Mamata Banerjee-Abhishek Banerjee: আজ মালদায় তৃণমূলে নবজোয়ার মঞ্চে দেখা যাবে মমতা-অভিষেককে একসাথে
Mamata Banerjee-Abhishek Banerjee: মালদায় প্রশাসনিক বৈঠক শেষে মুখ্যমন্ত্রী যোগ দেবেন অভিষেকের নবজোয়ারের মঞ্চে
হাইলাইটস:
• গতকাল সরাইঘাট এক্সপ্রেসে করে মালদা পৌঁছলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
• মালদা জেলায় তাঁর প্রশাসনিক কর্মসূচি রয়েছে
• প্রশাসনিক কর্মসূচি শেষ করে তিনি পৌঁছে যাবেন সরাসরি অভিষেকের নবজোয়ারের মঞ্চে
Mamata Banerjee-Abhishek Banerjee: তিনদিনের জন্য মালদা সফরে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল হাওড়া স্টেশন থেকে সরাইঘাট এক্সপ্রেসে করে রাত্রি সাড়ে ৯টা নাগাদ মালদা পৌঁছোন তিনি। আজ মালদা কলেজ অডিটোরিয়ামে তাঁর প্রশাসনিক বৈঠক রয়েছে। সরকারি কাজকর্মের খতিয়ান নিয়ে জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা রয়েছে তাঁর। অন্যদিকে জনসংযোগ যাত্রা নিয়ে ইতিমধ্যে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পৌঁছে গিয়েছেন মালদায়। সূত্রের খবর, আজ প্রশাসনিক বৈঠক শেষ করে মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি পৌঁছে যাবেন অভিষেকের নবজোয়ারের মঞ্চে (Mamata Banerjee-Abhishek Banerjee)। তবে রোড শো নাকি জনসভায় তাঁদের দেখা যাবে, সেই বিষয়ে এখনও স্পষ্ট করে কিছু জানা যায়নি। সুতরাং বলা যায় আজ মালদায় হাইভোল্টেজ সভা রয়েছে তৃণমূলের প্রধান দুই শীর্ষ নেতানেত্রীর।
সামনেই রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচন। আর এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই সব রাজনৈতিক দলগুলিই নিজেদের সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। এই প্রেক্ষাপটে পঞ্চায়েতকে পাখির চোখ করে তৃণমূলের মেগা কর্মসূচি হল তৃণমূলে নবজোয়ার। প্রসঙ্গত, গত ২৫শে এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন ২ মাসব্যাপী এই বিরাট কর্মসূচি। গত ৯ দিন ধরে কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর হয়ে মালদায় প্রবেশ করেছে সেই কর্মসূচি। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে কার্যত বেনজির উদ্যোগ এটি। এই কর্মসূচির অধীনে রয়েছে জনসংযোগ যাত্রা এবং গ্রামবাংলার মতামত নামে দুটি কর্মসূচি। গত ৯ দিন ধরে কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর হয়ে মালদায় প্রবেশ করেছে সেই কর্মসূচি। এবার মুখ্যমন্ত্রীর মালদা সফরে মালদাবাসীকে উপহার দিতে তিনি যোগ দেবেন অভিষেকের নেতৃত্বাধীন কর্মসূচিতে।
এই হাইভোল্টেজ জনসভা দেখার জন্য মালদাবাসী অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। ইতিমধ্যে সারা মালদা জুড়ে সাজ সাজ রব। মুখ্যমন্ত্রীর তিনদিনের মালদা সফরে একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করার কথা রয়েছে তাঁর। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে জনহিতকর পরিষেবাগুলি মালদাবাসীর কাছে পৌঁছচ্ছে কিনা সে ব্যাপারটিও খতিয়ে দেখবেন তিনি। জেলা তৃণমূল সূত্রে খবর, দুয়ারে সরকার প্রকল্পের সুবিধাও উপভোক্তাদের হাতে তুলে দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। উল্লেখ্য, সমগ্র রাজ্যে ‘তৃণমূলে নবজোয়ার’ কর্মসূচির কথা প্রথম ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর তৃণমূলের সাংবাদিক সম্মেলনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পুরো কর্মসূচির ব্যাপারে বিস্তারিত জানান। তিনি গত ২৫শে এপ্রিল কোচবিহারের দিনহাটা থেকে শুরু করেছিলেন এই জনসংযোগ যাত্রা। রাজ্যজুড়ে নিয়োগ দুর্নীতি, গরু-কয়লা পাচারকাণ্ডে তৃণমূলের নেতাদের নাম জড়ালেও পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তৃণমূলের এই কর্মসূচি তৃণমূলকে বাড়তি অক্সিজেন জোগাবে, একথাই মনে করছেন রাজনৈতিক মহল।
