lifestyle

আপনারও কী দাঁত দিয়ে নখ কাটার বদভ্যাসটি আছে? তাহলে এই বদভ্যাসটি থেকে মুক্তির উপায়গুলি জেনে নিন

এটি সত্যিই একটি খারাপ অভ্যাস

অনেকেই আছেন যাদের নিজের অজান্তেই হাত দাঁত অবধি চলে যায়। ফলে তারা দাঁত দিয়ে নখ কেটে ফেলেন। আবার অনেকের এটি একটি বদঅভ্যাসেই পরিণত হয়ে গেছে। এটি খুবই বিরক্তিকর এবং অস্বাস্থ্যকর একটি বদভ্যাস। আর এই খারাপ অভ্যাসটি শুধু ছোটদের নয়, বড়োদের মধ্যেও দেখা যায়। আপনি কী জানেন এই অভ্যাস আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ঠিক কতটা ক্ষতিকর? এই কাজটি করার জন্য আপনার মারাত্মক রোগ হতে পারে। কারণ এই কাজটি করার জন্য হাত আমাদের প্রধান অঙ্গ। বিভিন্ন কাজের সময় বিভিন্ন ধরনের রোগ-জীবাণু, ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ইত্যাদি আমাদের শরীরে প্রবেশ করতে পারে দাঁত দিয়ে নখ কাটার মাধ্যমে। হাত ভালোভাবে ধুয়ে ফেললেও অনেক সময় নখের আনাচে-কানাচে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর জীবাণু লুকিয়ে থাকতে পারে। তাই দাঁত দিয়ে নখ কাটা একদমই উচিত না।

দাঁত দিয়ে নখ কাটার কারণগুলি হল:

অবিরত দাঁত দিয়ে নখ কাটা নখের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায় এবং এতে নখের পার্শ্ববর্তী চামড়াগুলির ক্ষতি হয়ে যাওয়া একটি গ্রুমিং ডিজর্ডার। যাকে বলা হয় অনিকোফেইজিয়া। শিশুদের মধ্যে, দাঁত দিয়ে নখ কাটার ব্যাপারটি বেশি লক্ষ্য করা যায় যখন তারা উদ্বেগ বা বিরক্তিতে ভোগে। কিছু শিশু ঝোঁকের বশেও এই কাজটি করে থাকে। এছাড়াও নখ কামড়ানোর বিভিন্ন সম্ভাব্য কারণগুলি হল-

•কারোর বাবা বা মায়েরও এই অভ্যাসটি ছিলো বা আছে, ফলে তার মধ্যেও একই লক্ষণ দেখা যাবে

•উদ্বেগ

•মানসিক চাপ

•স্নায়বিক চাপ

•বিরক্তি

•নিরাপত্তাহীনতায় ভোগা

•ক্ষুধা

দাঁত দিয়ে নখ কাটার ক্ষতিকর দিক:

•আপনি যদি দাঁত দিয়ে নখ কাটেন তবে এতে আপনার নখ তার স্বাভাবিক আকার হারিয়ে ফেলে এতে নখের সৌন্দর্য নষ্ট হয়।

•এই বদভ্যাসটি নখের ক্ষতি ছাড়াও নখের আশেপাশের টিস্যুর ক্ষতি করতে পারে। এছাড়াও এটি নখ ঠিক মতো বৃদ্ধি পাওয়ার হারও কমিয়ে দিতে পারে।

•দাঁত দিয়ে নখ কাটার কারণে আপনার চোয়ালের পাশাপাশি আপনার দাঁতও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এমনকি অনেক সময় দাঁত ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।

•দাঁত দিয়ে নখ কাটার কারণে দাঁতের মাড়ির ক্ষতি হতে পারে। ওরাল ইনফেকশন, ওরাল ড্যামেজ ইত্যাদি হতে পারে। এমনকি নখের আঘাতের কারণে মুখে ইনফেকশন হয়ে যেতে পারে।

•যখন আপনি আপনার নখ কামড়াবেন তখন এই জীবাণু আপনার শরীরে প্রবেশ করবে এবং আপনার অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি বাড়াবে।

