Food Allergy In Kids: ফুড অ্যালার্জির লক্ষণ এবং বাচ্চার কোন কোন খাবারে ফুড অ্যালার্জি আছে কী করে বুঝবেন?
Food Allergy In Kids: বাচ্চার শরীরে ফুড অ্যালার্জির লক্ষণগুলিও আগে থেকে চিনে রাখা উচিত
হাইলাইটস:
•শিশুদের জন্য ফুড অ্যালার্জি একটি গুরুতর সমস্যা
•ফুড অ্যালার্জি লক্ষণগুলি আগে থেকে চিনে রাখা দরকার
•অ্যালার্জিযুক্ত খাবারগুলির বিষয়েও বিস্তারিত জেনে নিন
Food Allergy In Kids: প্ৰতিটি পরিবারের নয়নের মনি হল তাদের সন্তান। সন্তানের আশার সংবাদ থেকেই পরিবারের আনন্দ উদ্দীপনার শেষ থাকে না। শিশুটি পৃথিবীর আলো দেখার দিন থেকে তার খাবার নিয়ে মা-বাবাকে কয়েকগুণ সতর্ক হতে হয়। কারণ কিছু খাবার থেকে আপনার সন্তানের ফুড অ্যালার্জি (Food Allergy In Kids) হতে পারে। শিশুদের মধ্যে ফুড অ্যালার্জি একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং গুরুতর স্বাস্থ্য উদ্বেগ। প্রথমেই যদি এই অসুখের উপসর্গ না ধরতে পারেন তবে বড়সড় বিপদ ঘটতে পারে। তাই আগে থেকে জেনে রাখুন এই রোগের লক্ষণ, চিকিৎসা, প্রতিরোধের উপায়গুলি। তার সাথেই চিনে নিন কোন কোন খাবারে বাচ্চাদের ফুড অ্যালার্জি হতে পারে।
ফুড অ্যালার্জি কী?
সাধারণত দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার অতিরিক্ত সক্রিয়তার জন্য শিশুদের ফুড অ্যালার্জি হয়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় কিছু নির্দিষ্ট খাবারকে শরীর নিজে থেকেই তার শত্রু ভাবতে শুরু করে এবং তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। যার ফলে শরীরে ফুড অ্যালার্জির লক্ষণ দেখা দেয়। তবে সুস্থ শরীরে এই খাবারগুলি কোনও বিপরীত প্রতিক্রিয়া নেই। তাই বাকিরা অবশ্যই সেই খাবারগুলি খেতে পারেন। শিশুদের জন্য ফুড অ্যালার্জি একটি গুরুতর সমস্যা। কারণ এটি ক্রমবর্ধমান শিশুদের খাদ্যাভ্যাসের দিকে মনোযোগ দেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।এমন পরিস্থিতিতে, ফুড অ্যালার্জি আক্রান্ত শিশুদের খাদ্যতালিকা থেকে অ্যালার্জিযুক্ত খাদ্য উপাদানগুলিকে বাদ দিতে হবে। তবে তার বদলে এমন কিছু খাবার অন্তর্ভুক্ত করা উচিত, যাতে তাদের পুষ্টির অভাব না হয়৷
ফুড অ্যালার্জির লক্ষণগুলি কী কী?
