বাবা ও মেয়ের মধ্যে যে ভালোবাসা, তা যেন চিরকালের বন্ধন
বাবা ও মেয়ের আবেগঘন মুহূর্ত যা বিয়ের সময় ক্যামেরাবন্দী করা হয়
এটি সবসময় বলা হয় যে, একটি মেয়ে তার মায়ের চেয়েও বেশি কাছাকাছি তার বাবার। বাবারা এতটাই তার মেয়ের সাথে যুক্ত যে, তারা বাবার থেকে দূরে যাওয়ার কথা কোনোদিন ভাবতে পারে না। কিন্তু একদিন তাদের বাস্তবের মুখোমুখি হতে হবে। অন্যদিকে একজন মেয়ের জন্য তার মা হলেন যিনি তাকে শৃঙ্খলা শেখান, যেখানে তার বাবা তার অপরাধের অংশীদারের মতো। একটি মেয়ের কাছে তার বাবা তার জীবনের প্রথম পুরুষ এবং সে তার বাবার কাছে সর্বদা ছোট রাজকুমারী।
বাবা ও মেয়ের মধ্যে এই চিরমধুর সম্পর্ক আরও বেশি প্রকাশ পায় তার বিয়ের সময়:
১. একটি সংবেদনশীল যাত্রা:
শিশু থেকে কিশোরী এবং কিশোরী থেকে প্রাপ্তবয়স্কে পরিণত হতে প্রতিটি নারীর জীবনে তার বাবার ভূমিকা অপরিসীম। তার বাবাই পুরুষদের সম্পর্কে তার মতামত গঠন করেন। বাবারা তাদের ভালবাসার অনুভূতি সম্পর্কে শেখায়। বেশিরভাগ বাবা রাতারাতি তাদের রাজকুমারীকে হারানোর চিন্তায় দুঃখ বোধ করেন। প্রত্যেক বাবাই নার্ভাস হয়ে যায় যখন তারা জানতে পারেন যে, তারা আসলে তাদের মেয়েকে অন্য পুরুষের কাছে হারাতে চলেছেন।
২. উপযুক্ত মিল খোঁজা:
আমাদের দেশের বাবারা তাদের মেয়ের জন্য উপযুক্ত পাত্র বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে খুবই সতর্ক থাকেন। যে ব্যক্তিকে সে খুব কমই চেনেন বা সম্ভবত সবেমাত্র দেখা করেছেন তাকে তার মেয়েকে তুলে দেওয়ার চিন্তা তাকে অস্থির করে তোলে। দিনের শেষে তারা শুধু এমন একজন মানুষ চান যে তার মেয়েকে সবসময় খুশি রাখবে।
৩. পাত্রের সাথে দেখা করা:
এটি একটি প্রেমের বিয়ে হোক বা পরিবারের দেখাশোনা করেই হোক, বিশ্বের সমস্ত বাবারা তাদের সম্ভাব্য জামাইয়ের জন্য তাদের প্রশ্নাবলী নিয়ে প্রস্তুত থাকেন। ছেলেটির আর্থিক অবস্থা থেকে শুরু করে তার অতীতের ঘটনা, সবকিছুই স্ক্যানারের আওতায় রাখা হয়। তিনি ছেলেটির মাথা থেকে পা পর্যন্ত স্ক্যান করেন।
৪. বিয়ের সময় মিশ্র আবেগ:
মেয়ের বিয়ে বাবাদের মধ্যে মিশ্র আবেগ সৃষ্টি করে। বিয়ের আয়োজনের উত্তেজনায় যখন তিনি লিপ্ত হন, সেই সময়টিই তার জীবনের সবচেয়ে সুখী সময়। কিন্তু দিন যত ঘনিয়ে আসে, আবেগের তরঙ্গ ততো ঘণিভূত হয়। বছরের পর বছর যে স্মৃতি তার মনে পড়েনি, এখন সেগুলি তার চোখের সামনে ভেসে ওঠে। বেশিরভাগ বাবারাই রাতে ঘুমাতে পারেন না। তারা তাদের রাত কাটায় ঘরে ঘোরাঘুরি করে বা তার মেয়ের পুরনো ছবির অ্যালবাম দেখে। মেয়েদের বিয়ের চিন্তাই তাদের একই সাথে দুঃখী এবং সুখী করে তোলে।
৫. মেয়েকে পাত্রের হাতে তুলে দেওয়া:
এটি হল বিয়ের সবচেয়ে কঠিন অংশ। ছোটবেলা থেকেই তিনি তার মেয়ের হাত শক্ত করে ধরে থাকেন এবং তাকে সমস্ত বিপদ থেকে রক্ষা করেন। কিন্তু এখন তাকে নিজেই তার মেয়ের হাত অন্য কারো হাতে তুলে দিতে হয়। এই মুহূর্তটি যেখানে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে পাত্রের হাতে তার মেয়েকে তুলে দেন, কন্যাদানের এই রীতিটি বহুযুগ ধরে প্রচলিত। এটি তার জন্য মেনে নেওয়ার সময় যে, এখন অন্য আরেকজন মানুষ আছেন যার কাছে তার মেয়ে অফুরন্ত ভালোবাসা পাবে এবং সুরক্ষিত থাকবে।
উপসংহার:
বাবা-মেয়ের সম্পর্কের ইতি কোনোদিন সম্ভব নয় কারণ পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর সম্পর্ক এটি। বাবাই একমাত্র ব্যক্তি যাকে অন্ধভাবে বিশ্বাস করা যায়। মনে রাখবেন যে, তিনিই একমাত্র ব্যক্তি যিনি কখনই হৃদয় ভাঙবেন না এবং কোনোরকম স্বার্থ ছাড়াই আজীবন ভালোবেসে যাবেন।