ফেলা হবে বলেই জানা যাচ্ছে। তার পরে সৌরভ ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় যেতে পারেন। ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহাও সৌরভের সাথে ফোনে কথা বলেন।

ফেসবুক পোস্টে ত্রিপুরার পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী লেখেন, ‘আমাদের ত্রিপুরা রাজ্যের পর্যটনকে সারা বিশ্বের সামনে তোলে ধরার জন্য প্রয়োজন বহুল প্রচার ও সঠিক ব্রান্ডিং। এ জন্য আমাদের দরকার এমন একজন জনপ্রিয় ব্রান্ড অ্যাম্বাসেডর যাঁকে সারা বিশ্ব চেনে। ত্রিপুরার পর্যটনকে সারা বিশ্বের সামনে তোলে ধরতে আমাদের সবার প্রিয় দাদা ভারতের ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের চেয়ে জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব আর কে হতে পারে?’ পরে অবশ্য টুইট করে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা লেখেন, ‘খুব গর্বের সঙ্গে জানাতে চাই যে ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ত্রিপুরা পর্যটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হওয়ার প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন। আজকে তাঁর সঙ্গে ফোনে আমার কথা হয়েছে। আমি নিশ্চিত যে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় আমাদের সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় রাজ্যের পর্যটন ক্ষেত্রে উন্নতি হবে।’ ফলে বলা যায় সৌরভ যদি ত্রিপুরা পর্যটনের মুখ হন তাহলে নিঃসন্দেহে সে রাজ্যে পর্যটনের জনপ্রিয়তা অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে।

এইরকম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button