শিশুদের ফুড অ্যালার্জির লক্ষণগুলি হল –
•বমি বমি ভাব অথবা বমি হওয়া
•পেটে ব্যথা এবং পায়খানা
•ত্বকে একাধিক ফুসকুড়ি অথবা ব়্যাশ
•শরীরে কিছু জায়গা হঠাৎ করে ফুলে লাল হয়ে যাওয়া
•শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা
•শরীরে কোথাও টান ধরা
•জিভ অথবা গলা চুলকানো
•ব্লাড প্রেশারের মাত্রা মনে যাওয়া
কোনও খাবার খাওয়ার পর যদি আপনার শিশুর মধ্যে যদি উপরের এই লক্ষণগুলির মধ্যে একটিও দেখা যায় তবে সময় নষ্ট না করে বাচ্চাকে নিয়ে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের কাছে যাবেন।
অ্যালার্জিযুক্ত খাদ্যগুলি হল:
•গরুর দুধ: গরুর দুধ শিশুদের জন্য সবচেয়ে সাধারণ একটি খাদ্য। তবে এই খাদ্য থেকে শিশুদের ফুড অ্যালার্জি হতে পারে। তাই গরুর দুধ থেকে সাবধান, তবে সব শিশুর ক্ষেত্রে না।
•ডিম: শরীরে প্রোটিনের অভাব দূর করার জন্য বাচ্চাদের খাদ্য তালিকায় ডিম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্তু অনেক বাচ্চাদেরই ডিমের কারণে স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। ডিম খেলে অ্যালার্জি হয় অনেক বাচ্চার। আবার অনেকের হজমেরও সমস্যা হয়।
•বাদাম: গাছের বাদাম, যেমন -বাদাম, কাজু এবং আখরোট শিশুদের জন্য সাধারণ অ্যালার্জি ট্রিগার। এই বাদামগুলি খেলে বাচ্চাদের শরীরে ফুড অ্যালার্জির লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
•গম: গম শিশুদের জন্য আরও একটি অ্যালার্জিযুক্ত খাদ্য। শিশুদের ক্ষেত্রে গম হজমের সমস্যা এবং শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ সৃষ্টি করতে পারে। এমনকি রুটি, ম্যাগি এবং পাস্তার মতো গমের পণ্যও অ্যালার্জির কারণ হতে পারে।
•সোয়াবিন: সোয়াবিনও শিশুদের জন্য আরও একটি অ্যালার্জিযুক্ত খাদ্য। এই খাবার থেকেও বাচ্চাদের দূরে রাখতে পারেন।
•মাছ: কিছু মাছ আছে যা বাচ্চাদের মধ্যে অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে, যার ফলে ত্বকে ফুসকুড়ি, হজমের সমস্যা এবং শ্বাসকষ্টের যতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এটি লক্ষ করা গুরুত্বপূর্ণ যে সী ফুড যেমন – চিংড়ি এবং গলদা চিংড়ি এছাড়াও এলার্জি প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
এই খাবারগুলি থেকে বাচ্চাদের দূরে রাখার চেষ্টা করতে পারেন। তবে তার আগে চিকিৎসকদের থেকে মতামত নেবেন। কারণ সব বাচ্চার ক্ষেত্রে এই সমস্যা নাও হতে পারে।
ফুড অ্যালার্জির সম্ভাব্য চিকিৎসা পদ্ধতি:
ফুড অ্যালার্জি থেকে মুক্তি মেলার কোনও বিশেষ ওষুধ এখনও পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয় নি। তবে অ্যান্টিঅ্যালার্জিক ইঞ্জেকশন নামক এক প্রতিষেধক দেওয়া হয় ফুড অ্যালার্জি প্রতিরোধ করতে। তখন চিকিৎসকদের মূল লক্ষ্য থাকে, যত দ্রুত সম্ভব শিশুর এই সমস্যা দূর করার। এক্ষেত্রে ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরেই বাচ্চাটির শরীর থেকে উপসর্গগুলি ম্লান হতে শুরু করে এবং ধীরে ধীরে বাচ্চাটি সুস্থ হয়ে যায়। তারপর চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বাচ্চার যত্ন নেবেন, বিশেষ করে তার খাদ্যাভ্যাসের দিক দিয়ে। এতে ভবিষ্যতে কিছুটা হলেও এই সমস্যা থেকে আপনার সন্তানকে রক্ষা করতে পারবেন। আর চিকিৎসকরা যে যে খাবার খাওয়াতে বারণ করবেন সেই খাবারগুলি তার থেকে সবসময় দূরে রাখবেন। ডিম এবং দুধ শিশুদের জন্য মূল্যবান দুই খাদ্য। কিন্তু এই খাবারগুলি থেকে ফুড অ্যালার্জির লক্ষণ দেখা দেওয়ায় ডিম এবং দুধের বিকল্প খাবার খোঁজার দায়িত্ব আপনারই। নাহলে বাচ্চার শরীরে পুষ্টির ঘাটতি দেখা দিতে পারে। তবে চাইলে আপনি কোনও পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিতে পারেন।
এইরকম স্বাস্থ্য এবং জীবনধারা সম্পর্কিত প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।