Bratya Basu: রাজ্যপাল নন বরং নৈতিক আচার্য মুখ্যমন্ত্রীই, রাজ্যপালকে শ্বেতহস্তী বলে বেনজির আক্রমণ শিক্ষামন্ত্রীর
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু রাজ্যপালকে শ্বেতহস্তি বলে আক্রমণ করলেন
হাইলাইটস:
•রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসকে শ্বেতহস্তী বলে বেনজির আক্রমণ করলেন শিক্ষামন্ত্রী
•মুখ্যমন্ত্রীই বিশ্ববিদ্যালয়গুলির নৈতিক আচার্য, এমনই দাবী শিক্ষামন্ত্রীই
•১০ মাস আগে বিধানসভায় পেশ হওয়া আচার্য বিলের কথাও উল্লেখ করেছেন
কলকাতা: অতীতেও আমরা দেখেছি রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত। রাজ্যের প্রাক্তন রাজ্যপাল জাগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে প্রায়শই মতের অমিল দেখা যেত রাজ্য সরকারের সাথে। তবে ধনকড় উপরাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত হওয়ার পর রাজ্যের নতুন রাজ্যপাল হয়ে আসেন সিভি আনন্দ বোস (CV Ananda Bose)। প্রথমে অবশ্য রাজ্য সরকারের সাথে তাঁর সম্পর্ক ভালোই ছিল। তবে গত সপ্তাহ দিয়ে তিনি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সারপ্রাইজ ভিজিট শুরু করেছেন। এমনকি আর্থিক অনুদানও দিচ্ছেন তিনি। ফলে এবার রাজ্যপালকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu)।
রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস প্রথমে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় দিয়ে শুরু করেন তাঁর পরিদর্শন পর্ব। তারপর বারাসত বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে গত বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়েও সারপ্রাইজ ভিজিটে গিয়েছিলেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে অধ্যাপক এবং ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে আর্থিক অনুদানের কথাও ঘোষণা করেছেন তিনি। ফলে শিক্ষামন্ত্রী অভিযোগ করেন, “শিক্ষা দফতরকে না জানিয়ে যা ইচ্ছা করে যাচ্ছেন। এমনকি মুখ্যমন্ত্রীকেও কিছু না জানিয়ে উনি উপাচার্য ঠিক করে দিচ্ছেন। যে অনুদান উনি ঘোষণা করেছেন, সে তো সরকারি অর্থ। লজেন্সও বিলি করছেন। তিনি সুপ্রিম কোর্টের রায় মানছেন না।”
শিক্ষামন্ত্রী এমন মন্তব্যে শিক্ষা দফতর-রাজ্যপাত সংঘাত প্রকাশ্যে এসে গেল। গত বছর জুন মাসে যখন পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে রাজ্য প্রশাসনের সংঘাত চরমে উঠেছিল তখনই মুখ্যমন্ত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য করার বিলটি বিধানসভায় পাশ করিয়ে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ১০ মাস হয়ে গেলেও সেই বিল এখনও রাজভবন থেকে সরকারের কাছে এসে পৌঁছয়নি। এই প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য, রাজ্যপাল বিলটি সই করে দিক, নাহলে পুনরায় রাজ্য বিধানসভায় বিলটি পাশ করিয়ে নেওয়া হবে। উল্লেখ্য, তেলেঙ্গানা সরকারের একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয় অনির্দিষ্টকাল ধরে বিধানসভায় পাশ হওয়া বিল রাজ্যপালের আটকানোর অধিকার নেই। রাজ্যপাল তিন সপ্তাহ আটকাতে পারেন, এর বেশি না। এই দিন শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের রাজ্যে নৈতিক আচার্য মুখ্যমন্ত্রীই।
সম্প্রতি রাজভবন থেকে বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছিল রাজ্যপাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হিসেবেই কাজ করবেন। এমনকি শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে পাশে বসিয়ে রাজ্যপাল নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের সমস্যার সমাধান করেছিলেন। এখানেই শিক্ষামন্ত্রীর মন্তব্য, সহযোগিতামূলক কর্মকাণ্ডই করতে চেয়েছিলাম রাজ্যপালের সঙ্গে তবে উনি বার বার ক্ষমতার স্বেচ্ছাচার ঘটাচ্ছেন। এমনকি রাজ্যপালকে শ্বেতহস্তী বলেও বেনজির আক্রমণ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি অভিযোগ করেন, এই প্রসঙ্গে রাজ্যপালের সাথে কথা বলতে চাইলেও তিনি তাঁর সাথে কথা বলতে চাননি।
শিক্ষামন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সতর্ক করে একটি তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন “আমি রাজ্যের উপাচার্যদের বলব আপনাদের মনে রাখতে হবে আপনাদের সবার উপাচার্য পদে নিয়োগের জন্য রাজ্য সরকার ও মুখ্যমন্ত্রী সম্মতি ছাড়া কোনও একাদেশিতা দেখাবেন না। কোন সাময়িক উত্তেজনা বা কোনও প্ররোচনাতে গুরুত্ব দেবেন না।” তিনি আরও বলেন, উপাচার্য নিয়োগের জন্য যেমন আচার্য সম্মতি প্রয়োজন ঠিক তেমনই উচ্চশিক্ষা দফতরেরও সম্মতি প্রয়োজন। এবার দেখার পালা শিক্ষা দফতর এবং রাজ্যপাল সংঘাত কোন দিকে মোড় নেয়।
এইরকম রাজনৈতিক বিষয়ক প্রতিবেদন পেতে ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলার সাথে যুক্ত থাকুন।