Bangla News

Abhishek Banerjee: তৃণমূলের জনজোয়ার যাত্রার দ্বিতীয় পর্বে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বাঁকুড়ার জনসভা থেকে সরাসরি আক্রমণ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে

Abhishek Banerjee: বাঁকুড়ার সোনামুখীর জনসভা থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দাগেন তিনি

হাইলাইটস:

• গতকাল বাঁকুড়া থেকেই শুরু হয়েছে তৃণমূলের জনজোয়ার যাত্রার দ্বিতীয় পর্ব

• সোনামুখীর জনসভা থেকে তিনি নাম না করে সরাসরি আক্রমণ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে

• অবশ্য বিজেপি বিষয়টিকে হতাশা ও আতঙ্কের বহিঃপ্রকাশ হিসেবেই দেখছে

Abhishek Banerjee: কুন্তল ঘোষের চিঠি সংক্রান্ত মামলায় গত শুক্রবারই সিবিআইয়ের তরফ থেকে নোটিশ পাঠানো হয়েছিল তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর বাঁকুড়ার সোনামুখীতে রোড শেষ করে তড়িঘড়ি উদ্দেশ্যে রহনা দিয়েছিলেন তিনি। শনিবারই তিনি সিবিআই দফতরে হাজিরা দেন। প্রায় সাড়ে ৯ ঘন্টা ধরে তাঁর জিজ্ঞাসা পর্ব চলে। সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসা পর্ব মিটিয়ে তিনি গতকাল আবারও বাঁকুড়ার ইন্দাস থেকে তাঁর জনসংযোগ যাত্রা শুরু করেন। এবার বাঁকুড়ার নবজোয়ার যাত্রা থেকে নাম না করে সরাসরি নিশানা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে।

গতকাল সোনামুখীর জনসভা থেকে অভিষেক একের পর এক তোপ দাগলেন বিজেপি তথা কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, “আজ ২৬ দিন। অনেকে ভেবেছিল পারব না৷ ইডি, সিবিআই লাগাতে গিয়ে হিতে বিপরীত হয়েছে। যা লোক হচ্ছিল তার তিনগুণ হচ্ছে। বাঁকুড়ার এই গরমে মানুষ বেরিয়ে আসছেন। আমি তিনদিন স্থগিত করেছিলাম। আজ সেখানেই অধিবেশন করছি। এই জেলার সংগঠন আমাদের তুলনামূলক ভাবে দুর্বল।” এমনকি প্রার্থীপদ বাছাই নিয়ে দলের অন্দরে কোন্দল যে কোন পর্যায়ে রয়েছে তা জনসংযোগ কর্মসূচিতে একাধিক জেলায় গিয়ে টের পেয়েছেন অভিষেক। এ দিনের সভায় তিনি বলেন, ‘‘দল যাঁকে প্রার্থী করবে, তাঁকেই জেতাতে হবে। কেউ নির্দল হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে তাঁর জন্য দলের দরজা চিরকালের জন্য বন্ধ।’’

উনিশের লোকসভা নির্বাচনে বাঁকুড়া এবং বিষ্ণুপুর এই দুই লোকসভা কেন্দ্র তৃণমূলের হাতছাড়া হয়েছে। ফলে গোটা বাঁকুড়া জেলায় এই জনসংযোগ তৃণমূলের কাছে সাংগঠনিক দিক থেকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। সে কথা স্বীকার করেই এদিন অভিষেক বলেন, ‘‘এই রকম দুর্বল জায়গায়ও মানুষ আস্থা দেখিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েছেন। তাঁদের জন্য এমন পঞ্চায়েত তৈরি করতে হবে, যাতে কাজ হয়।’’ পঞ্চায়েত নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ সামনে এসেছে। ফলে এবার সরাসরি মাঠে নেমেছেন তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড। তিনি কর্মীদের উদ্দেশ্যে সাফ বার্তা দেন, ‘‘মানুষ গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা প্রধানের বাড়ির দরজায় বসে থাকবেন কেন? এ বার প্রতি তিন মাস অন্তর কাজ পর্যালোচনা করে প্রধানদের মেয়াদ বাড়ানো হবে। যিনি কাজ করবেন না, তিনি পদে থাকবেন না। পঞ্চায়েতের দায়িত্ব পাওয়া মানে করে খাওয়ার লাইসেন্স নয়। মানুষকে পরিষেবা দিতে হবে।’’ পঞ্চায়েতে হওয়া নানা দুর্নীতি দল যে বরদাস্ত করবে না, একথা আবারও বুঝিয়ে দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

