Heat Cramps: এই অতিরিক্ত গরমে আপনার কী পায়ে টান ধরছে? এই সমস্যা থেকে যদি রেহাই পেতে চান বিশিষ্ট চিকিৎসকদের পরামর্শগুলি জেনে নিন
গরমকালে হিট ক্র্যাম্পের সমস্যা বেশি দেখা যায়
হাইলাইটস:
•তীব্র গরমে সবচেয়ে বেশি যে সমস্যা হয়, তা হল হিট ক্র্যাম্প
•ডিহাইড্রেশন এবং অতিরিক্ত পরিশ্রমের জন্য এই সমস্যা হয়
•এই সমস্যা থেকে মুক্তির উপায়গুলি জেনে রাখা দরকার
Heat Cramps: এই বছর এপ্রিলের মাঝামাঝিতেই বঙ্গে বইছে শুরু করেছে প্রবল তাপপ্রবাহ। শহর কলকাতার তাপমাত্রা ছুঁয়েছিল প্রায় ৪২ ডিগ্রি। আবার অন্যদিকে বাতাসে জলীয় বাষ্পের অভাব থাকায় পশ্চিমের জেলাগুলিতে রীতিমতো লু বয়েছে। কিন্তু তারই মধ্যে দু-তিনদিন আবহাওয়া ছিল বেশ আরামদায়ক। সামান্য ছিঁটেফোটা বৃষ্টিতেও যেন শহরবাসী প্রাণ ফিরে পেয়েছে। কারণ এই তীব্র গরমে নাজেহাল হতে হয়েছিল সাধারণ মানুষকে। তবে গরম থেকেই এখনই রেহাই পাচ্ছেন না শহরবাসী। সবে বৈশাখ শুরু হয়েছে এখনও জ্যৈষ্ঠ মাস বাকি। এইরকম তীব্র তাপপ্রবাহে হিট ক্র্যাম্পের (Heat Cramps) সমস্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনেকেই এই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে বিশিষ্ট চিকিৎসকরা দেন তাদের মূল্যবান পরামর্শ। তাদের পরামর্শ মেনে চলাই বুদ্ধিমামের কাজ হবে।
হিট ক্র্যাম্প কী?
তীব্র দাবদহের কারণে আমাদের অনেক সময় পেশিতে টান ধরে এবং অসম্ভব যন্ত্রনা হয়। এই সমস্যাকেই বলা হয় হিট ক্র্যাম্প। আসলে গরমকালে আমাদের শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে জল, ঘামের মাধ্যমে বের হয়ে যায়। ফলে ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে বেরিয়ে যায় ইলেকট্রোলাইটস। এই ইলেকট্রোলাইটস বা সোডিয়াম-পটাশিয়াম কিন্তু দেহকে সুস্থ রাখতে প্রয়োজন হয়।
অত্যধিক গরমে হিট ক্র্যাম্প হওয়ার মূল দুটি কারণ রয়েছে। এক হল ডিহাইড্রেশন আর দুই অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম। গরমে শরীরকে কোনওভাবেই জলশূন্য হতে দেওয়া যাবে না। এর পাশাপাশি শরীরে বজায় রাখতে হবে ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য। শরীরে পটাশিয়াম, সোডিয়ামের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে গেলে হিট ক্র্যাম্পের পাশাপাশি তাপমাত্রাজনিত নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
পায়ের পেশিতেই বেশি হয় হিট ক্র্যাম্প:
হিট ক্র্যাম্প সারা শরীরের যে কোনও পেশিতেই হতে পারে। তবে হিট ক্র্যাম্প বেশি দেখা যায় পায়ের পেশিতে । বিশেষ করে পায়ের কাফ মাসল এবং হ্যামস্ট্রিং মাসলে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। পায়ের এই দুই জায়গাতেই হঠাৎ করেই টান ধরে যায়। প্রচণ্ড গরমে যখন শরীর থেকে ঘাম বেরোয় তখন এই ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে যেমন বিষাক্ত পদার্থ বেরিয়ে যায় তেমনই ক্ষয় হয় মিনারেলেরও। আর তখনই পেশিতে খিঁচুনি বা টান দেখা দেয়। একই ভাবে যখন এই গরমে অত্যধিক শারীরিক পরিশ্রম করেন, আপনার পেশি ক্লান্ত হয়ে পড়ে, পেশিগুলি সংকুচিত হওয়ার স্বাভাবিক ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। এতেই পেশিতে টান ধরে। তার সাথে হয় প্রচন্ড ব্যথা। বিশেষ করে যারা এই গরমে বেশি হাঁটাহাঁটি করেন অথবা সাইকেল চালান অথবা রিস্কা চালান তাদের এই সমস্যা বেশি দেখা দেয়। তাই চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে, এই তীব্র গরমে অত্যধিক পরিশ্রম করা থেকে বিরত থাকুন।
পেশিতে টান ধরলে কী কী করণীয়?
•রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে যদি হঠাৎ করে পায়ে টান ধরে তবে নিরাপদ কোনও স্থানে তৎক্ষণাৎ বসে যান (ঠান্ডা কোনও জায়গায় বসবেন)।
•পায়ে যেখানে ব্যথা লাগে সে জায়গাটি ভালো করে ম্যাসাজ করুন। নিজে হাতে না পারলে সামনে থাকা কোনও মানুষকে বলুন ম্যাসাজ করে দিতে। এতে ব্যথা কিছুটা হলেও নিরাময় হতে পারে।
•এই সমস্যাকে এড়াতে প্রচুর পরিমাণে জল পান করুন।
•জলের পাশাপাশি ওআরএসের জলও পান করতে পারেন। এর ফলে ইলেকট্রোলাইটস ও জলের ঘাটতি মেটা সম্ভব।
•এছাড়াও ডাবের জল, মরসুমি ফল ও ফলের রস খেতে পারেন। এই ভাবে আপনি পায়ের টান থেকে মুক্তি পেতে পারেন। এবং পেশিও নিজের কাজ সঠিকভাবে করতে পারবে।
কোনওরকম ব্যথার ওষুধ বা পেইনকিলার খাবেন না:
হিট ক্র্যাম্প হলে আপনি কোনওরকম ব্যথার ওষুধ বা পেইনকিলার খেতে যাবেন না। কারণ এই সমস্যায় পেইনকিলারের কোনও ভূমিকা নেই। ওষুধের বদলে আপনি ক্র্যাম্পের জায়গায় বরফ দিতে পারেন। তবে বরফ সরাসরি ওই জায়গায় লাগাবেন না, এতে পেশির ক্ষতি হয়। বরং কাপড়ে বেঁধে বরফ লাগাতে পারেন। তাতে হয়তো ব্যথার জায়গায় কিছুটা আরাম পাবেন। এর ফলে দ্রুত কমতে শুরু করবে পেশির টান। এবং পেশির সংকোচন-প্রসারণ ভালোভাবে হবে।
হিট ক্র্যাম্প প্রতিরোধের উপায়:
•প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ লিটার জল পান করুন
•বাড়ির বাইরে বেরোনোই ব্যাগে ওআরএসের জল রাখুন। ওআরএসের বিকল্প হিসাবে হলে নুন-চিনির জলকেও বেছে নিতে পারেন।
•এই তীব্র গরমে খুব দরকার না হলে বাড়ির বাইরে বেরোবেন না। সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত বাড়িতে থাকার চেষ্টা করুন।
•রোদের মধ্যে যদি অতিরিক্ত পরিশ্রম করেন তবে দফায় দফায় বিশ্রামও নিন।
•এছাড়া কিছু সহজ ব্যায়ামও আছে হিট ক্র্যাম্প থেকে মুক্তির জন্য।
•কিন্তু বারবার এই সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না।
এইরকম স্বাস্থ্য এবং জীবনধারা সম্পর্কিত প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।