Bangla News

রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার থেকে ম্যানগ্রোভ অরণ্য এইসব কিছুর স্বাদ পেতে এই শীতে আপনাকে আসতেই তবে সুন্দরবন

সুন্দরবন মানেই রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার

নতুন বছর পরার সাথে সাথেই কলকাতার পারদ নামতে শুরু করে দিয়েছে, এই শীতের আমেজ গায়ে মাখতে আপনি কী কলকাতার কাছাকাছি কোথাও ছুটি কাটানোর পরিকল্পনা করছেন পরিবারকে নিয়ে? যদি আপনার উত্তর হ্যাঁ হয়, তবে আমাদের বিশ্বাস করুন আর ঘুরে আসুন কলকাতা দিয়ে মাত্র ১০৯ কিমি দূরত্বে অবস্থিত সুন্দরবন দিয়ে। রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার থেকে শুরু করে ম্যানগ্রোভ অরণ্য এইসব কিছু মিলিয়ে একটুও হতাশ হবেন না, উল্টে দারুন একটি অ্যাডভেঞ্চার প্রাপ্তি করে বাড়ি ফিরবেন।

সুন্দরবনের আয়তন ও অবস্থান:

মোট ১০,০০০ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে গড়ে ওঠা সুন্দরবনের ৬,০১৭ বর্গ কিলোমিটার রয়েছে আমাদের প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশে এবং বাকি অংশ রয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। ব্রহ্মপুত্র, গঙ্গা ও মেঘনা এই তিনটি নদীর অববাহিকার ব-দ্বীপ এলাকায় অবস্থিত এই অপরূপ বনভূমি বাংলাদেশের খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলায় এবং পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগণা ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জুড়ে বিস্তৃত।

সুন্দরবনকে জালের মত জড়িয়ে রয়েছে সামুদ্রিক স্রোতধারা, কাদা চর এবং ম্যানগ্রোভ বনভূমির লবণাক্ততাসহ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দ্বীপমালা। মোট বনভূমির ৩১.১ শতাংশ অর্থাৎ ১,৮৭৪ বর্গকিলোমিটার জুড়ে রয়েছে নদী-নালা, খাঁড়ি, বিল মিলিয়ে জলাকীর্ণ অঞ্চল।

সুন্দরবন ভ্রমণের উপযুক্ত সময়:

সুন্দরবন ভ্রমণের সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হল নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে। নদী ও সমুদ্রের শান্ত সৌন্দর্য, বিশ্ব বিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার, দুর্লভ চিত্রল হরিণ, প্রায় ৩৫০ প্রজাতির উদ্ভিদ, ১২০ প্রজাতির মাছ আর ২৭০ প্রজাতির পাখিসহ এর গভীর অরণ্যের রূপ দেখতে আপনি এই শীতে ঘুরে আসতে পারেন এই অপূর্ব সুন্দর স্থানটি দিয়ে। বিশ্বের একক বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য উপভোগ করতে বছরজুড়েই পর্যটকদের আসা-যাওয়া থাকে। ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে সুন্দরবনকে স্বীকৃতি দেয় ১৯৯৭ সালে।

উদ্ভিদ ও প্রাণী:

সুন্দরবনের নাম শুনলেই সবার প্রথমে যেই জিনিসটা মাথায় আসে সেটা হচ্ছে সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার। সুন্দরবনে গিয়ে সবাই বাঘের দেখা পেতে চায়। কিন্তু বাঘ দেখার সৌভাগ্য হয় খুব কম মানুষেরই। দুদিন আগেই বাঘ মামা দেখেছিলেন একদল পর্যটক, যখন সে রোদ পোয়াতে এসেছিল ডাঙায়।

বাঘ ছাড়াও সুন্দরবনে রয়েছে বানর, হরিণ, বনমোরগ, কুমির, ডলফিন, অজগর আর বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী।

সুন্দরবনের প্রধান বনজ বৈচিত্র্যের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে সুন্দরী, গেওয়া, গরান এবং কেওড়া গাছ। এছাড়াও প্রায় তিন শতাধিক প্রজাতির গাছ রয়েছে সুন্দরবনে। রয়েছে আড়াই শতাধিক প্রজাতির পাখি, দুই শতাধিক প্রজাতির মাছ, ১৪ প্রজাতির সরীসৃপ, ৪২ প্রজাতির বন্যপ্রাণীসহ ৩২ প্রজাতির চিংড়ি।

কী কী দেখতে যাবেন:

সুন্দরবনে রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিত্রল হরিণ, বন্যশূকর, বানর, কুমির, ডলফিন, কচ্ছপ, মেছোবিড়াল ও বন বিড়ালসহ রয়েছে ৩৭৫ এর অধিক প্রজাতির বন্যপ্রাণী। সেইসাথে সুন্দরবনজুড়ে জালের মতো জড়িয়ে থাকা ৪৫০টি ছোট বড় নদী-খাল ভ্রমণের অপার সুযোগ পাবেন ভ্রমণপিপাসুরা।

থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা:

সুন্দরবনের ভেতরে পর্যটকদের থাকা ও খাওয়ার তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। পর্যটকদের সুন্দরবনে রাত্রিযাপন করতে চাইলে তাদের বহনকারী নৌযানেই ব্যবস্থা করতে হয়। তবে আগে থেকে যোগাযোগ করে গেলে সুন্দরবনের ভেতরে থাকা বিশ্রামাগারেও অবকাশ যাপনের সুযোগ করে নিতে পারেন।

সুতরাং আর দেরি না করে ঘুরে আসুন সুন্দরবন দিয়ে। এইরকম ভ্রমণের আরও আপডেট পেতে আমাদের (ওয়ান ওয়ার্ল্ড নিউজ বাংলা) সঙ্গে যুক্ত থাকুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button