এখানেই শেষ নয়, নাম না করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দিকেও চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন অভিষেক। তিনি বলেন, “কেউ ভাবেনি ১০ বছর আগে মোদি প্রধানমন্ত্রী হবেন৷ ১০ বছর পরে কি হবে কেউ জানে? ইডি, সিবিআই লাগাক আমার কেশাগ্র স্পর্শ করতে পারবে না। আমার বয়স ৩৬, ওনার বয়স ৭২৷ আমার দ্বিগুণ বয়সে আপনি লড়াই করতে চাইলে আসুন না। ইডি, সিবিআই লাগিয়ে লড়াই না করে, জনতার মাঝে এসে লড়াই করুন৷ মানুষের দরবারে আসুন। ইডি, সিবিআই লাগিয়ে বাংলার টাকা বন্ধ করে কী হবে? মানুষ তৃণমূলকে চাইলে কিছু করতে পারবেন না।” একসময় গরু ও কয়লা পাচার নিয়ে অভিষেকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের জবাবে তিনি আঙুল তুলেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দিকে। এবার তিনি সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেই আক্রমণ করলেন।

তৃণমূলের জনজোয়ার যাত্রার দ্বিতীয় পর্বে গতকাল অভিষেকের রোড শো-তে তাঁকে দেখতে উপচে পড়েছিল ভিড়। সেই জনপ্লাবন দেখে আক্ষরিক অর্থেই কার্যত আবেগে ভাসলেন অভিষেক। সোনামুখীর জনসভা থেকে বিজেপিকে তুমুল কটাক্ষ করে অভিষেক বলেন, “এই সোনামুখীতে দাঁড়িয়ে বলে গিয়েছিলাম, ক্ষমতা থাকলে সিবিআই গ্রেফতার করুক৷ বুক চিতিয়ে ঢুকেছি, বুক চিতিয়ে বেরিয়েছি। আগামী দিন যত ইডি, সিবিআই লাগবে, তত আন্দোলন বাড়বে। ৯ ঘন্টা পর বেরিয়ে আসায় ওরা ফুস। যা ক্ষমতা প্রয়োগ করার করুন। আমাদের কি ‘গদ্দার’ ভাবছেন? মেরুদণ্ড সোজা রেখে কথা বলি। গলা কেটে দিলেও জয় বাংলা বেরোবে৷” সুতরাং বলা যায় জনজোয়ার যাত্রার দ্বিতীয় পর্বে ফিরেই অভিষেক আক্রমণাত্মক রূপে ধরা দিলেন। অবশ্য বিজেপি অভিষেকের এই মন্তব্যগুলিকে হতাশা ও আতঙ্কের বহিঃপ্রকাশ হিসেবেই দেখছে। বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘হতাশা এবং আতঙ্ক থেকেই এই সব অপ্রাসঙ্গিক কথা বলছেন অভিষেক।” এইদিকে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, “৩৬ বছরেই যদি কেউ এত দুর্নীতি করে, ৭২ এ গিয়ে কি করবে? মোদী ৫০ বছর ধরে সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনে আছেন। তাকে যারা কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করেছিল, তারাই আজ নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।”

এইরকম রাজনৈতিক বিষয়ক প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button