Bangla News

Abhishek Banerjee: মানুষের বিপুল সাড়া পেয়ে উত্তরবঙ্গ পর্ব এবং মুর্শিদাবাদ জেলা শেষ করে অভিষেকের জনসংযোগ যাত্রা প্রবেশ করবে দক্ষিণবঙ্গে

Abhishek Banerjee: তৃণমূলের জনসংযোগ যাত্রা সুপারহিট

হাইলাইটস:

অভিষেকের জনসংযোগ যাত্রা মুর্শিদাবাদ জেলা শেষ করে প্রবেশ করবে দক্ষিণবঙ্গে

এই জনসংযোগ যাত্রাকে কেন্দ্র করে মানুষের উদ্দীপনা দেখে উচ্ছ্বসিত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও

অভিষেক এবার থেকে বেশি গুরুত্ব দিতে চাইছেন রোড শোকে

Abhishek Banerjee: লক্ষ্য পঞ্চায়েত নির্বাচন। তবে এখন থেকে চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনের ঘুঁটিও সাজিয়ে রাখতে চাইছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। মূলত সেই উদ্দেশ্যেই শুরু হয়েছে তৃণমূলের নয়া কর্মসূচি। গত ২৫শে এপ্রিল দিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) নেতৃত্বে শুরু হয়েছে তৃণমূলে নবজোয়ার কর্মসূচি। ২ মাসব্যাপী এই কর্মসূচি ইতিমধ্যে উত্তরবঙ্গ পর্ব শেষ করে গতকালই নবাবের মাটি মুর্শিদাবাদ জেলায় প্রবেশ করেছে। উত্তরবঙ্গকে বিজেপির শক্ত ঘাঁটি হিসাবে জানা যায়। তবে অভিষেকের জনসংযোগ যাত্রায় উত্তরবঙ্গবাসীর বিপুল সাড়া পেয়ে, চলতি বছরের পঞ্চায়েত নির্বাচন এবং আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গে ঘাসফুল ফোটাতে পারবে বলেই আশাবাদী রাজ্যের শাসকদল।

গতকাল ফরাক্কা ঢুকতেই জনজোয়ারে ভাসলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই জোয়ার ভেঙে এক ঘণ্টার পথ পেরিয়ে জঙ্গিপুর পৌঁছলেন তিনি। তিন জায়গায় দাঁড়িয়ে জনসংযোগের কথা থাকলেও অভিষেককে ৯ জায়গায় দাঁড়াতে হল বিপুল জনসমুদ্রের কারণে। এমনকি তিনি আবারও গাড়ির ছাদে উঠে দাঁড়ালেন অথবা কখনও বসলেন। কোথাও আবার হাতে তৃণমূলের পতাকা নিয়ে ওড়াতে লাগলেন তৃণমূলের ‘সেকেন্ড ইন কমান্ড’। হাত তালির ঝড় উঠল চৌত্রিশ নম্বর জাতীয় সড়কে। তাঁকে একবার চোখের দেখা দেখার জন্য বানভাসি সাধারণ মানুষও। অনুগামীদের সঙ্গে নিয়ে অভিষেক দর্শনে হাজির স্থানীয় বিধায়করা। রাস্তায় ভিড়ের মধ্যেই কখনও উঁকি মেরে উঠলেন সাংসদ খলিলুর রহমান বা কখনও অন্য কোনও বিধায়ক। অভিষেকের জনসংযোগ যাত্রায় মানুষের উন্মাদনা দেখে খুশি তৃণমূল কংগ্রেস। আজও মুর্শিদাবাদ জেলার ৫টি জায়গায় জনসংযোগ যাত্রা রয়েছে তাঁর।

দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও মালদহের যৌথ সভা থেকে তৃণমূলে নবজোয়ার কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে মানুষের উদ্দীপনা দেখে তাতে সিলমহর দিয়ে দিয়েছেন। সাগরদিঘির উপনির্বাচনের পরে সংখ্যালঘুদের সমর্থন তৃণমূল হারাচ্ছে বলে দাবি করেছিল বিরোধী দলগুলি। তবে সাগরদিঘি উপনির্বাচনের ফলাফলকে আর গুরুত্ব দিতে নারাজ রাজ্যের শাসকদল। মুর্শিদাবাদ জেলার অভিষেকের জনসংযোগ যাত্রায় ভিড়ের মাঝেই রাস্তার এক পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তিনি কর্মীদের সাথেই ভিড়ের সঙ্গেই হাঁটছিলেন। তাঁকে মুর্শিদাবাদের অভিষেক সফর নিয়ে জিজ্ঞাসা করতেই তিনি বললেন, “সাগরদিঘি এখন অতীত। মুর্শিদাবাদের মানুষ বুঝিয়ে দিয়েছেন তাঁরা তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গেই আছেন।”