গত লোকসভা নির্বাচনে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত মালদা জেলায় তিনটি লোকসভা আসনই তৃণমূলের হাত থেকে বেরিয়ে যায়। কংগ্রেস এবং বিজেপির কাছে হার স্বীকার করতে হয়েছিল তৃণমূলকে। কিন্তু একুশের বিধানসভা নির্বাচনে ফলাফল কার্যত উল্টে যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মালদাবাসী এবারে আর খালি হাতে ফেরাননি। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে মালদা জেলায় যথেষ্ট ভালো ফল করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, শুধু পঞ্চায়েত নির্বাচন না, ২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত মালদা জেলায় লোকসভা আসনগুলি কার্যত দখল করতে মরিয়া রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। সেই কারণেই পরপর দু’দিন এই জেলায় সফর করবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এবং অভিষেকের সঙ্গে একই মঞ্চে দেখা যাবে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। আজ মমতা এবং অভিষেকের যৌথ কর্মসূচি ঘিরে তৃণমূল কর্মী, সমর্থকদের উচ্ছ্বাস তুঙ্গে। ২ মাসব্যাপী এই কর্মসূচিতে অভিষেকের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রথম যোগ দেবেন, যা মালদাবাসীর কাছে বিরাট বড়ো উপহারও বটে। এবং তার সাথে তৃণমূলে নবজোয়ার কর্মসূচিতে স্বয়ং দলনেত্রীর উপস্থিতি কর্মসূচিকেও এক আলাদা মাত্রা দেবে, এমনই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
অন্যদিকে মালদা যাওয়ার পথে বোলপুর স্টেশনে সরাইঘাট এক্সপ্রেসটি কিছুক্ষণ থামে। ট্রেনটি থামার সঙ্গে সঙ্গে দরজা খুলতেই মুখ্যমন্ত্রীর কামরায় আছড়ে পড়ে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা। মুখ্যমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানান বোলপুরের বিধায়ক চন্দ্রনাথ সিনহা। সঙ্গে দিলেন মিনিদানা। অবশ্য অতীতে বীরভূম তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল দিতেন চপ-মুড়ি। তবে তিনি এখন গরু পাচারকাণ্ডে তিহার জেলে বন্দি। মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথবাবুকে বার্তা দিলেন বিশ্বভারতীর সঙ্গে জমি বিতর্কে অমর্ত্য সেনের পাশে দাঁড়িয়ে যেন ভালো করে আন্দোলন সংগঠিত করা হয়।
সুতরাং বলা যায়, মুখ্যমন্ত্রীর মালদা সফর এবং অভিষেকের সাথে যৌথ কর্মসূচি উত্তরবঙ্গের জন্য রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। একদিকে যেমন উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জে নাবালিকা মৃত্যুর ঘটনায় উত্তাল হয়েছে সমগ্র উত্তরবঙ্গ, অন্যদিকে মালদহ জেলাতেই ঘটেছে স্কুলে বন্দুকবাজ ঢুকে পড়ার মতো ঘটনা। যা কার্যত প্রশ্ন তুলে দিয়েছে জেলা প্রশাসনের কাজকর্ম নিয়ে। এই নিয়ে বিরোধী দলগুলিও আসরে নেমে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে মমতা-অভিষেকের যৌথ কর্মসূচি উত্তরবঙ্গ সম্মিলিত মালদা জেলা, তৃণমূলের হাইভোল্টেজ ইভেন্টের কেন্দ্রস্থলে পরিণত হতে চলেছে।
এইরকম রাজনৈতিক বিষয়ক প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।