•এই বদভ্যাসটি আপনাকে সামাজিকভাবেও বিব্রতকর অবস্থায় ফেলতে পারে। অন্যদের উপস্থিতিতে নখ কামড়ানো একটি বাজে অভ্যাস এবং এটি সামাজিক আচরণ লঙ্ঘন করে।

চলুন এবার দেখে নেওয়া যাক দাঁত দিয়ে নখ কাটার অভ্যাস ত্যাগ করার কিছু উপায়-

১. আপনার নখ সবসময় ছোট রাখুন:

আপনার নখ সবসময় ছোট করে কেটে রাখা এবং পরিষ্কার রাখা দাঁত দিয়ে নখ কাটা বন্ধের একটি ভালো উপায় হতে পারে। যখন আপনার হাতে কামড়ানোর মতো নখই থাকবে না তখন এই বদভ্যাস ও আপনাআপনি দূর হয়ে যাবে।

২. নিয়মিত আপনার ম্যানিকিউর চালিয়ে যান:

নিজের হাত ও নখগুলোকে সবসময় যত্নে রাখুন ম্যানিকিউর-এর মাধ্যমে। ম্যানিকিউর শুধু হাতের সৌন্দর্যই বাড়িয়ে তোলে না, এমন কী এটি আপনার নখগুলোকেও সুন্দর ও চকচকে রাখে। আর নখ সুন্দর থাকলে তো দাঁত দিয়ে নখ কাটতে কারোরইচ্ছাই করবে না।

৩. নেইল এক্সটেনশন করতে পারেন:

নেল এক্সটেনশন করার জন্য আলাদা মেটেরিয়াল ব্যবহার করা হয়। সেগুলি বেশ শক্ত এবং দামিও। তাই সহজেই দাঁত দিয়ে নখ কাটতে পারবেন না। নখে কামড়ানোর সময়েও আপনার মনে পড়বে যে, অনেক টাকা খরচ করে আপনি এক্সটেনশন করিয়েছেন।

এছাড়াও, আপনি নেল আর্টের সাহায্য নিতে পারেন। নেল আর্ট করা খুব সুন্দর নখ কি আপনার খারাপ করে ফেলতে ইচ্ছে করবে? হয়তো নয়। তবে খুব ঘন ঘন নেল আর্ট করা উচিত নয়। এতে আপনার আসল নখেরও ক্ষতি হতে পারে।

৪. তিক্ত স্বাদের নেইল পলিশ ব্যবহার করুন:

তিক্ত স্বাদের নেইল পলিশ-এর ব্যবহার খুব ভালো একটি পদ্ধতি আপনাকে নখ কামড়ানো থেকে বিরত রাখার জন্য। এতে আপনার নখগুলোও সুন্দর লাগবে দেখতে আর আপনিও নিজেকে সংযত রাখতে পারবেন।

৫. হাত এবং মুখকে ব্যস্ত রাখুন:

আপনার হাত ও মুখকে ব্যস্ত রাখুন প্রায় সবসময়। আপনি নখ কামড়ানোর অভ্যাস থেকে নিজেকে মুক্ত করতে মুখে চুইংগাম নিয়ে সারাক্ষণ চিবোতে পারেন এবং হাতে কাজ না থাকলে একটি বল বা যে কোন কিছু নিয়ে হাতকে ব্যস্ত রাখতে পারেন। এভাবে এক সপ্তাহ নিজেকে ব্যস্ত রেখে অভ্যাসটি দূর করতে পারেন।

৬. হাতে গ্লাভস বা নখে স্টিকার ব্যবহার করুন:

এটা শুনতে একটু অদ্ভূত শোনালেও পদ্ধতিটা কিন্তু বেশ কার্যকরী। কারণ, নখে স্টিকার ব্যবহার করলে বা হাতে গ্লাভস পরিধান করলে আপনি নিজেকে নখ কামড়ানো থেকে বিরত রাখতে পারবেন।

উপরিউক্ত টিপসগুলি ব্যবহার করে আপনি দাঁত দিয়ে নখ কাটার মতো বদভ্যাস থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button