 

এবার মুর্শিদাবাদ জেলা সফর শেষ করে অভিষেকের জনসংযোগ যাত্রা প্রবেশ করবে দক্ষিণবঙ্গের মাটিতে। তবে হাতে আর ৪৯ দিন। এইদিকে উত্তরবঙ্গে বিপুল সাড়া পাওয়ার পর দক্ষিণবঙ্গের নানা দিক থেকে আমন্ত্রণ বার্তা পাচ্ছেন তিনি। তাই তিনি এবং তাঁর টিম ঠিক করেছেন, যে রুটম্যাপটি প্রকাশ করা হয়েছে তার খানিকটা বদল আনা হবে। তবে বেসিক ফরম্যাট অনুযায়ী মুর্শিদাবাদ জেলা শেষ করে বীরভূম হয়ে হুগলি, হাওড়া, মেদিনীপুর, জঙ্গলমহলের তিন জেলা, বর্ধমান ছুঁয়ে নদিয়া, উত্তর চব্বিশ পরগনা, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা হয়ে সাগরেই শেষ হবে জনসংযোগ যাত্রা। এই ফরম্যাটের কোনও পরিবর্তন না হলেও আরও বেশি করে ব্লক অথবা গ্রাম ছুঁয়ে যেতে নতুন ফরম্যাট শিগগির প্রকাশ করবেন অভিষেক। এই নিয়ে কথা হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথেও।

দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করছেন, সাম্প্রতিক নানা ঘটনাক্রম নিয়ে কর্মীদের মধ্যে যে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে তা ক্রমশ কেটে যাচ্ছে অভিষেকের এই সফরে। তিনিও চাইছেন, একবার যখন অভিষেক পথে নেমেছেন তখন জনসংযোগ আরও বেশি করে হোক। ছুঁয়ে যাক রাজ্যের সমস্ত গ্রাম গ্রামান্তর। তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ মহল মনে করছেন, একদম মোক্ষম সময়ে এই কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যা একবারেই দলের পক্ষে সঠিক সিদ্ধান্ত। অভিষেকের যাত্রার সাফল্যে উচ্ছ্বসিত দলনেত্রীও। তিনি মনে করছেন, এই জনসংযোগ যাত্রার ফলে কর্মীরা উজ্জীবিত হয়ে উঠছেন। এমনকি পঞ্চায়েত নির্বাচন প্রার্থী বাছাই পর্বও মানুষের উপরই আস্থা দেওয়া হয়েছে, যা অত্যন্ত ইতিবাচক এবং যুগান্তরকারী সিদ্ধান্ত।

অন্যদিকে যাত্রাপথের রুট ম্যাপে কিছুটা পরিবর্তন আনার সাথে সাথে মূল কর্মসূচির স্ট্র‌্যাটেজিতেও বদল আনতে চলেছেন অভিষেক। এবার থেকে তিনি বেশি করে জনসংযোগ করবেন এবং সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের সঙ্গে কথা বলে নবজোয়ারের লক্ষ্য ভালো করে বোঝাবেন। কারণ রোড শো করলে বেশি মানুষের সংস্পর্শে যাওয়া যায়। সে কারণেই নতুন স্ট্র‌্যাটেজি আনতে চাইছেন তিনি। ইতিমধ্যে ইটাহারে ভিড়ের চাপে গাড়ির ছাদে উঠার ভিডিওটি ইউটিউবে দেওয়া মাত্র ৫০ লক্ষ ভিউ হয়। বিষয়টি খুব উপভোগ করেছেন অভিষেক। তাই তিনি ঠিক করেছেন এবার থেকে গাড়ির উপরেই দাঁড়িয়ে হবে রোড শো। আবার কখনও পথে নেমে। তবে অভিষেকের গলার অবস্থা অত্যন্ত স্থিতিশীল। এমনকি। ডান হাতে ব্যান্ডেজও দেখা গেছে। তবে তিনি তাঁর শরীরের দিকে বিন্দুমাত্র নজর না দিয়ে শুধুমাত্র চাইছেন, এই কর্মসূচি দিয়ে দলের ভিতর যে জাগরণ তিনি ঘটিয়েছেন তা তুঙ্গে তুলতে হবে।

এইরকম রাজনৈতিক বিষয়ক প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button