আগামীকাল থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা, আপনার সন্তানের স্মৃতিশক্তি মজবুত করতে এই ৫টি খাবার অবশ্যই রাখুন খাদ্যতালিকায়
পরীক্ষায় ভালো ফলের আশা সব অভিভাবকরাই করেন
আগামীকাল অর্থাৎ ২৩শে ফেব্রুয়ারি দিয়ে শুরু হতে হয়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। আর শেষ হবে ৩রা মার্চ। জীবনের প্রথম বড়ো পরীক্ষার মুখোমুখি হতে চলেছে ছাত্রছাত্রীরা। তারা যথেষ্ট উদ্বিগ্ন পরীক্ষা নিয়ে। তার সাথে তাদের বাবা-মারাও ভীষণই চিন্তিত। কারণ নিজেদের প্রত্যাশামতো ফল পেতে অভিভাবকরাও উদ্বেগে থাকেন। তারাও অনেক পরিশ্রম করেন সন্তানের ভালো ফল পাওয়ার ক্ষেত্রে। তারাও যেন তাদের জীবনের বড়ো অগ্নিপরীক্ষা ভেবে বসেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, পরীক্ষায় অভিভাবকদের ভূমিকাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সন্তানের সঠিক খাদ্যতালিকা তারাই ঠিক করেন। সন্তানদের সঠিক পুষ্টিকর খাবারের মাধ্যমে শারীরিক বিকাশেও যত্নশীল থাকেন অভিভাবকরা। শীতের বিদায় বেলাতে নানা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। তাই আপনার সন্তানেরও যদি সামনে মাধ্যমিক পরীক্ষা থাকে তবে তার খাদ্যতালিকায় সুষম খাবার যোগ করুন। কারণ সুষম খাবার শুধু মাত্র আপনার সন্তানকে সুস্থ রাখবে না বরং তার স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর ক্ষেত্রেও সাহায্য করবে। এইসব পুষ্টিকর এবং সুষম খাদ্যগুলি দেখে নিন-
সবুজ শাকসবজি এবং তাজা ফল:
সবুজ শাকসবজি শারীরিক বিকাশের পাশাপাশি আমাদের মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পালংশাক, বাঁধাকপি, ফুলকপি, ব্রকলি, এই সব ধরনের সবুজ শাকসবজি মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। এই সবজিগুলি অনেক পুষ্টিগুণে ভরপুর। যার মধ্যে রয়েছে ব্রেন-বুস্টিং বিটা-ক্যারোটিন, ফলিক অ্যাসিড, লুটেইন এবং ভিটামিন। গবেষণায় দেখা গেছে যে, উদ্ভিদ-ভিত্তিক পণ্যগুলি প্রায়ই স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে পরিচিত। তাই আপনার সন্তানের খাদ্যতালিকায় সবুজ শাকসবজি রাখুন এবং তার সাথেই রাখুন তাজা ফল। প্রতিদিন একটি করে ফল তাকে দিন। এইভাবে তার স্মৃতিশক্তি পাবে পরীক্ষার সময়।
ড্রাই ফ্রুটস এবং বাদাম:
পরীক্ষার সময় ছাত্রছাত্রীদের বেশি করে ভিটামিন এবং মিনারেল প্রয়োজন। এই ভিটামিন ও মিনারেলগুলি বিকাশে সহায়ক করে হরমোনগুলিকে উদ্দীপিত করে। তাই আপনার সন্তানের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখুন ড্রাই ফ্রুটস এবং বাদাম। তাকে ব্রেকফাস্টে দিন এইগুলি। তবে আপনার সন্তান সারাদিন নিজেকে সতেজ অনুভব করবে। তার স্মৃতিশক্তিও বৃদ্ধি পাবে। বাদাম প্রোটিন ও স্বাস্থ্যকর চর্বির উৎস হিসাবে পরিচিত। তাই বাদাম স্মৃতিশক্তি মজবুত করতে ও শরীর উষ্ণ রাখতে সাহায্য করে। আপনার সন্তানের খাদ্যতালিকায় সব ধরনের বাদাম যেমন আখরোট, পেস্তা, বাদাম, অন্তর্ভুক্ত করুন। কারণ এইগুলি আপনার সন্তানের মস্তিষ্কের দৈনিক ডোজ পূরণ করতে পারেন। তবে এর মধ্যে আখরোট মস্তিষ্কের জন্য সবচেয়ে উপকারী। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা মস্তিষ্ককে দুর্বল হতে বাধা দেয়। আর এই পুষ্টিগুনগুলির জন্য আপনার সন্তান পরীক্ষা হলে নিজেকে ফিট এবং অ্যাক্টিভ অনুভব করবে।
বীজ:
কুমড়ো, সূর্যমুখী, তরমুজ, চিয়া, ফ্ল্যাক্সসিড সহ অনেক ধরণের বীজ ড্রাই ফ্রুটসের মতোই অনেক পুষ্টিতে সমৃদ্ধ। আকারে ছোট হতে পারে কিন্তু বাস্তবে এটি গুণের ভান্ডার। সূর্যমুখী বীজ বিশেষ করে ভিটামিন E সমৃদ্ধ। যা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। কুমড়োর বীজও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও তামা, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম এবং জিঙ্কের মতো গুরুত্বপূর্ণ খনিজগুলির শক্তিশালী উৎস। এই সমস্ত খনিজগুলি অ্যালজাইমার্স রোগ, বিষণ্ণতা, এমনকি মৃগী রোগ সহ বিভিন্ন মস্তিষ্কের রোগ থেকে রক্ষা করার জন্য অপরিহার্য। তাই আপনার সন্তানের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে তার খাদ্যতালিকায় এই বীজগুলি যোগ করুন।
দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার:
দুধ এবং দই, ঘোল, চিজ, ঘিয়ের মতো দুগ্ধজাত খাবার আপনার সন্তানের খাদ্যতালিকায় রাখতে পারেন। এটি হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি করবে আবার দৃষ্টি শক্তিও উন্নত করবে। সন্তানের পরীক্ষা যাতে ভালো হয় তার জন্য সব সময় ইতিবাচক থাকা অত্যন্ত জরুরি। এতে আপনার সন্তানকে শারীরিক ও মানসিক দিক থেকে উন্নত করুন। যার ফলে তার স্মৃতিশক্তিও বৃদ্ধি পাবে।
গোটা শস্য:
গোটা শস্য যেমন গম, ওটমিল, বার্লি এবং ব্রাউন রাইস ইত্যাদি সুষম খাদ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। হার্টের জন্যেও এগুলি অত্যন্ত উপকারী। তবে খুব কম মানুষই জানেন যে, অনেক গোটা শস্য ভিটামিন E সমৃদ্ধ। এটি মস্তিষ্কের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। ভিটামিন E পরিপূরক করার পরিবর্তে, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা গোটা শস্যের মাধ্যমে আপনার খাদ্যতালিকায় এটি অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দেন। আপনার সন্তানের খাদ্য তালিকায় যাতে শস্য থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। আবার গোটা শস্যতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে, যা পাচন প্রক্রিয়া সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে। পরীক্ষার সময় টেনশনের জন্য অনেকের পেটের সমস্যা হয়। গোটা শস্য কোষ্ঠকাঠিন্য এবং হেমোরয়েডের সমস্যাও দূর করে পাচন প্রক্রিয়া ভালো রাখে।